চট্টগ্রামে নতুন করে ২১৩ জন করোনায় আক্রান্ত

চট্টগ্রামে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ২১৩ জনের নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণ হার ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ। এ সময়ে করোনাক্রান্ত এক রোগীর মৃত্যু হয়।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, নগরীর আটটি ও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে সোমবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ৬৬১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন ২১৩ জন পজিটিভ পাওয়া যায়। এর মধ্যে শহরের বাসিন্দা ১৮০ জন ও উপজেলার ৩৩ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৭ জন হাটহাজারীতে। এছাড়া, ফটিকছড়ি, রাউজান, সীতাকুন্ড ও পটিয়ায় ৩ জন করে এবং মিরসরাই, রাঙ্গুনিয়া, আনোয়ারা ও সাতকানিয়ায় ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ২৬ হাজার ৮৫৬ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২০ হাজার ৮২৩ জন ও গ্রামের ৬ হাজার ৪১৩ জন।

সোমবার করোনাক্রান্ত এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন ৩২৫ জন। এতে শহরের বাসিন্দা ২৩০ জন ও গ্রামের ৯৫ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ২৫৬ জন। ফলে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ২৫ হাজার ২২ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩ হাজার ৬০২ জন এবং ঘরে থেকে ২১ হাজার ৪২০ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২০ জন ও ছাড়পত্র নেন ৭০ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ২১৮ জন।

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৭১৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২২ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৪৬০ জনের নমুনার মধ্যে ৪৮ জন করোনাক্রান্ত শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ১৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে ৫৬ জন জীবাণুবাহক বলে চিহ্নিত হন। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ৯৯ টি নমুনার ৯ টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ২৮টি নমুনার ১৭ টির পজিটিভ রেজাল্ট আসে।

বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ১০৩ টি নমুনার মধ্যে ২৯ টি, শেভরনে ৭৫ নমুনায় ২৫ টি এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ২৩ টির ৭ টিতে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এদিন চট্টগ্রামের ৩ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সবগুলোরই ফলাফল নেগেটিভ আসে।

ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ, চমেকে ৩৪ দশমিক ৫৫, চবিতে ৩৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ, সিভাসু’তে ৯ দশমিক ০৯, আরটিআরএলে ৬০ দশমিক ৭১ শতাংশ, ইম্পেরিয়ালে ২৮ দশমিক ১৫, শেভরনে ৩৩ দশমিক ৩৩ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৩০ দশমিক ৪৪ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়।

উল্লেখ্য, জেলায় গত তিনদিনে করোনায় ৫ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত শনিবার ও রোববার ২ জন করে এবং সোমবার ১ জন। এছাড়া, এ মাসের আটদিনে সোমবার পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা দুইশ’ পার হলো। ১ ডিসেম্বর ২৬০ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। সংক্রমণের হার ছিল ১৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। করোনাক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়। ৪ ডিসেম্বর ২৪০ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। সংক্রমণ হার ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। এদিন করোনাক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। ৬ ডিসেম্বর ২৩৩ জনের নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ১৪ দশমিক ৮২ শতাংশ। ২ ডিসেম্বর ২৩১ জনের নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ। এ সময়ে করোনাক্রান্ত কারো মৃত্যু হয়নি। এ মাসের সর্বনিম্ন ১৪৭ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৫ ডিসেম্বর। হার ছিল ১১ দশমিক ৭১ শতাংশ, তবে এদিন ২ রোগীর মৃত্যু হয়। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান