চামড়া পাচার ঠেকাতে দ্রুত ঋণ চান ব্যবসায়ীরা

সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচার ঠেকাতে শিগগিরই ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়ার জন্য রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) সভাপতি শাহীন আহমেদ।

তিনি বলেন, সাধারণত কোরবানির জন্য সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো ৪০০-৫০০ কোটি টাকা আমাদের অগ্রিম দিয়ে থাকে। তবে এ বছর খুব একটা অগ্রিম পায়নি। ফলে অনেক ট্যানারি মালিক চামড়া কিনতে পারবে না। সুতরাং আমাদের দ্রুত ঋণ দেয়ার জন্য রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ করবো। পাশাপাশি চামড়া পাচার ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করছি।

ঈদের পর রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অনুরোধ জানান। এসময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
শাহীন আহমেদ বলেন, প্রতিবছর ২০ শতাংশের মতো চামড়া পাচার হলেও এবার একটু বেশি আশঙ্কা করছি। কারণ আমরা চামড়ার মূল্য হিসেবে এ বছর আড়তদারদের তেমন অগ্রিম দিতে পারিনি। এ সুযোগে পাচারকারীরা নগদে চামড়া কিনে সীমান্ত দিয়ে পাচার করতে পারে। হাজারিবাগ, পোস্তা ও সাভারে আস্তে আস্তে চামড়া জমতে শুরু করেছে। সেখানে লবণ দেয়া হচ্ছে। আমরা সেখান থেকে লবণযুক্ত চামড়া সংগ্রহ করবো। সরকারের বেঁধে দেয়া দাম অনুসরণ করে চামড়া সংগ্রহ করবো। সে হিসেবে চামড়ার মূল্য ১১০০-১২০০ টাকা হবে। তাই দাম বৃদ্ধি বা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

তিনি আরো বলেন, এ বছর এপ্রিলে সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর হওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। চলতি বছর ৪০০ মিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। হঠাৎ করে চামড়া শিল্প স্থানান্তরসহ বিভিন্ন কারণে মাত্র ২৩২ মিলিয়ন চামড়া রপ্তানি হয়েছে। কোরবানিতে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ৫০-৫৫ লাখ গরু এবং ২০-১৫ লাখ পিস ছাগল-মহিষ চামড়া। যা আমরা সংগ্রহ করতে পারবো বলে মনে করি।

ভারতে চামড়া পাচার প্রতিরোধে বেনাপোলের বিভিন্ন সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বিজিবি। সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় এরই মধ্যে বিজিবি সদস্যদের সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। বন্দর এলাকাসহ স্থল, জল ও রেলপথে কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় বিজিবির টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিজিবির পাশাপাশি ভারত সীমান্তেও সতর্কতা জারি করেছে বিএসএফ। ১ সেপ্টেম্বর থেকে সীমান্ত এলাকায় এ সতর্কাবস্থা জারি করা হয়।
বর্তমানে দেশের চাহিদার মোট চামড়ার মধ্যে কোরবানির ঈদে ৪০ শতাংশ সংগ্রহ করা হয়। বাকি ৬০ শতাংশ কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করা হয় বছরজুড়ে। এবার কোরবানির ঈদে সরকারি দাম গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকায় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া সারাদেশে খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ২০ থেকে ২২ টাকা ও বকরির চামড়া ১৫ থেকে ১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

আজকের বাজার: আরআর/ ১২ আগস্ট ২০১৭