দেশের স্বার্থ ঠিক রেখেই প্রধানমন্ত্রী চুক্তি করবেন : বাণিজ্যমন্ত্রী

ফাইল ছবি

বাণিজ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের স্বার্থকে সমুন্নত রেখেই তিনি চুক্তি করবেন। এমন চুক্তি তিনি করবেন না যাতে দেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়।’

জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) ‘জঙ্গি মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে : রাজনীতিতে একবার রাজাকার-একবার মুক্তিযোদ্ধার সরকার-এই মিউজক্যাল চেয়ারের খেলা বন্ধ কর’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেছেন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ এ সেমিনার আয়োজন করে।

তোফায়েল আহমেদ আরো বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন ও ভারত আমাদের বড় বন্ধু। এ সব দেশের পরস্পরের সঙ্গে যে সম্পর্কই থাকুক না কেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সকলেরই ভাল বন্ধুত্বের সম্পর্ক রয়েছে। এটাই আমাদের পররাষ্ট্রনীতির সাফল্য।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘যারা ক্ষমতায় থাকাকালে ভারতের সঙ্গে তিস্তাসহ কোনো ব্যাপারেই কথা বলেনি, তাদের মুখে চুক্তির সমালোচনা শোভা পায়না। ওবায়দুল কাদের (আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী) ঠিকই বলেছেন, যার হাতে গঙ্গার পানি তার হাতেই তিস্তার চুক্তি হবে’।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আদর্শ পাকিস্তান-এমন মন্তব্য করে তোফায়েল আহমেদ আরো বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া যা বলেন পাকিস্তান তাই বলে। তাই ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস নিয়ে তিনি ও তার দল কোনো কথাই বলেননি। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের প্রেরণা, মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া সন্দেহ করেন।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের কেউ যদি ক্ষতি করে থাকে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান। জিয়া ৭২ এর সংবিধানকে তছনছ করে বঙ্গবন্ধুর সময়ে নিষিদ্ধ ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তার রোপণ করা বীষবৃক্ষ খালেদা জিয়া ফুলে ফলে ভরিয়ে তুলে নিজামী- মুজাহিদীদের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দেন। আর আমার হাতে সে সময় ছিল হাতকড়া।’

তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আমোদের দেশে প্রচার বেশি হয়। রানা প্লাজার ঘটনায় বিভিন্ন চ্যানেলে একটানা ১৭দিন লাইভ প্রচার করা হয়। এতে দেশের অনেক ক্ষতি হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষতা, সততা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতায় জঙ্গি উত্থান প্রায় নির্মূল হয়েছে।’

জঙ্গি সম্পর্কে বেগম খালেদা জিয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘জঙ্গিদের পিছনে ওনার প্রশ্রয় রয়েছে। জঙ্গি সমস্যা বৈশ্বিক। এটি গ্লোবাল প্রোব্লেম। আইপিইউ সম্মেলন সফল হয়েছে। এতে বেগম খালেদা জিয়া খুশি নন। তারা এই সরকারকে অবৈধ সরকার আখ্যা দেয়, তাহলে এই পার্লামেন্টের স্পিকার কি করে সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন? কি করে ইন্দোনেশিয়ার প্রতিযোগী থাকার পরেও সাবের হোসেন চৌধুরী আইপিইউ এর সভাপতি হন? সারা বিশ্ব বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রশংসা করছে। অথচ তারা খুশি নয়।’

সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান শওকত, নাদের চৌধুরী, মীর হোসেন আক্তার, রোকনুজ্জামান রোকন প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। সেমিনারের ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় সংসদ সদস্য শিরিন আক্তার।

হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ভয়ঙ্কর খুনিদের সিন্ডিকেট প্রধান। তিনি জঙ্গিদের স্নেহময়ী মাতা। ভয়ঙ্কর খুনিদের সিন্ডিকেট প্রধান বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপি সম্পর্কে শূন্য সহিষ্ণু নীতি গ্রহণ করতে হবে।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘অনেকে নির্বাচন নিয়ে মায়াকান্না শুরু করেছেন্। তারা বেগম খালেদা জিয়াকে ফেরত আনতে চাইছেন। কিন্তু নির্বাচন রক্তের দাগ মোছার সাবান নয়। নির্বাচন সেই সাবান না যা দিয়ে ধুলে বেগম খালেদা জিয়া পরিষ্কার হয়ে যাবেন। বিএনপি পরিষ্কার হয়ে যাবে।’