নিউজিল্যান্ডকে ৮৬ রানে হারালো অস্ট্রেলিয়া

উসমান খাজার ব্যাটিং নৈপুন্যের পর মিচেল স্টার্কের ৫ উইকেট শিকারের সুবাদে বিশ্বকাপের ৩৭তম ম্যাচে গতকাল নিউজিল্যান্ডকে ৮৬ রানে হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। এ পরাজয়ে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল খেলাটা কিউইদের জন্য আরো কঠিন হয়ে গেলো। আর শীর্ষ স্থানটি আরো পোক্ত করলো সবার আগে সেমি নিশ্চিত করা অসিরা।
জয়ের জন্য ২৪৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে আজও নিউজিল্যান্ড দুই ওপেনার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। জটিল পিচে দেখেশুনে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে খেলতে থাকলেও ওপেনার হেনরি নিকোলস ব্যক্তিগত ৮ রানে বেহরেনডর্ফের বলে আউট হলে দশম ওভাওে দলীয় ২৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। কিছুক্ষন পর আবারো কিউই শিবিরে আঘাত হানেন বেহরেনডর্ফ। এবার ৪৩ বলে ২০ রান করা আরেক ওপেনার মার্টিন গাপটিল আউট হলে দলের স্কোর দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৪২।
তবে তিন এবং চার নম্বরে নামা উইলয়ামসন এবং রস টেইলর শক্ত হাতে দলের হাল ধরেন। জুটিবদ্ধভাবে তারা ৫৫ রান যোগ করার পর শুরু হয় স্টার্কের তান্ডব।
৫১ রানে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪০ রান করা উইলিয়ামসনকে প্রথম শিকার বানান টুর্নামেন্টে দ্বিতীয়বারের মত ৫ উইকেট শিকার করা স্টার্ক। অধিনায়ক উইলিয়ামসনের বিদায়ে নিউজিল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ৯৭/৩। এরপরই চতুর্থ উইকেট হিসেবে আউট হন অভিজ্ঞ টেইলর। প্যাট কামিন্সের শিকার হওয়ার আগে ৫৪ বলে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন অভিজ্ঞ টেইলর। এরপর টম লাথাম(১৪),নিশাম(৯),স্যান্টনার(১২), সোধি(৫) এবং ফার্গুসন(০) সকলেই স্টার্কের শিকার হলে ৪৩,৪ ওভাওে ১৫৭ রানে থামে নিউজিল্যান্ড ইংিস।। ২৬ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন এ পেসার। ২৪ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ শিকারী স্টার্ক। এ ছাড়া বেহরেনডর্ফ৩১ রানে নেন ২ উইকেট।
এর আগে উসমান খাজা ও ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া এ্যলেক্স ক্যারির জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪৩ রান করেছে অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট শিকার করেছেন হ্যাট্রিকসহ ৪ উইকেট।আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের ৩৭তম ও গতকাল দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে লর্ডসে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা অস্ট্রেলিয়া। উভয় দলেরই টুর্নামেন্টে এটা সপ্তম ম্যাচ।
তবে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভাল করতে পারেননি ফর্মে থাকা দুই ওপেনার এ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার। ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই দলীয় ১৫ ও ব্যক্তিগত ৮ রানে বোল্টের এলবিডব্লুর শিকার হন এ্যারন ফিঞ্চ। এরপর তিন নম্বরে নামা খাজার সঙ্গে জুটি বাঁধেন আরেক ওপেনার গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ডেভিড ওয়ার্নার। কিন্তু বেশি সময় টিকতে পারেননি ওয়ার্নার। দশম ওভারে দলীয় ৩৮ রানেই বিদায় নিতে হয় তাকে।লোকি ফার্গুসনের প্রথম শিকারে পরিনত হওয়ার আগে ২৩ বলে ১৬ রান করেন ওয়ার্নার। এরপর খাজার সঙ্গে জুটি বাঁধেন সাবেক অধিনায়ক। কিন্তু ব্যক্তিগত ৫ রানে ফার্গুসনের দ্বিতীয় শিকার হলে ৪৬ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা অসিরা। এরপর মার্কাস স্টয়নিস ২১ রান করে শিকার হন জেমস নিশামের। একপ্রান্ত দিয়ে সতীর্থরা আসা-যাওয়ার মিছিলেন সামিল হলেও আরেক প্রান্তে অবিচল ছিলেন ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে তিন নম্বরে নামা খাজা। স্টয়নিসের সঙ্গে ৩৫ রানের জুটি গড়েন তিনি। স্টয়নিস বিদায় নিলে গ্লেন ম্যাক্সয়েল রানের খাতা খেলার আগেই নিশামের দ্বিতীয় শিকারে পরিনত হলে ২১তম ওভারে দলীয় ৯২ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় অসিরা। এমন অবস্থায় স্বল্প রানে গুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃস্টি হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের সামনে। তবে সেটা হদে দেননি খাজা-ক্যারি। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১০৭ বলে ১০৭ রান যোগ করে দলকে ভাল অবস্থায় নিয়ে যান তারা। ৭২ বল মোকাবেলায় ৭১ রান করে অকেশনাল বোলার কেন উইলিয়ামসনের শিকার হয়ে ক্যারি আউট হলে ১৯৯ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। তবে তখনো এক প্রান্ত আগলে রাখেন খাজা। ৪৩ তম ওভারের শেষ বলে বোল্টের শিকার হয়ে ৮৮ রান করা খাজা বিদায় নিলে ২৪৩ রানে সপ্তম উইকেটের পতন ঘটে। অপর প্রান্তে ১৯ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন প্যাট কামিন্স। খাজার পর মিচেল স্টার্ক ওজেসন বেহরেনডর্ফকে শুন্য রানে আউট কওে হ্যাট্রিক পর্ন করেন বোল্ট। ১০ ওভারে ৪১ রানে ৪ উইকেট নেন বোল্ট। নিশাম ও ফার্গুসন নেন ২টি করে উইকেট।