চার মাসে রপ্তানি আয়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কমেছে দশমিক ৭৪ শতাংশ। রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ মাসিক পরিসংখ্যানে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) রফতানি খাত থেকে দেশের আয় হয়েছে ১ হাজার ১৫০ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের (২০১৬-১৭) একই সময়ে আয় ছিল ১ হাজার ৭৫ কোটি ৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এ হিসাবে আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। এ সময়ে মোট রফতানি আয়ের লক্ষ্য ছিল ১ হাজার ১৫৯ কোটি ২০ লাখ ডলার। এ হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দশমিক ৭৪ শতাংশ কম আয় হয়েছে।
প্রাথমিক ও উৎপাদনমুখী শিল্পÑ এ দুই ভাগে রফতানি আয়ের মোট পরিমাণ প্রকাশ করে ইপিবি। চার মাসের তথ্যে দেখা যায়, উৎপাদনমুখী শিল্পে রফতানি আয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আর প্রাথমিক পণ্যে রফতানি আয় বেড়েছে ১৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
প্রাথমিক খাতের পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ হিমায়িত খাদ্য ও মাছ এবং কৃষি। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে হিমায়িত খাদ্য ও মাছ রফতানিতে আয় বেড়েছে ১৫ দশমিক ৪১ শতাংশ; আয়ের পরিমাণ ২২ কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ খাত থেকে আয় হয়েছিল ১৯ কোটি ৬৬ লাখ ১০ হাজার ডলার। এদিকে চার মাসে কৃষিপণ্য রফতানি থেকে আয় বেড়েছে ২০ দশমিক ২২ শতাংশ।
উৎপাদনমুখী খাতে উল্লেখযোগ্য পণ্য হলোÑ প্লাস্টিক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, ফার্নিচার ও প্রকৌশল পণ্য। চার মাসে প্লাস্টিক খাতের আয় কমেছে ৩৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের আয় কমেছে দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। পাট ও পাটজাত পণ্যের আয় বেড়েছে ১৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। তৈরি পোশাক শিল্পে ওভেন ও নিটপণ্যের আয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এর মধ্যে ওভেন পণ্যের আয় বেড়েছে ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আর নিটপণ্যের আয় বেড়েছে ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ। অন্যদিকে প্রকৌশল পণ্যের রফতানি আয় কমেছে ১৯ দশমিক ৮২ শতাংশ।
রফতানিকারকরা বলছেন, দেশের রফতানিমুখী খাতগুলো এখনো বহুমুখী হয়ে উঠতে পারেনি। মোট রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশের উৎস তৈরি পোশাক। পণ্যটির রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলেই সামগ্রিক রফতানি খাতে এর ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে।
পোশাক খাতের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও রফতানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি আবদুস সালাম মূর্শেদী বলেন, রফতানি খাতকে টেকসই করতে পণ্য ও বাজারে বৈচিত্র্য আনার কোনো বিকল্প নেই। আর এজন্য প্রয়োজন সক্ষমতা বাড়ানো। অবকাঠামো থেকে শুরু করে কর্মী দক্ষতাÑ সব ক্ষেত্রেই সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এছাড়া রফতানি খাতকে আরো সুসংহত করতে নীতিগত ও নগদ প্রণোদনা বাড়াতে হবে। সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে পোশাক খাতের ওপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে বহুমুখী শিল্পায়ন নিশ্চিত করাই আমাদের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ।
আজকের বাজার : সালি / ১৫ নভেম্বর ২০১৭