ধান কাটার আগেই ৫০ হাজার টন চাল আমদানির দরপত্র

বোরো মৌসুমের ধান কৃষকের গোলায় উঠতে না উঠতেই ৫০ হাজার টন চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র ডেকেছে সরকার।
গতকাল সোমবার,৮ মে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি দরপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারি গুদামের মজুদ ৩ লাখ মেট্রিক টনে নেমে আসায় এ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ২১ মে-এর মধ্যে খাদ্য অধিদপ্তরে ৫০ হাজার টন নন বাসমতি সেদ্ধ চাল আমদানিতে আগ্রহী দরদাতাদের প্রস্তাব জমা দিতে হবে।

দরপত্রে চাল আমদানি শুল্কের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। তবে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সাময়িকভাবে চাল আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের চিন্তা করছে সরকার। চলতি অর্থবছরে এই প্রথমবারের মতো সরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হল। এই ৫০ হাজার টন চালের মধ্যে ৬০ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দর এবং ৪০ শতাংশ মোংলা দিয়ে আমদানি করা হবে।

সম্প্রতি খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, দেশের বার্ষিক চালের চাহিদা প্রায় ৩ কোটি টন। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকে। এবারও চাহিদা মেটাতে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী গত ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি গুদামগুলোতে চালের মজুদ ছিল ৩ লাখ ৫ হাজার টন। গত বছর এপ্রিলে মজুদ ছিল সাড়ে ৭ লাখ টনের বেশি চাল।

চালের আমদানি শুল্কের বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কোনো দেশেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে সাধারণত শুল্ক থাকে না। বাংলাদেশেও এক সময় ছিল না। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতি মুনাফা লাভের আশায় চাল আমদানি করায় শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। গত সপ্তাহে চালকল মালিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি বলেছিলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে আগের অবস্থায় এ ট্যাক্স উঠিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব সরকারের কাছে দিয়েছি। ট্যাক্স কমলে হয়তো মূল্যবৃদ্ধির কারসাজি হ্রাস পাবে।

চলতি বোরো মৌসুমে ৭ লাখ টন ধান এবং ৮ লাখ টন চাল কেনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল সরকার। হাওর অঞ্চলে বন্যার কারণে সেই লক্ষ্য পূরণ নিয়ে সংশয় দেখা দেওয়ায় চাল আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন কর্মকর্তা।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, হাওর অঞ্চলের জেলাগুলোতে বন্যায় প্রায় ৬ লাখ টন ধান নষ্ট হয়েছে। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এবারের বন্যায় ফসলহানির পরিমাণ ২২ লাখ টন।

আজকের বাজার:এসএ/এলকে/ ৯ মে ২০১৭