দেশে জাপানের মতো ভূমিকম্প সহনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে: প্রতিমন্ত্রী

দেশে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে জাপানের আদলে ভূমিকম্প সহনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ)’ আয়োজিত এক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জাপান ভূমিকম্প প্রবণ দেশ ছিল, কিন্তু তারা তাদের অবকাঠামো এমনভাবে তৈরি করেছে যে ভূমিকম্পে তাদের অবকাঠামোর কোনো ক্ষতি হবে না। তারা ৫০ বছরের একটি পরিকল্পনা আমাদের কাছে পেশ করেছে। এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের সব অবকাঠামো ভূমিকম্প সহনহনীয় হিসেবে গড়ে তুলবে। তারা আমাদের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেবে।’

‘আমরা ভূমিকম্প নিয়ে বেশি কাজ করতে পারিনি। মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি এবং উদ্ধার কাজ নিয়ে আলোচনা, সভা-সেমিনার হয়েছে। কিন্তু ভূমিকম্প সহনীয় রাষ্ট্র গড়ে তুলতে কোনো ব্যবস্থা আমরা নিতে পারিনি। সে জন্য জাপানের আদলে কাজটি করতে চাই,‘ বলেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি জানান, প্রথম ধাপে পুরান ঢাকার মতো যে অবকাঠামো আছে সেগুলো ভেঙে নতুন নকশায় নতুন করে ভূমিকম্প সহনীয় ভবন নির্মাণ করে উপকারভোগীদের মাঝে বরাদ্দ দেয়া হবে। দ্বিতীয় ধাপে যে ভবনগুলো বহুতল সেগুলো পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং তৃতীয় ধাপে জাপান সরকার বাংলাদেশের প্রকৌশলী ও স্থপতিদের প্রশিক্ষণ দেবে।

মন্ত্রী আরও জানান, পুরান ঢাকার বিভিন্ন স্থানে যে প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে সেগুলোর ‘রেট্রোফিটিং’ করে ব্যবস্থা নেয়া যায় কি না সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। ‘কীভাবে করা যায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’

বন্যা নিয়ে তিনি বলেন, ‘এবারের বন্যায় ৩৪ জেলায় ৫২ লাখ লোক আক্রান্ত হয়েছে। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেয়া মানুষের সংখ্যা ছিল কম। এবার আমরা গবাদিপশু ও শিশু খাদ্যের জন্য বরাদ্দ রেখেছিলাম। যারা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেননি তাদেরও ত্রাণ সহায়তার আওতায় আনা হয়েছে। এবার ত্রাণ ব্যবস্থাপনা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে একটি কাঠামোতে আনতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যাদেশ সংস্করণ করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে-বিদেশে এটি প্রশংসিত হয়েছে। যখন যেখানে দুর্যোগ আসুক সেখানে কে সাড়া দেবে সেটি এ কার্যাদেশে উল্লেখ আছে।’

প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশে ৪২৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। ২২০টি সাইক্লোন সেন্টারের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে এবং ৫৫০টি মুজিব কেল্লা তৈরির কাজ চলমান রয়েছে।

বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার, বিএসআরএফ সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।