ন্যায্য প্রাপ্যতা নিশ্চিতে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ‘মার্কেট ড্যাশবোর্ড’ চালু করল ইউনিসেফ

জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের একটি ‘মার্কেট ড্যাশবোর্ড’ চালু করার ঘোষণা দিয়েছে, যা মূলত দ্রুত বিকশিত কোভিড ভ্যাকসিন বাজারের অগ্রগতিগুলো অনুসরণ করা এবং বিশ্বের প্রতিটি দেশের জন্য সুষ্ঠু ও ন্যায়সঙ্গতভাবে ভ্যাকসিনের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার জন্য ‘কোভ্যাক্স’ প্রচেষ্টার একটি সরঞ্জাম।
সোমবার ইউনিসেফ জানায়, এই ড্যাশবোর্ডটির মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণার নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য, প্রস্তাবিত উৎপাদন ক্ষমতা, প্রকাশ্যে ঘোষিত দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপাক্ষিক সরবরাহ চুক্তিসমূহ ও উল্লেখিত মূল্যের তথ্য সরবরাহ করা হবে।

২০২১ সালে ড্যাশবোর্ডটি ইউনিসেফ এবং কোভ্যাক্স প্রচেষ্টায় অংশ নেয়া অন্যান্য ক্রেতাদের ভ্যাকসিন সংগ্রহের অবস্থানের বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য সরবরাহ করবে। এছাড়া সরবরাহের ক্ষেত্রে এটি ইউনিসেফ এবং অংশগ্রহণকারী অন্যান্য জাতীয় এবং প্রাতিষ্ঠানিক ক্রেতাদের অবস্থানও জানাবে।

উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে সুষ্ঠুভাবে টিকা সরবরাহের প্রতিশ্রুতি নিয়ে গঠিত হয় ‘কোভ্যাক্স’ জোট। এর নেতৃত্বে রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস (গ্যাভি) এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনস (সিইপিআই)।

বিশ্বজুড়ে ২০০ কোটি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জোটটি।

এর মধ্যে ১৩০ কোটি ডোজ পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য রয়েছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ৯২টি দেশে।

সম্প্রতি এক বিবৃতিতে কোভ্যাক্স জানায়, যেসব দেশ এই উদ্যোগের সাথে যুক্ত হয়েছে, তাদের সকলের কাছে ২০২১ সালের প্রথম দিকে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

এদিকে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি প্রয়োজনে বায়োএনটেক এবং ফাইজার উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ টিকা ব্যবহারের অনুমোদনের কয়েক সপ্তাহ পরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় শর্ত সাপেক্ষে এ টিকা ব্যবহারের অনুমোদনের সুপারিশ করেছে ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি।

সোমবার বিশেষজ্ঞদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর ইইউ’র ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, ব্যতিক্রম বাদে ১৬ বছরের বেশি বয়সী মানুষের শরীরে এ টিকা দেয়ার অনুমোদন দেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ফার্মাসিউটিকেল সংস্থাগুলোকে আগামী বছর তাদের ভ্যাকসিন ব্যবহারের জন্য ফলো-আপ তথ্য জমা দিতে হবে।

ইইউ’র ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান ইমার কুক বলেন, ‘এটি সত্যই এক ঐতিহাসিক বৈজ্ঞানিক অর্জন। মহামারির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন এক টুইটে জানিয়েছেন, ‘ইউরোপীয়দের জন্য নিরাপদ ও কার্যকর ভ্যাকসিন সরবরাহে আমাদের প্রয়াসের অনুমোদন দেয়ার সময়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইএমএ।’

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এখন আমরা দ্রুতই এটি বাস্তবায়ন করব। এ বিষয়ে আমি আজ সন্ধ্যা নাগাদই ইইউ কমিশনের সিদ্ধান্ত জানাব বলে আশা করছি। যদিও সিদ্ধান্ত অনুমোদনের জন্য দুই বা তিন দিন প্রয়োজন হতে পারে বলে মনে করেছিল ইএমএ।’