দেড় হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে আলিবাবা

আজকের বাজার প্রতিবেদন
বৈশ্বিক গবেষণা এবং উন্নয়ন (আরঅ্যান্ডডি) খাতে ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে চীনভিত্তিক ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবা। আগামী তিন বছরে এ অর্থ বিনিয়োগ করা হবে। পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বৈশ্বিক আরঅ্যান্ডডি খাতে আগামী তিন বছরে আলিবাবা যে অর্থ বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে, তা ২০১৪ সাল থেকে চলতি বছরের ৩১ মার্চ সমাপ্ত হিসাব বছর পর্যন্ত গবেষণা এবং উন্নয়ন খাতে প্রতিষ্ঠানটির মোট ব্যয়ের দ্বিগুণের চেয়েও বেশি।
আলিবাবা একাডেমি ফর ডিসকোভারি, অ্যাডভেঞ্চার, মোমেন্টাম এবং আউটলুক (ডিএএমও) প্রোগ্রামের আওতায় বিনিয়োগের এ অর্থ ব্যয় করবে। এ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে আলিবাবা বেইজিংয়ের হাংঝু, যুক্তরাষ্ট্রের সান মাতেও এবং বেলভ্যু, মস্কো, তেল আবিব ও সিঙ্গাপুরে সাতটি গবেষণা ল্যাব স্থাপনের পাশাপাশি ১০০ গবেষক নিয়োগ দেবে।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার মতো একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরআইএসই ল্যাবের সহযোগিতায় এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে ডাটা ইন্টেলিজেন্স, ইন্টারনেট অব থিংস, আর্থিক প্রযুক্তি, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং মানুষ ও যন্ত্রের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের প্রযুক্তি উন্নয়নে সহযোগিতা করা হবে। একই সঙ্গে মেশিন লার্নিং এবং ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং প্রযুক্তি নিয়ে কাজে সহায়তা দেয়া হবে।
বিবৃতিতে আলিবাবা জানায়, এ প্রোগ্রাম পরিচালিত হবে একটি পরামর্শক বোর্ড গঠনের মাধ্যমে। যেখানে গবেষক এবং এমআইটিসহ বিশ্বের কয়েকটি শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদ থাকবেন।
চীনের হাংঝুতে অনুষ্ঠিত আলিবাবার ‘কম্পিউটিং কনফারেন্স ২০১৭’তে গবেষণা এবং উন্নয়ন খাতে বড় অংকের এ বিনিয়োগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা (সিটিও) জেফ ঝ্যাং। তিনি আলিবাবার এ প্রোগ্রামের নেতৃত্ব দেবেন।
বিবৃতিতে আলিবাবার সিটিও বলেন, পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তি উন্নয়নে গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। এ কাজের জন্য প্রয়োজন বিনিয়োগ। নতুন প্রযুক্তি উন্নয়ন আলিবাবা এবং এর প্যারেন্ট কোম্পানির প্রবৃদ্ধি বাড়াবে।
তিনি বলেন, গৃহীত প্রোগ্রামের লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা মেধাবী ও পরিশ্রমী কিছু গবেষক খুঁজছি, যারা মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারবেন। একই সঙ্গে ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য লাভজনক প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং পৃথিবীকে বসবাসের জন্য আরো ভালো স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে মানুষ ও প্রযুক্তির মধ্যে যে দূরত্ব, তা দূর করতে ভূমিকা রাখবেন।
আলিবাবা আগামী ২০ বছরের মধ্যে ২০০ কোটি মানুষকে সেবা দেয়া এবং ১০ কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এ লক্ষ্য পূরণে গবেষণা এবং উন্নয়নে বিনিয়োগ ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
বিশ্লেষকদের তথ্যমতে, চীন এজ-টু-এজ প্রযুক্তি উন্নয়নে গবেষণা এবং উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস গত সেপ্টেম্বরে এক প্রতিবেদনে জানায়, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে নেতৃত্ব দিতে চায়। এ লক্ষ্যে দেশটির সরকার একটি ন্যাশনাল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান ঘোষণা করেছে। এরই অংশ হিসেবে গবেষণা এবং উন্নয়নে চীনা কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
চীনের ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবা এককভাবে নয়, দেশটির ইন্টারনেট কোম্পানি বাইদু এবং টেনসেন্ট নতুন প্রযুক্তি উন্নয়নে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গবেষণা এবং উন্নয়ন ল্যাব চালু করেছে। খবর: ব্লুমবার্গ।