চট্টগ্রামে আরো ৩ করোনা রোগীর মৃত্যু

চট্টগ্রামে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৩ রোগীর মৃত্যু ও নতুন ৩৮০ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণ হার ১৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর সাতটি ল্যাবে গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৯২৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ৩৮০ জন পজিটিভ পাওয়া যায়। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৩১৪ জন ও ১২ উপজেলার ৬৬ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৮ জন হাটহাজারীতে। এছাড়া, রাউজানে ১৪ জন, ফটিকছড়িতে ৭ জন, রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালীতে ৬ জন করে, আনোয়ারায় ৫ জন, বাঁশখালীতে ৩ জন, মিরসরাই ও সীতাকু-ে ২ জন করে এবং পটিয়া, সাতকানিয়া ও চন্দনাইশে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৪৩ হাজার ৫৬৮ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৩৪ হাজার ৮৯৮ জন ও গ্রামের ৮ হাজার ৬৭০ জন।
করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে গতকাল হাটহাজারী, পটিয়া ও নগরীর একজন করে ৩ রোগীর মৃত্যু হয়। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন ৪০৯ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ৩০০ জন ও গ্রামের ১০৯ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৭২ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩৪ হাজার ৬১৮ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ৭০৮ জন এবং ঘরে থেকে চিকিৎসায় আরোগ্য লাভ করেন ২৯ হাজার ৯১০ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৩০ জন ও ছাড়পত্র নেন ২০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ২৯৪ জন।
উল্লেখ্য, গতকাল করোনায় আক্রান্ত ৩ জন মারা যান। এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ৮ দিনে ২০ জন মৃত্যুবরণ করেন। এর আগের দিন বুধবার করোনাভাইরাসে ৬ রোগীর মৃত্যু হয়। এ সময়ে ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় নতুন ৪৭৩ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ছিল ১৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। ২ এপ্রিল ছাড়া প্রতিদিনই এক বা একাধিক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। করোনাকালের সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও এ মাসের প্রথম দিন, ৫১৮ জন। গেল ৮ দিনের সর্বনি¤œ সংক্রমণ ৩ এপ্রিল, ২৩২ জন। সংক্রমণের হার ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ। তবে এদিন করোনায় চার জনের মৃত্যু হয়।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ৭৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় সীতাকু-ের ১ জনসহ ৮৭ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৩৪৭ জনের নমুনার মধ্যে ৬ জন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হন। এরা সবাই শহরের বাসিন্দা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২২৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ৩৯ জন ও গ্রামের ৪২ জন জীবাণুবাহক বলে চিহ্নিত হন। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২৬৩টি নমুনায় গ্রামের ১৭টিসহ ১শ’টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। নগরীর বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ৫টি নমুনার ২টির পজিটিভ রেজাল্ট আসে। দু’টিরই বাহক শহরের বাসিন্দা।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২১৬টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৫টিসহ ৭৮টি এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৬০টি নমুনায় গ্রামের ১টিসহ ২৬টিতে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এদিন চট্টগ্রামের কোনো নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়নি। শেভরনেও কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ, চমেকে ১ দশমিক ৭৩, চবিতে ৩৬ দশমিক ৩২ শতাংশ, সিভাসু’তে ৩৮ দশমিক ০২, আরটিআরএলে ৪০ শতাংশ, ইম্পেরিয়ালে ৩৪ দশমিক ৫১, এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৪৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।