গুণারত্নের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত আইজিপির

জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা চালিয়েছিল বলে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর পলিটিক্যাল ভায়োলেন্স অ্যান্ড টেররিজম রিসার্চের (আইসিপিভিটিআর) পরিচালক রোহান গুণারত্নে যে কথা বলেছেন, তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।

সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে ঢাকায় ১৪টি দেশের পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারাদের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে আইজিপি এ মন্তব্য করেন।

রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ইন্টারপোল এবং বাংলাদেশ পুলিশের যৌথ উদ্যোগে দেশে প্রথমবারের মতো তিন দিনব্যাপী ‘চিফ অব পুলিশ কনফারেন্সে অব সাউথ এশিয়া অ্যান্ড নেইবারিং কান্ট্রিস অন রিজিওনাল কো-অপারেশন ইন কার্ভিং ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম’ শীর্ষক এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য- ‘Regional Cooperation in Curbing Violent Extremism and Transnational Crime’।

রবিবার (১২ মার্চ) সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে আইসিপিভিটিআর’র পরিচালক রোহান গুণারত্নে বলেছেন, ‘হলি আর্টিজানে হামলা চালিয়েছিল আইএস, দেশীয় (বাংলাদেশ) জঙ্গিরা নয়। দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব হামলাকারীদের প্রসঙ্গে অসত্য তথ্য দিয়েছেন।’

তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেছেন, ‘রোহান গুণারত্নে কোনো দেশের পুলিশ বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। হলি আর্টিজানে আইএস হামলা চালিয়েছিল বলে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা তার ব্যক্তিগত মতামত। এ নিয়ে তার কোনো গবেষণাও নেই। হলি আর্টিজানে হামলার সঙ্গে আইএস সম্পৃক্ত নয়।’

আইজিপি আরও বলেন, ‘হলি আর্টিজানে হামলার অভিযোগে এ পর্যন্ত যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, আইএসের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। গ্রেফতারকৃতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেও তাদের আইএসের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে হলি আর্টিজানে হামলাকারীরা আইএস জঙ্গিদের মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে থাকতে পারে।’

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য ইন্টারপোলের একটি সাব অফিস বাংলাদেশে খোলার জন্য আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান আইজিপি।

মিট দ্য প্রেসে যোগ দেওয়ার আগে আইজিপি ব্রুনাই ও ভিয়েতনামের পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারাদের বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রসঙ্গত, সম্মেলনে আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, ব্রুনাই, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলংকা, ভিয়েতনাম এ ১৪টি দেশের পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করছেন। এছাড়া ইন্টারপোল, ফেসবুক, ইন্টারপোল গ্লোবাল কমপ্লেক্স ফর ইনোভেশন (আইজিসিআই), যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই), আসিয়ানাপোল (ASEANAPOL), ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ট্রেনিং অ্যাসিসট্যান্স প্রোগাম (আইসিআইটিএপি)সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।