জাপানের সঙ্গে এফটিএ করার পক্ষে পরিকল্পনামন্ত্রী

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বাংলাদেশ ও জাপানের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য উভয় দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যেকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী ও সৌহার্তপূর্ণ হবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মন্ত্রী বলেন,‘বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশ ও জাপানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের যে অভিজ্ঞতা, তারই আলোকে আমরা অপেক্ষা করে আছি যে, আগামী ৫০ বছরে এই সম্পর্ক আরও শক্তিশালী এবং উষ্ণ হবে। বুধবার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘পরবর্তী উন্নয়ন যাত্রার জন্য বাংলাদেশ-জাপানের অংশীদারিত্ব’ বিষয়ক সংলাপে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

সংলাপে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ ও বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমেদ।

অনুষ্ঠানে সিপিডির রিসার্চ ফেলো সৈয়দ ইউসুফ সাদাত পরবর্তী উন্নয়ন যাত্রার জন্য বাংলাদেশ-জাপান অংশীদারিত্বের উপর একটি প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন এবং এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব উইমেনের বোর্ড সদস্য ক্যাথি মাতসুই মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় সংলাপে অন্যান্যের মধ্যে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ ইউহো হায়াকাওয়া, অধ্যাপক ড. তাতসুফুমি ইয়ামাগাতা, সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, কানসাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কেনতা গোটো, জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আসিফ এ চৌধুরী প্রমুখ আলোচনা করেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত ফারুক সোবহান বক্তব্য রাখেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে জাপান বাংলাদেশের একটি শক্তিশালী সহযোগি হবে এবং একবার এফটিএ স্বাক্ষর হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি স্বনির্ভর, সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশে উন্নীত হবে বলে মান্নান দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, সেসময় জাপানের মতো দেশ আমাদের অত্যন্ত ভাল বন্ধু হতে পারে। তিনি বলেন, ‘আগামী ৫০ বছর আমাদের জন্য আরও ভাল হবে। আমরা দেখতে চাই, জাপান এবং অন্যান্য দেশ আমাদের ভবিষ্যত যাত্রায় পাশে থাকবে।’ জাপানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নকে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, জাপানের বিনিয়োগকারিদের জন্য নারায়নগঞ্জের আড়াইহাজারিতে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। যেখানে কেবলমাত্র জাপানের বিনিয়োগকারিরা বিনিয়োগ করবেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, টোকিও বাংলাদেশের সাথে এফটিএ গঠনের বিষয়ে একটি যৌথ সমীক্ষা শুরু করার কথা ভাবছে। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা প্রক্রিয়াটি শুরু করতে পারি এবং এফটিএ করতে পারি, তাহলে এটি আমাদের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশারী করবে। তবে সেটি পারস্পরিক হতে হবে।’ তিনি উল্লেখ করেন, জাপানের শ্রমবাজারের চাহিদা মেটাতে হলে বাংলাদেশকে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির জন্য প্রশিক্ষণের দিকে মনোযোগি হতে হবে। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান