চট্টগ্রামে জুনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ

চট্টগ্রামে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ২২৬ জনের নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণ হার ২২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর দশটি ল্যাবে গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের ৯৯১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে চলতি জুন মাসের সর্বোচ্চ ২২৬ জন পজিটিভ শনাক্ত হন। এর মধ্যে শহরের ১৩১ জন ও ১১ উপজেলার ৯৫ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে রাঙ্গুনিয়ায় সর্বোচ্চ ২০, মিরসরাইয়ে ১৪, আনোয়ারায় ১৩, রাউজানে ১২, ফটিকছড়িতে ১১, হাটহাজারীতে ১০, সীতাকু-ে ৯, বোয়ালখালী ও সাতকানিয়ায় ২ জন করে এবং লোহাগাড়া ও বাঁশখালীতে ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৫৬ হাজার ৩৯৭ জন। এর মধ্যে শহরের ৪৪ হাজার ৩৫৯ জন ও গ্রামের ১২ হাজার ৩৮ জন।
গতকাল করোনায় শহরে একজন মারা যায়। ফলে মৃতের সংখ্যা এখন ৬৬২ জন। এতে শহরের ৪৬৩ জন ও গ্রামের ১৯৯ জন। সুস্থ্যতার ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৫৫ জন। মোট আরোগ্যলাভকারীর সংখ্যা ৪৮ হাজার ২০৫ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬ হাজার ২৯৫ জন এবং বাসায় থেকে চিকিৎসায় সুস্থ্য হন ৪১ হাজার ৯১০ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ৩৮ জন ও ছাড়পত্র নেন ৩৬ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ১৪৩ জন।
উল্লেখ্য, গতকাল চলতি জুন মাসের সর্বোচ্চ সংখ্যক ২২৬ জনের দেহে ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর আগে, ১৩ জুন ২২৫ জনের নমুনায় জীবাণুর উপস্থিতি শনাক্ত হয়। তবে সংক্রমণ হার ছিল সবচেয়ে বেশি, ২৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এদিন করোনায় ৩ রোগীর মৃত্যু হয়। একদিনে সবচেয়ে কম আক্রান্ত শনাক্ত হয় ৬ জুন ৬০ জন। মাসের সর্বনি¤œ ৯ দশমিক ০৪ শতাংশ সংক্রমণ হার রেকর্ড হয় ১২ জুন। এদিকে, গতকাল একজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এ মাসের প্রথম ২১ দিনে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৪০ জনে পৌঁছেছে। মাসের সর্বোচ্চ ৪ জন করে মারা যান ১৭ ও ২০ জুন। ৩ জন করে মারা যান পাঁচদিন। মৃত্যুশূন্য ছিল তিনদিন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে গতকাল সবচেয়ে বেশি ২৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এখানে শহরের ২৩ ও গ্রামের ১৯ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ১৬ ও গ্রামের ৬১ জনের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৪৬টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৪টিসহ ১৩টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব চিহ্নিত হয়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৩৪ জনের নমুনায় শহরের ১০ জন করোনায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হন। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ২৫টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ২টিসহ ১২ টির পজিটিভ রেজাল্ট আসে।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাব শেভরনে ১৫৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হলে গ্রামের ৪টিসহ ২২টি, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ৬৮টি নমুনার মধ্যে গ্রামের একটিসহ ১৮টি, মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৩৮টি নমুনায় গ্রামের ৩টিসহ ১৬টিতে, মেডিকেল সেন্টারে ১১টি নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৬টি এবং এপিক হেলথ কেয়ারে ৩৮টি নমুনার মধ্যে গ্রামের একটিসহ ১০টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। এদিন পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা পরীক্ষা হয়নি এবং চট্টগ্রামের কোনো নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবেও পাঠানো হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, বিআইটিআইডি’তে ১৪ দশমিক ১৯ শতাংশ, চবি’তে ৪৩ দশমিক ২৬, সিভাসু’তে ৮ দশমিক ৯০, চমেকে ২৯ দশমিক ৪১, আরটিআরএলে ৪৮ শতাংশ, শেভরনে ১৪ দশমিক ১০, ইম্পেরিয়ালে ২৬ দশমিক ৪৭, মা ও শিশু হাসপাতালে ৪২ দশমিক ১০, মেডিকেল সেন্টারে ৫৪ দশমিক ৫৪ এবং এপিক হেলথ কেয়ারে ২৬ দশমিক ৩১ শতাংশ।