‘তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি’ই সংকটের সমাধান করতে পারবে

‘তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি’ই বিদ্যমান সংকটের সমাধান করতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব। শনিবার বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি আয়োজিত জনসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিদ্যমান রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনা ব্যবস্থা জনগণের আশা-আকাঙ্খা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক রাষ্ট্র-সমাজ নির্মাণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। ৭২ এর সংবিধান দিয়ে বিদ্যমান সংকটের নিরসন আর সম্ভব হবে না।

রব বলেন, উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থার অবসান, স্বাধীন দেশের উপযোগী শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন, হত্যা-গুম আর লুণ্ঠনের পরিবর্তে আইনের শাসন, রাজনৈতিক অরাজকতা এবং জঙ্গীবাদ ইস্যু মোকাবেলায় দুই দলের বাইরে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও সমাজ শক্তি নিয়ে ‘তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি’ গড়ে তুলতে হবে। এই তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তিই জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ববিরোধী যে কোন ষড়যন্ত্র বা চক্রান্ত মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে এবং বিদ্যমান সংকটের স্থায়ী সমাধান করতে পারবে।

জেএসডি সভাপতি বলেন, দেশের স্বার্থবিরোধী কোন চুক্তি করার এখতিয়ার জনগণ কাউকে দেয়নি। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও আত্মমর্যাদার প্রশ্নে জনগণের সংগ্রামী চেতনার গতি-প্রকৃতি বিবেচনায় নিয়েই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। সরকারের একতরফা নির্বাচন জনগণের সম্মতিবিহীন সরকার গঠন দেশে সহিংসতা, জঙ্গী, দুর্নীতি, বেআইনি কর্মকাণ্ডসহ বহু ইস্যুর ইন্দন যুগিয়েছে, দেশকে ক্রসফায়ার-বিনা বিচারে হত্যা-গুম এর অবাধ সাম্রাজ্যে পরিণত করেছে। সরকার বিরোধী দলের সভা সমাবেশ, মিছিল রুদ্ধ করে দেশকে রাজনীতি শূন্য করার পায়তারা করছে।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে রব বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ তৈরি করুন-আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ গঠন করে এবং সেই উচ্চ কক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের বিধান করতে হবে।

জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন বলেন, ব্রিটিশ-পাকিস্তানী ধাঁচের রাষ্ট্র-প্রশাসন, আইন-কানুন ও বিচার ব্যবস্থা দিয়ে স্বাধীন দেশ পরিচালনার কারণেই দেশে অপরাজনীতি, অগণতান্ত্রিক ও অনির্বাচিত সরকার ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। দেশে বিস্তার ঘটছে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসের। শুধু মাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে জঙ্গীবাদ নির্মূল করা সম্ভব নয়। এ অবস্থা থেকে জাতিকে রক্ষার জন্য প্রয়োজন দেশজ ধারার রাজনীতি চালু করা এবং গণতন্ত্রকে তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত করা।

মালেক রতন দেশে ৯টি প্রদেশ, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট, জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল, স্বশাসিত স্থানীয় সরকার, উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা জোট গঠন ও দেশ পরিচালনায় সকল স্তর পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানান।

জনসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেএসডি সিনিয়র সহসভাপতি এম এ গোফরান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউল করিম ফারুক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজ মিয়া, সহসভাপতি তানিয়া রব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।