দেশীয় পদ্ধতিতে ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিন ৬০ ভাগ কার্যকর হবে

ভারতে বায়োটেকের দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি কোভ্যাক্সিন প্রক্রিয়া সফল হতে চলেছে। এ সব ঠিক থাকলে আগামী বছরের মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যেই এই ভ্যাক্সিন বাজারে চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
বায়োেেটক সংস্থার কোয়ালিটি অপারেশন-র প্রেসিডেন্ট সাই ডি প্রসাদ বাসসকে এই সফলতা দাবী করে বলেছেন, তাদের তৈরী টিকা ৬০ভাগ কার্যকরী হবে এবং এর বেশিও হতে পারে। তিনি বলেছেন, হায়দারাবাদে ইন্ডিয়ান কাঊন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্স (আই সি এম আর), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট আব ভাইরোলজি (এন আই ভি)-র সহয়োগিতায় ভারত বায়োটেক দেশীয় পদ্ধতিতে এই কো-ভ্যাক্সিন তৈরী করেছে। বায়োটেকের তৈরি এই কোভিড-১৯ প্রতিরোধী ভ্যাকসিন ভারতের প্রথম প্রয়াস বলে তিনি দাবি করেন।
ডি প্রসাদ বলেছেন, কো-ভ্যাক্সিন হলো ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাক্সিন অর্থাৎ ভাইরাস স্ট্রেন নিস্ক্রিয় করে এই টিকা বাননো হয়েছে। তিনি এর সফলতা দাবি করে বলেন, হায়দারাবাদে ভারত বায়োটেকের তৈরী ভ্যাক্সিনের প্রথম দুইপর্বের ক্লিনিক্যাল ট্রায়লের রিপোর্টও সন্তোষ জনক বলেই দাবি করছে ভারত বায়োটেক। সংস্থাটির ভাইরোলজিস্টদের বরাত দিয়ে ডি প্রসাদ জানান, এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ২৮ দিনের ব্যবধানে শরীরে যে টিকার ডোজ দেয়া হয়েছিল, সেই টিকার ডোজে প্রয়োগকারীদের শরীরে সঠিক ভাবে আ্যান্টিবডি তৈরী হয়েছে।
তিনি জানান, এর আগে প্রথম দুইপর্বে মানবদেহের পাশাপাশি ২০টি বেসাস প্রজাতির বানরের শরীরেও টিকার ই›েজকশন দেয়া হয়েছিল, ঠিক ১৪ দিন পরে বানরদের শরিরে আ্যান্টিবডি তেরি শুরু হয়। ভারত বায়োটেক জানায়, টিকার ডোজে পশুদের শরীরেও অভুতপূর্ব সাড়া মেলেছে।
প্রসাদ দাবি করেছেন, সব ঠিক-ঠাক থাকলে ২০২১-এর মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে বাজারে কোভ্যাক্সিন চলে আসবে, এমনকি বায়োটেকের তৈরী এই ভ্যাক্সিনের দামও অন্য সবার চেয়ে কমই হবে। তিনি বলেছেন, ‘প্রথম দুই পর্বের টিকার ট্রায়ালের সফলতা দেখে আমরা আশাবাদী’। তিনি বলেন, বয়ষ্কদের শরীরেও ভালো ভাবে কাজ করবে এই টিকা। এদিকে দ্বিতীয়পর্বের ট্রায়াল সফলতার পরে এখন তৃতীয় পর্বের ট্রায়াল অব্যাহত রয়েছে। দেশের ২৫টিরও বেশী এলাকায় ২৬ হাজার মানবদেহে তৃতীয়পর্বের এই ট্রায়ালে অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রসাদ।
দেশের বাজারে কবে নাগাদ এই ভ্যাক্সিন বাজারজাত হবে এই প্রশ্নের জবাবে ডি প্রসাদ বলেছেন, প্রথমে ভারত বায়োটেক জানিয়ে ছিল ফেব্রুয়ারী-২১-র মধ্যে টিকা বাজারে চলে আসবে, কিন্তু মানব দেহে তৃতীয় পর্বের সন্তোষজনক ট্রায়াল প্রক্রিয়া স¤পন্ন হলেই টিকা বাজারে আনা হবে। এর আগে বায়োটেক সংস্থাকে বিধি অনুযায়ী বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা ও ভারতের ভ্যাক্সিন রেগুলেটারি কমিটির কাছ থেকে ভ্যাক্সিনের আনুমোদন নিতে হবে। এই আনুমোদন প্রক্রিয়া স¤পন্ন হলেই উপরি উল্লিখিত সময়ের মধ্যেই টিকা বাজারে চলে আসবে বলে তিনি আস্বস্থ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারত বয়োটেক সংস্থার অন্য একজন সিনিয়র কমর্কর্তা জানিয়েছেন, সমস্ত প্রক্রিয়া স¤পন্ন হওয়ার পরে এই ভ্যাক্সিন টিকা বাজারে আসতে কিছুটা সময় লাগবে, তবে আগামী মে মাসের আগেই করোনা প্রতিরোধী এই ভ্যাক্সিন বাজারে আসতে পারে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেছেন।