ছিন্নমূল শিশুর স্বপ্ন নিয়ে ‘জুম বাংলাদেশ’

মুছে যাক অন্ধকার, দেশের প্রতিটি শিশু শিক্ষার আলোয় আলোকিত হোক। এমন ভাবনা থেকে ছিন্নমূল পথ শিশুদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে স্বেচ্ছায় শিক্ষা দিচ্ছেন জুম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী।ছিন্নমূল পথশিশুদের জীবনে শিক্ষার ছোঁয়া আনতে কিছু উদ্যমী তরুণের ভালোবাসা জুম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন।

রাজধানীর সেগুন বাগিচার একটি বস্তিতে তারা গড়ে তুলেছেন জুম বাংলাদেশ স্কুল নামে সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের স্কুলটি।

স্কুল থেকে ঝরে পড়া, মাদকাসক্ত এ সব ছিন্নমূল শিশুদের সম্পূর্ণ বিনা খরচে লেখাপড়ার পাশাপাশি শিক্ষার উপকরণ দিয়েও সহায়তা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

এখানে বস্তির ছিন্নমূল পরিবারের শিশুদের সপ্তাহে তিন দিন বিকেলে খোলা আকাশের নীচে পাঠদান করছেন তারা। বর্তমানে স্কুলে শিশুর সংখ্যা  ৩০ জন।

জুম বাংলাদেশ স্কুলের অন্যতম সমন্বয়ক এসটি শাহীন জানান, নিজস্ব ভাবনা থেকেই মুলত ছিন্নমূল শিশুদের নিয়ে কাজ করা। বস্তিতে বিভিন্ন বাড়িতে ঘুরে ঘুরে শিশুদের পাঠদান করাচ্ছি আমরা। পাঠদান শেষে প্রতিটি শিশুকে সামান্য খাবার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। যাতে করে লেখাপড়া করতে একটু লোভ জাগে।

শাহীনসহ একঝাঁক সৃষ্টিশীল তরুণ স্কুলটি পরিচালনা করছেন। তারা হলেন, সাদ্দাম হোসেন সৌম্য, রুপকথা, তৌফিক, রাজিব, মাসুদ রানা, মামুন, সাকের, সিমা, রিয়াদ প্রমুখ।

জুম বাংলাদেশ স্কুলের আরেক সমন্বয়ক মাহতাব শফি জানান, যারা পরিবার ও রাষ্ট্র থেকে শিক্ষার আলো বঞ্চিত, এমন কিছু পথশিশুদের নিয়ে আমাদের এ ক্ষুদ্র উদ্যোগ।

শাহীন বলেন, আপাতত জুম বাংলাদেশ স্কুল ক্ষুদ্র গণ্ডিতে আছে। সময় ও সুযোগ পেলে তা আরও বিস্তৃত হবে।

তিনি এ উদ্যোগ বিস্তৃত করতে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

কেন এ স্কুলে পড়তে আস এমন প্রশ্নে স্কুলের এক ক্ষুদে শিক্ষার্থী অনিমা জানায়, অক্ষর চিনি না। এ শহরে অক্ষর চিনলে লাভ আছে। তাই আসি। আর ক্ষুধায় স্যাররা খাবারও দেয়। এটার লোভেও আসি। অন্য অনেকের সঙ্গে হুল্লোর করে পড়তে ভালো লাগে।

তার মা খোদেজা জানান, এমনিতে পড়ত না হে। এছাড়া নিজ বাড়ি কিশোরগঞ্জ থাকতে পড়াইতেও পারি নাই। এখানের মাস্টররা ভালো মানুষ। পড়াশুনাই শুধু করাই না। হেরারে নানাকিছু কিনেও দেয়।

আজকের বাজার: আরআর/ ১৬ মে ২০১৭