দেশে ২৪ ঘন্টায় করোনায় মৃত্যু কমেছে, বেড়েছে সুস্থতা

দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৬৫তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে মৃত্যু সংখ্যা কমেছে, পাশাপাশি সুস্থতা বেড়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ১৭ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ৫৪৪ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৬ হাজার ৩৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ২৭৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১৯ জন কম শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৭ হাজার ৫২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ২৯২ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৭ লাখ ২৯ হাজার ৫৮০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৭১১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮১ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৭৮২ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২২৩ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৬৭৬ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৮১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৯২২ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৬ হাজার ৪৯৪ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৫৭২টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১১৮টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৬ হাজার ৩৭৮ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৭ হাজার ৫২ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৬৭৪টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৬৯৩ দশমিক ৪৪ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২১৯৪ দশমিক ১৪ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৩৮ দশমিক ৪২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ২০ জনের মধ্যে পুরুষ ১৭ জন, আর নারী ৩ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ২৪ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৫২০ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ২৩ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ২০ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের বছরের ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের বছরের ১ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৭ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১০ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩১ জন; যা দশমিক ৪৭ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫২ জন; যা দশমিক ৭৯ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৪৬ জন; যা ২ দশমিক ২৩ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৪২ জন; যা ৫ দশমিক ২৩ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৭৯৪ জন; যা ১২ দশমিক ১৩ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৭১০ জন; যা ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৪৬৯ জন; যা ৫৩ দশমিক ০১ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১০ জন, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে ৩ জন করে, খুলনা বিভাগে ২ জন এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৪৮৭ জন; যা ৫৩ দশমিক ২৯ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ২৫৩ জন; যা ১৯ দশমিক ১৫ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৪০১ জন; যা ৬ দশমিক ১৩ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪৯২ জন; যা ৭ দশমিক ৫২ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২১৮ জন; যা ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৬৪ জন; যা ৪ দশমিক ০৩ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৯৭ জন; যা ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩২ জন; যা ২ দশমিক ০২ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ৪৮৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১৭৪ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৩০৯টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৫টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২১৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৯০টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৭০টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৪৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৬২৩টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৮ জন ও শয্যা খালি আছে ২১টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ১৬৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৫৯২ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৫৭২টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২১১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৬৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১৪৩টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১১ হাজার ৪১৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৯১৪ জন এবং শয্যা খালি আছে ৮ হাজার ৫০৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৫৫টি, রোগী ভর্তি আছে ৩০১ জন এবং খালি আছে ২৫৪টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৬২৫টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬০৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৯৯টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bdএর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ২২৩ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৬৪৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৬৮ জন, রংপুর বিভাগে ৪০ জন, খুলনা বিভাগে ২৮ জন, বরিশাল বিভাগে ২৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ৭৯ জন, সিলেট বিভাগে ৩০ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৭ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭২ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৮৮ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৭৭ হাজার ১১১ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৩৬ হাজার ২৩৮ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪০ হাজার ৮৭৩ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২৩০ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ১১৮ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯০ হাজার ৬৬৩ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৯৪৭ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৭১৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ হাজার ১৫৩ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১২ লাখ ৪৭ হাজার ৯৮০ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৩৮টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২১৪টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪ হাজার ২৫২টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ২৮ লাখ ৮০ হাজার ২১৫টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ৩ হাজার ৪৯৭ জন, এবং এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৭১ হাজার ৩০ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৫ লাখ ৮০ হাজার ৯৬০ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৬১ হাজার ৩৩৬ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬ কোটি ৭৪ হাজার ১৭৪ জন এবং ১৪ লাখ ১৬ হাজার ২৯২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।