ঘাস কিনতেও হাজার টাকা লাগে আজিমপুর কবরস্থানে!

আজিমপুর কবরস্থানে কবর খোঁড়া, লাশ দাফন, কবর পরিচর্যার কাজ বিনা পয়সায় করার কথা থাকলেও নেয়া হচ্ছে ৪-৮ হাজার টাকা। কবরে শুধু দূর্বাঘাসের চটা দেয়ার জন্যই মৃতের স্বজনদের গুনতে হয় ৮শ’ থেকে হাজার টাকা। এছাড়া কবর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ও দেখাশোনার জন্য প্রতি মাসে দিতে হয় ৫শ’ টাকা।

পুরো কাজটুকু সিটি কর্পোরেশনের করার কথা থাকলেও সরেজমিনে আজিমপুর কবরস্থানে দেখা যায়নি সিটি কর্পোরেশনের কোনো কর্মীকে। কবর পরিচর্যার কাজ করছেন বহিরাগতরা।

স্থানীয় এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কবরস্থানে সিটি কর্পোরেশন লোক থাকা সত্ত্বেও বাইরের কিছু লোক দিয়ে একটি সিন্ডিকেট গড় তোলা হয়েছে। কর্পোরেশন নিযুক্ত লোকদের ছত্রছায়ায় কবরস্থানকে ঘিরে চলছে রমরমা বাণিজ্য করেছে। যদিও বিষয়টিকে স্বেচ্ছা ও মানবিক কাজ হিসেবে দাবি করছেন তারা।

কবর পরিচর্যাকর্মীরা জানায়, কোনো প্রাণী যেন কবরের মাটি খুড়ে গর্ত না করে এ জন্য দূর্বাঘাস দেয়া হয়। একমাস পড়ে এই ঘাস আরো বড় হলে অন্য কবরের জন্য বিক্রি করা হয়। প্রতিটি কবরের জন্য প্রায় ১ হাজার টাকার দূর্বাঘাস লাগে।

অভিযোগ উঠেছে, কবরস্থান থেকে নিয়েই নতুন কবরে দূর্বাঘাস দেয়া হয়। অথচ পরিচর্যাকর্মীরা ঢাকার বাইরে থেকে আনা হয়েছে বলে স্বজনদের কাছ থেকে হাজার টাকা নিচ্ছেন। এরপর ঘাস বড় হলে কবর পরিচর্যার নামেও মৃত্যু ব্যক্তির স্বজনদের থেকে মাসে মাসে টাকা আদায় করা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া কবর খোঁড়া, দাফন, কবরের বেড়ার দেয়াসহ বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে।

গত ৩ বছর ধরে আজিমপুর কবরস্থানে কাজ করেন আলী আহমেদ। তিনি সিটি কর্পোরেশনের নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি নন। জানতে চাইলে তিনি ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, কবরের মাটি যেন ধসে না পড়ে এবং কোনো প্রাণী যেন কবর খুড়ে গর্ত করতে না পারে সেজন্য ঘাস দেয়া হয়। ঘাসগুলো আমরা সভার, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় থেকে কিনে আনি। এই ঘাস কিনতে টাকা লাগে এবং এখানে আনতে গাড়ি ভাড়া লাগে।

কবরস্থানে চার বছর ধরে কাজ করা মো. জুয়েল নামে আরেকজন পরিচর্যাকারী বলেন, ঘাস দেয়ার জন্য কবরের সাইজ বুঝে টাকা নেয়া হয়। তবে আমরা বেশি নেই না। ৮শ’ থেকে এক হাজার টাকা নেয়া হয়।

এদিকে লালবাগের বাসিন্দা রফিক ইকবাল অভিযোগ করে বলেন, গত মাসে আমার মেয়ের জামাই মরা যান। আজিমপুর কবরস্থানে আমাদের জমি রির্জাভ রয়েছে। নিয়মানুযায়ী কবর পাকা করতে ১৫ হাজার টাকা জমা দেই। তবে আজিমপুর কবরস্থানের ইনচার্জ মো. হাফিজুল ইসলামকে বাড়তি টাকা না দেয়ায় কবর পাকা করার অনুমতি দেননি। পরে ৯ হাজার টাকা ঘুষ দিলে অনুমতি পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে আজিমপুর কবরস্থানের ইনচাজের্র সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা নিষেধ। সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমতি আনতে হবে। তথ্য-ডেইলি বাংলাদেশ

আজকের বাজার/আখনূর রহমান