চট্টগ্রামে আক্রান্ত একশ’র নিচে

চট্টগ্রামে টানা ২৩ দিন ধরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ একশ’র নিচে রয়েছে। গতকালসহ একটানা সাতদিন কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৬ জনের নমুনায় ভাইরাস শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ৫ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর আটটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৭২০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ৮৬ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৭১ জন ও সাত উপজেলার ১৫ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে সর্বোচ্চ ৬ জন, সীতাকু-ে ৩ জন, রাউজানে ২ জন এবং রাঙ্গুনিয়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী ও চন্দনাইশে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৩৪ হাজার ৭০৫ জন। এর মধ্যে শহরের ২৭ হাজার ২১৬ জন ও গ্রামের ৭ হাজার ৪৮৯ জন।
গতকাল করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি। মৃতের সংখ্যা ৩৭১ জনই রয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ২৭০ জন ও গ্রামের ১০১ জন। সুস্থ্যতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৪৬ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩১ হাজার ৯৩৫ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৪০৫ জন এবং বাসা থেকে ২৭ হাজার ৫৩০ জন। আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৩০ জন । ছাড়পত্র নেন ২০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৯৪৭ জন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে গত ২৩ দিন ধরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা একশ’র নিচে রয়েছে। এ সংখ্যা আশি থেকে ওপরে উঠেছিল গতকালসহ আরো ছয় দিন। ২৩ ফেব্রুয়ারি ৯৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। হার ছিল ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ১৮ ফেব্রুয়ারি ৮৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। সংক্রমণের হার ৪ দশমিক ৫২ শতাংশ। ১৬ ফেব্রুয়ারি ৮২ জনের শরীরে ভাইরাস শনাক্ত হয়। সংক্রমণের হার ৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। ৭ ফেব্রুয়ারি ৮০ জন করোনা শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ছিল ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। ২ ফেব্রুয়ারি ৮০ জনের দেহে জীবাণুর উপস্থিতি মিলে। সংক্রমণ হার ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। দুই দিন শনাক্ত বাহকের সংখ্যা পঞ্চাশের নিচে নেমেছিল। এর একদিন করোনাকালের সর্বনি¤েœর রেকর্ড হয়। এদিন ১ হাজার ২২৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২১ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মেলে। সংক্রমণ হার ১ দশমিক ৭১ শতাংশ। পহেলা ফেব্রুয়ারি এ মাসে একবারই শতক পেরিয়ে যায়। এছাড়া, চট্টগ্রামে গত সাত দিন করোনায় কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। সর্বশেষ ১৭ ফেব্রুয়ারি করোনায় এক রোগী মারা যান।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে সবচেয়ে বেশি ৭৯২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৫০৩ জনের নমুনার মধ্যে ৩৫ জন করোনায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে ৮ জন জীবাণুবাহক চিহ্নিত হন। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৫৬টি নমুনায় ১০টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ৮টি নমুনার ৫টির পজিটিভ আসে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ২০৯টি নমুনা পরীক্ষায় ১১টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৪৯টি নমুনায় ৫টি এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১০টির ৪টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। চট্টগ্রামের ৫৩ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবগুলোরই ফলাফল নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে বিআইটিআইডি’তে ১ দশমিক ০১ শতাংশ, চমেকে ৬ দশমিক ৯৬, চবি’তে ২০, সিভাসু’তে ১৭ দশমিক ৮৬, আরটিআরএলে ৬২ দশমিক ৫০, শেভরনে ৫ দশমিক ২৬, ইম্পেরিয়ালে ১০ দশমিক ২০ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৪০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।