নতুন ভ্যাট আইনে ব্যবসায়ীরা হবেন ভ্যাট ট্রাস্টি

নতুন আইন ব্যবসা, শিল্প ও বিনিয়োগকে বিশেষ সহায়তা প্রদান করবে এবং অধিকতর রাজস্ববান্ধব হবে। এতে “ভ্যাট দিচ্ছে জনগণ, দেশের হচ্ছে উন্নয়ন”- শ্লোগানটি বাস্তব রূপ লাভ করবে। ব্যবসায়ীরা ট্রাস্টি হিসেবে জনগণের প্রদত্ত ভ্যাট সংগ্রহপূর্বক রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে সক্ষম হবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানকে।

তিনি নতুন আইনের ৭টি উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরেন, যা নিম্নরূপ।

১। এটি আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার ভিত্তিতে প্রণীত। এতে দেশীয় শিল্পের ন্যায্য সুরক্ষা, রপ্তানীমুখী খাতে সুবিধা, আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণ ও কর্মসংস্থান সৃজনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

২। সাধারণ জনগণের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন বিষয়ে (মৌলিক চাহিদা, খাদ্য ও কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান ইত্যাদি) বিষয়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া আছে। শীঘ্রই কয়েক পৃষ্ঠার দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করা হবে।

৩। পুরাতন আইনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য কোন অব্যাহতি ছিল না, তাদেরকেও ভ্যাট দিতে হতো। নতুন আইনে ৩০,০০,০০০ (ত্রিশ লাখ) টাকা পর্যন্ত টার্নওভার সীমার মধ্যে থাকা প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া আছে। এছাড়া ৮০,০০,০০০ (আশি লাখ) টাকা পর্যন্ত টার্নওভার সীমায় অন্তর্ভূক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার মাত্র ৩ শতাংশ। উভয় ক্ষেত্রে টার্নওভার সীমা বাড়ানোর বিষয় সক্রিয় বিবেচনাধীন আছে।

৪। নতুন আইনে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন সুবিধা যেমন: ভ্যাট কর্মকর্তাদের পূর্ব অনুমোদন ছাড়াই উৎপাদিত পণ্যের মূল্য নির্ধারণ, বহু প্রতিষ্ঠানের জন্য মাত্র একটি নিবন্ধন গ্রহণ ইত্যাদি সুবিধা দেয়া হচ্ছে।

৫। নতুন আইনে ভ্যাট কর্মকর্তাদের দায়বদ্ধতা বাড়ানো হয়েছে এবং অহেতুক শিল্প কারখানা পরিদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ভ্যাট কর্মকর্তারা সেবার মনোভাব নিয়ে ‘হালখাতা’ ও ‘মেলা’র পরিবেশে দায়িত্ব পালন করবেন। এজন্য তারা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন, আয়োজন করেছেন নিবন্ধন মেলার।

৬। নতুন আইন সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাস্তবায়িত হবে। ফলে ব্যবসায়ীরা নিবন্ধনকরণ, রিটার্ন প্রদান, অনলাইন পেমেন্ট, রিফান্ড, ইত্যাদি সহজে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করতে পারবেন। এতে ব্যবসার ও উৎপাদনের খরচ কমবে এবং জনসাধারণ উপকৃত হবেন।

৭। নতুন আইনে প্রচলিত আইনের মতই ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় হবে। এটি নতুনভাবে আরোপিত হচ্ছে না।