দেশে করোনা আক্রান্ত ৩ লাখ ছাড়িয়েছে, মোট সুস্থ ১,৯০,১৮৩ জন

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়িয়েছে। মোট সুস্থ হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার ১৮৩ জন। দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৪ লাখ ৮৫ হাজার ২৬১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ২ হাজার ১৪৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

গত ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৫৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৯ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৪৫ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ মৃত্যুর হার দশমিক ০১ শতাংশ বেশি। আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৪২৭ জন। গতকালের চেয়ে ৪৫৪ জন কম সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ৩ হাজার ৮৮১ জন।

আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৬২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ হাজার ৭০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৫১৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ২৬ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৪ হাজার ১৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৫৪৫ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ২৬ শতাংশ কম।

বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৮৩৫ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৪ হাজার ৭৮৮ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৪৭টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯২টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ৭০ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৪ হাজার ১৫৩ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৯১৭টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।

২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩৯ জন পুরুষ এবং ১৫ জন নারী। এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ২০৮ জন পুরুষ; ৭৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং ৮৭৪ জন নারী মৃত্যুবরণ করেছেন; যা শতকরা হিসাবে ২১ দশমিক ৪১ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে ৪৯ এবং বাড়িতে ৫ জন মারা গেছেন।

২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ষাটোর্ধ্ব ২৯ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৮ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যুর শতকরা হারে দেখা গেছে, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১৯ জন, যা দশমিক ৪৭ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩৫ জন, যা দশমিক ৮৬ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৯৬ জন, যা ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২৫৩ জন, যা ৬ দশমিক ২০ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৫৪৭ জন, যা ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১ হাজার ১২৯ জন, যা ২৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী মারা গেছেন ২ হাজার ৩ জন; যা ৪৯ দশমিক ০৭ শতাংশ।

বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে ২৩ জন, চট্টগ্রামে ৯ জন, রাজশাহীতে ৪ জন, খুলনায় ৯ জন, বরিশালে ২ জন, সিলেটে ২ জন, রংপুরে ৩ জন এবং ময়মনসিংহে ২ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ১ হাজার ৯৬৮ জন; যা ৪৮ দশমিক ২১ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৯৮ জন; যা ২২ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ২৭৬ জন; যা ৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৩৩৫ জন; যা ৮ দশমিক ২১ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৫৯ জন; যা ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ১৮৬ জন; যা ৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ১৭১ জন; যা ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৮৯ জন; যা ২ দশমিক ১৮ শতাংশ।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৬৫৩ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২০ হাজার ২৮৭ জন। আইসোলেশন থেকে ২৪ ঘন্টায় ৭৪১ জন এবং এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ২৮৭ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৬৮ হাজার ৬৮৬ জনকে।

প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ১ হাজার ৮৪৯ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘন্টায় এক হাজার ৯০৫ জন এবং এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৭ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৪ লাখ ৮৭ হাজার ১২ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫২ হাজার ৭০৫ জন।

ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৬২৫টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১৬৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ৪৬০টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১০টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২০০ জন ও শয্যা খালি আছে ১১০টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৮০ জন ও শয্যা খালি আছে ৬০২টি।
আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ২২ জন ও শয্যা খালি আছে ১৭টি।

সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৪৩৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ১ হাজার ৭১১ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৭২৫টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ১৯৯টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১০২ জন ও শয্যা খালি আছে ৯৭টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ৮৪৩টি, রোগী ভর্তি আছে ৪ হাজার ৫৬ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৭৮৭টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৪৮টি, রোগী ভর্তি আছে ৩২৪ জন এবং খালি আছে ২২৪টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৫৮৩টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৪২৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৭৬টি।

০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে “করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ” লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।

গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থতার সংখ্যা, ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ৭১৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৪২ জন, রংপুর বিভাগে ১৯৭ জন, খুলনা বিভাগে ২৭১ জন, বরিশাল বিভাগে ১০৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৫৭ জন, সিলেট বিভাগে ২০২ জন এবং ময়মনসিংহে ৩৭ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৮৬২টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৫০০টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৯৩টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৮ হাজার ৬৫৫টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭৩ হাজার ৩৪৯টি।

করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৪৭২ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ২ লাখ ৫০ হাজার ৮১৮ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৩২৪ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৬৫০ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৫ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ লাখ ৬৬ হাজার ৪২৫ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৬৯ হাজার ৩৯২ জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৫ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৩৫ লাখ ১৮ হাজার ৩৪৩ এবং এ পর্যন্ত ৮ লাখ ১০ হাজার ৪৯২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান