চট্টগ্রামে করোনায় ৫ রোগীর মৃত্যু

চট্টগ্রামে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৫ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে ১৯৮ জনের নমুনায় ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ১৫ দশমিক ১৫ শতাংশ।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর নয়টি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৩০৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ১৯৮ জন পজিটিভ পাওয়া যায়। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১৩৭ ও নয় উপজেলার ৬১ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে হাটহাজারীতে সর্বোচ্চ ২০, রাউজানে ১৩, সীতাকু-ে ৭, আনোয়ারায় ৬, রাঙ্গুনিয়ায় ৫ জন উল্লেখযোগ্য। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৫০ হাজার ৪৭৮ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪০ হাজার ৪৩৬ ও গ্রামের ১০ হাজার ৪২ জন।
গতকাল করোনায় শহরের চার ও গ্রামের এক রোগির মৃত্যু হয়। মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন ৫৪০ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ৪শ’ ও গ্রামের ১৪০ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৮৪ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৩৬ হাজার ৭০৮ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৫ হাজার ১৬৪ জন এবং বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ৩১ হাজার ৫৪৪ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২০ ও ছাড়পত্র নেন ১০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৫০২ জন।
উল্লেখ্য, জেলায় গতকাল ৫ জনসহ এ মাসের তিন দিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৬ ব্যক্তি মারা যান। এর মধ্যে ২ মে সর্বোচ্চ ৭ জন মারা যান। তবে প্রথম দু’দিন নমুনা পরীক্ষা ও আক্রান্তের সংখ্যা কম ছিল, যথাক্রমে ৮৪ ও ১০৬ জন। প্রথমদিন সংক্রমণ হার কিছুটা কমলেও পরের দু’দিন ১৫ শতাংশের বেশি ধরা পড়ে। করোনার প্রকোপ প্রথম দিকে শুধু শহরমুখী থাকলেও এখন ক্রমান্বয়ে গ্রামে রোগি বাড়ছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বিষয়টিকে উদ্বেগজনক মনে করেন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে ৩শ’ ৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৪ জনসহ ৩১ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২শ’ ৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ২৩ ও গ্রামের ৩০ পজিটিভ চিহ্নিত হন। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২শ’ ৮টি নমুনার মধ্যে শহরের ২০ ও গ্রামের ১২টিতে ভাইরাসের উপস্থিতি মিলে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৪২ জনের নমুনায় গ্রামের ১ জনসহ ১৬ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হন। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ ৫৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এখানে গ্রামের ৫টিসহ ২৬টিতে করোনার জীবাণুর অস্তিত্ব ধরা পড়ে।
বেসরকারি চার ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ২৬৭টি নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৪টিসহ ১৫টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১২৪টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৩টিসহ ১৩টি, মা ও শিশু হাসপাতালে ৩৮টি নমুনায় গ্রামের ২টিসহ ৮টি এবং মেডিকেল সেন্টারে ৯টি নমুনার মধ্যে শহরের ৪টিতে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি চিহ্নিত হয়। এদিন চট্টগ্রামের ১৬ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবগুলোরই ফলাফল নেগেটিভ আসে।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ১০ দশমিক ২০ শতাংশ, চবিতে ২১ দশমিক ৯৯ শতাংশ, সিভাসু’তে ১৫ দশমিক ৩৮, চমেকে ৩৮ দশমিক ০৯, আরটিআরএলে ৪৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ, শেভরনে ৫ দশমিক ৬২, ইম্পেরিয়ালে ১০ দশমিক ৪৮, মা ও শিশু হাসপাতালে ২১ দশমিক ০৫ এবং মেডিকেল সেন্টারে ৪৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।