দেশে শুরু হলো ক্রিকেট কার্যক্রম কঠোর নিয়মের মধ্য দিয়েই

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের কারনে ৪ মাস স্থগিত থাকার পর আজ থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেট কার্যক্রম শুরু হলো। করোনার কারনে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) তৈরি করা নতুনত্বের মধ্যে অনেক নতুন কিছুই খুঁজে পেয়েছে খেলোয়াড়রা। মোট ৯ জন খেলোয়াড় আজ দেশের ৪টি ভেন্যুতে ব্যক্তিগত অনুশীলন করেন। এর আগে খেলোয়াড়দের জন্য অনুশীলন সূচি পাঠিয়েছিলে বিসিবি এবং খেলোয়াড়দের এটি মেনে চলতে বলা হয়েছে।

অনুশীলনের ১ম দিন মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ঘাম ঝড়ান উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম, মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিথুন ও পেসার শফিউল ইসলাম। মিরপুরের ২ নম্বর গেট দিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন খেলোয়াড়রা। প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে স্টেডিয়ামে আসেন মিথুন। তখন তিনি দেখতে পান গেটটি বন্ধ। সেখান থাকা নিরপত্তাকর্মী তাকে ৫ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করতে বলেন। যেখানে তার শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা এবং তার হাতে স্যানিটাইজ করা হয়।

শুধুমাত্র মিথুন নয়, মুশফিকুর ও শফিউলকেও এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। তারা যে গাড়িগুলো নিয়ে এসেছিলো, সেগুলোও ভালোভাবে স্যানিটাইজ করা হয়। খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে অনুশীলন করেন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ, মেহেদি হাসান ও উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলন করেন পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও স্পিনার নাসুম আহমেদ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে অনুশীলনের সূচি ছিলো অফ-স্পিনার নাইম হাসানের। কিন্তু বৃষ্টির কারনে অনুশীলনে নামতে পারেননি নাসুম। মিরপুরে মুশফিক এন্ড কোংকে যে প্রক্রিয়ায় মাঠে প্রবেশ করতে হয়েছিলো, অন্য ভেন্যুতেও অন্য সব খেলোয়াড়দের সেভাবে প্রবেশ করতে হয়েছে।

মিরপুরে অনুশীলন শুরু হয় সকাল ৯ টায়। দৌঁড় সেশন দিয়ে অনুশীলন পর্ব শুরু করেন মুশফিক। তিনি যখন দৌঁড়ে ঘাম ঝড়াচ্ছিলেন, তখন ইনডোরে বোলিং মেশিন দিয়ে ব্যাটিং অনুশীলন করছিলেন মিথুন। মাঠে দৌঁড় শেষে ইনডোরে যান মুশফিক। তখন দৌড়ানোর জন্য একাডেমি গ্রাউন্ডে চলে যান মিথুন। ঐ সময় ইনডোরে ব্যাটিং অনুশীলন করছিলেন মুশফিক।

সকাল ১১ টায় স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন শফিউল। আপতত তাকে বোলিং করার অনুমতি দেয়নি বিসিবি। তবে এক ঘন্টায় ফিটনেস ট্রেনিং ও দৌঁড়ে ঘাম ঝড়িয়ে খুশী শফিউল। মিরপুরে ৩ খেলোয়াড়ের অনুশীলন দেখভাল করেছেন বিসিবির প্রশিক্ষক তুষার কান্তি হাওলাদার। ব্যাটিং অনুশীলনের জন্য বোলিং মেশিনে বল দেয়ার জন্য সেখানে অল্প সংখ্যক মানুষ ছিলো এবং সকলেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেন।

খেলোয়াড়দের সাথে স্টেডিয়ামে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এমনকি, খেলোয়াড়দের অনুশীলন কভার করতে এসে অন্য জায়গায় অবস্থান করেছেন সাংবাদিকরা। তারাও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেন।

বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরি বলেন, ‘আমরা সকল স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার চেষ্টা করছি এবং খেলোয়াড়দের সুরক্ষার জন্য সামাজিক দূরত্ব মানা হয়েছে। খেলোয়াড়সহ অন্যান্যরাও নিয়মগুলো অনুসরণ করেছেন। আশা করছি, আমরা এই পরিকল্পনা অব্যাহত রাখবো। কারন খেলোয়াড়দের সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য বিধি নিয়ন্ত্রন করাই আমাদের ১ম লক্ষ্য।’

ঈদুল আজহার পর কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরু করার পরিকল্পা ছিলো বিসিবির। কিন্তু তার আগেই নতুন পরিবেশের সাথে খেলোয়াড়দের মানিয়ে নেয়ার সুযোগ করে দিতে চায় বিসিবি। দেশে করোনার প্রার্দুভাব হবার পর গেল মার্চ মাস থেকে ক্রিকেটীয় কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিলো বিসিবি। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান