পুঁজিবাজার এখনও পূর্ণ আস্থা অর্জন করতে পারেনি: শামসুল হুদা

বর্তমানে আমাদের পুঁজি বাজারে সার্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে আমি বলতে পারি সরকার সরাসরি কোন প্রণোদনা দেয়নি পুঁজিবাজারে তবে ইনডাইরেক্টলি যে নেই তা না কিছু হয় তো আছে । মূল সমস্যা যেটা সেটা হলো আমারা এখনও মানুষকে পুঁজি বাজারের প্রতি আস্থা আনতে পারি নাই. আস্থায় আনতে না পারার দিক হচ্ছে প্রথমম বারবার তারা পুঁজি বাজারে হতাশা হচ্ছে, দ্বিতীয়ত পুঁজি বাজারে এমন কোন আইটেম নাই যেটাতে তারা সেইফ থাকবে। যেমন এফডিআর রাখলে কিছু টাকা ইন্টারেস্ট পায় তারা এখন এরকম লোকের জন্য এখানে স্কোপ নেই, স্কোপ না থাকায় সেইফ আর্নিং হিসেবে তারা ব্যাংককে বেছে নিচ্ছে । তো এখানে যদি আমাদের কর্মাসিয়াল বন্ড থাকতো অন্যান্য গর্ভমেন্ট বন্ড ট্রেইন হতো।

সেইফ মার্কেটে এটা খুব বেশি গেইনও নাই, এটা খুব বেশি মার্কেটেও উঠবেও না আবার পড়বেও না। তাহলে সেখানে এগুলোর ফিক্সড একটি ইনকাম থাকবে। আমাদের এখানে অবশ্য অন্যান্য বন্ডও নেই সেখানে কোম্পানীগুলোর বিভিন্ন বন্ড হতে পারে, ব্যাংকের বিভিন্ন বন্ড থাকতে পারে এ বন্ড গুলো আসলে হয়তো যারা ফিক্সড আর্নিং করতো তারা এখানে ইনভেস্ট করবে। যেহেতু এখানে সেটা নেই তাই পুঁজি বাজারে সে ত্যাজি ভাবটা আমাদের এখানে লক্ষ্য করা যায় । আমাদের এখানে আছে ইকোডি মার্কেট, ইকোডি মার্কেট একটি রিক্সি মার্কেট এখানে মানুষ পুঁজি হারাবে। কিন্তু ইকোডি মার্কেটেতো সবাই ইনভেস্ট করবে না, তো আমাদের জন্য কর্মাসিয়াল বন্ডকেই উন্নত করতে হবে । পুঁজিবাজারে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে যারা ফিক্সট আয় করবে তাদের জন্য স্কোপ রাখতে হবে, তারপর মানুষের যেন ব্যাপক ক্ষতি না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে মার্কেট একটা লেবেলে নামে পৃথিবীর সব পুঁজিবাজারই একটা লেভেলে নামে পরে আবার সেটা ঠিক হয় ।

কিন্তু আমাদের এখানে মার্কেট মেকার নেই, সরকারের এমন কোন পলিসিও নেই , যাতে মার্কেটে ধস নামলে সার্পোট দিবে। শুধু আইসিবি ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠান কে গর্ভমেন্ট বোর্ডে উঠতে পারেনি, হয়তো সরকার চায় না, বিভিন্ন সরকারি ব্যাংকগুলোকে আনতে হবে ,তারা ইনভেস্টে কতটা পারদর্শি বা মার্কেট ধরে রাখার জন্য তারা এক্সপার্ট কিনা সেটা দেখতে হবে মার্কেটে তাদের হাতেই শেয়ার থাকতে হবে । আইসিবির মত আরও কিছু প্রতিষ্ঠান তৈরী করতে হবে যাতে মার্কেট নিয়ন্ত্রণ করতে যাতে ধস না নামে, যেন মার্কেট বিশালভাবে বেড়ে না যায়, এ লাফে অনেক দূরে চলে না যায়।

ওয়ার পাকটিস হচ্ছে আপনি মার্কেট ব্রেকার থাকে এবং তাদের অনেকগুলো ম্যাকানিজম থাকে যে ম্যাকানিজমগুলো আমাদের এখানে উন্নত হয়নি। আইসিবি একটি কোম্পানিকে উন্নয়ন করেছে যার হাতে যথেষ্ট পরিমাণে শেয়ার আছে যেসব কোম্পানি মাধ্যমে মার্কেট ব্যাংকিং অথবা মার্কেট হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার আগে যথেষ্ট পুঁজি দেওয়া। একটা কোম্পানী যদি মূল মার্কেটের ক্যাপসিটি না থাকে এটাকে আপনি বিভিন্ন সীমানায় ভাগ করে দেন তখন ১টা কোম্পানী শেয়ার ১ লক্ষ বা ১ কোটি সে মূল মার্কেটে থাকতে পারবে না । একটা কোম্পানী যখন দেখবে ভাল দিতে পারছে না তাকে আপনি অটিজম মার্কেটে নিয়ে আসেন, যদি কোন কোম্পানী শেয়ার মার্কেট ধরতে চায় তাকে আপনি অটিজম মার্কেটে নিয়ে আসলে যে হবে তার শেয়ার ছাড়ার জন্য তার যে সমস্ত রেগুলাটার বডির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার দরকার এবং রেগুলেটার সর্ম্পকে জানা দরকার।

একটা লোক যখন বলে তার যোগ্যতা আছে তখন তাকে কোন কোম্পানীতে চাকুরী করতে হবে। সে যখন কোন দোকানে কাজ করে পারফেকশনে আসল,তার সবকিছু কমপ্লানস যখন রেডি হয়ে গেল। আমি বললাম যে আমার কমপ্লানস রেডি কিন্তু আমি পরীক্ষা দেয়নি আমাকে কিন্তু পরীক্ষা না দিয়ে পাশ করতে পারি না। এটা হচ্ছে একটা শ্লেট। যেমন এই মার্কেটে অনেক লোক ননকমপ্লানস হয়ে যাচ্ছে তাদেরকে এখানে নিয়ে আসতে হবে এটাই আমাদের লক্ষ্য।

ইকুইটি মার্কেট সম্পর্কে ধারণা
আমরা মূলত ডেট মার্কেটে আছি,আমরা ইকুটি মার্কেট বা ঋন মাকের্টে খুব বেশি নেই। যখন কোন কোম্পানী স্টক বা গিনফিন দ্বারা নতুন প্রজেক্টে টাকা দরকার। নতুন প্রেেজক্টে যে টাকা দরকার সেই টাকাটা আমরা ডেট বা ইকুটির কিছু অংশ থেকে দিয়ে থাকি। যদি আপনি কোন শেয়ার চান যে এই কোম্পানীর ৬০ বা ৭০ ভাগ শেয়ার দেন আর ৩০ বা ৪০ ভাগ শেয়ার ইকুটির। এই ৬০ ভাগে ২-৩ প্রকারের বন্ড থাকতে পারে একটা হচ্ছে কোন নির্দিষ্ট সময় চলতেই থাকবে আরেকটা হচ্ছে চলতেই থাকবে। তেমনিভাবে ঐ কোম্পানীর ডেবিডেড ব্যাংকে আপনার একটা অর্থ জমা থাকবে এ বন্ড গুলো। এছাড়াও সব লোকই জানে যে ঐখানে ফিতরানী,ইতরানী পদ্ধতিতে আসতে থাকে টাকা ঐ বন্ডের। বন্ড যখন রিটানডেবল হচ্ছে তখন একটা কোম্পানী ক্যাপিটাল ডেট বেড়ে যাচ্ছে। তারা সিএনজির জন্য ১০০ কোটি টাকা ধার নিয়ে ছিল এর জন্য তার ৫০ কোটি টাকার সঞ্চয় বেড়ে গেছে এভাবে তার ক্যাপিটাল ডেট বেড়ে যাচ্ছে। ধরেন আপনি এখানে কোন কোম্পানীতে পারমিশন দিবেন যে সে ইকুটি বাড়াবে। ইকুটি বাড়ানোর জন্য তার যে পদ্ধতি সে পদ্ধতিতে ইকুটিতে টাকা নেই, এখন সে যদি বন্ডের মাধ্যমে টাকা দেয় তাহলে তো তার পেমেন্ট ক্যাপাসিটিটা ভালো থাকছে এবং তার ডেবিডেট টা ভালো হচ্ছে। যাদের ফিকচার আছে তারা বন্ডে পেমেন্ট করতে পারছে।

২০১৭-১৮ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে সরাসরি বাজেটের মধ্যে এই বাজেট নেই। বন্ডের সাথে কিছু কাট-ছাট হয়েছে কিন্তু বন্ডের সাথে আমাদের পুজি বাজার সম্পুক্ত নেই। যেহেতু বন্ডের সাথে আমাদেও সম্পর্ক নেই সেহেতু বন্ডের ব্যাপারটা তো এখানে আসছেনা। তবে এখানে ইনডাইরেক্ট কিছু দেওয়া হয়েছে সেগুলো হচ্ছে ব্যাংকিং ব্যবস্থার উপর যে সমস্ত চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে যাদের ফান্ড বা বন্ডের টাকাটা ঐখান থেকে এই মাঠের দিকে আসে তার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। কারণ সরকার তো বলতে পারে না যে তুমি টাকা ঐখানে রেখ না এখানে রাখ। এটা একটা পলিসি করে দেওয়া হয়েছে যার মাধ্যমে আপনার ফান্ডটা ডাচ বাংলা থেকে ব্রাক ব্যাংকে আসতে পারে।

একটা দেশকে উন্নত করতে হলে বাজেট বা টাকার দরকার আছে সরকারের। টাকার জন্য সরকারের ভ্যাট বা ইনকাম ট্যাক্স নেওয়ার প্রয়োজন হয়। তবে ডাইরেক্ট ট্যাক্সটা খুব ভালো। ভ্যাট ছাড়া দেশ খুব কম আছে পৃথিবীতে। আমি এই টুকু বলতে পারি সরকার মাত্রাটা কমিয়ে যদি আওতা বাড়াতে পাড়ত তাহলে ভ্যাটের মাত্রা কমে যেত। যেমন মাত্রা ১৫% থেকে ৩% কমিয়ে ১২% করে বাকী ৩% আওতা থেকে তুলে নিতে পারতো। তাহলে সরকারের ইনকাম অনেক বেড়ে যেত। এটা আমাদের মানতে হবে যে আমাদের দেশ উন্নত করতে চাই, আমরা নাগরিক হিসাবে আরও সুযোগ সুাবধা চাই। সেক্ষেত্রে সরকারের হাতে টাকা থাকতে হবে এবং সেটা যে কোন ট্যাক্সের মাধ্যমে যেতে হবে অন্য কোন ব্যবস্থা সরকারের নেই। তবে ট্যাক্সটা সারা পৃাথবীতেই আছে তবে এটার মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে থাকতে হবে।

উন্নত দেশের সাথে বাংলাদেশের ভ্যাট ট্যাক্সে পার্থক্য
উন্নত দেশের নাগরিকরা ভ্যাট কম দিয়েও বেশি সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে কিস্তু আমাদের দেশের নাগকিকরা সেটা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সাধারণ মানুষ এটাকে ভালোভাবে নিবে না কারণ উচ্চ মাত্রায় ভ্যাট দিতে হচ্ছে। ভ্যাট দেওয়ার জন্য আওতা বাড়াতে হবে এবং ভ্যাটের পারসেনটেনস কমাতে হবে।১৫% কাছে ৩% কমে যাবে আওত বাড়ালে। আমাদের আওতা কম কিন্তু যারা ট্যাক্স দিচ্ছে তাদের উপর ভারট বেশি দেওয়া হচ্ছে। আবার সাধারণ মানুষের উপরেও যেন বাড়ানোর হারটা কম থাকে এটা খেয়াল রাখতে হবে। সরকার যে জনণনের কাছ থেকে ট্যাক্স নিচ্ছে সেটা কোন খাতে খরচ করছে, কিভাবে খরচ হলো সেটাও সরকারকে জবাবদিহিতার মধ্যে আসতে হবে।

আফগানি শুল্ক নিয়ে মতামত
আফগানি শুল্ক অনেক দেশেই আছে,অনেক ভাবেই আছে তবে এটা ভ্যাটের পরিপুরক একটা জিনিস। ভ্যাটের মতই একটা অংশ।যেগুলোর ব্যবহার ডিসকাস করা হয় -যেমন আপনাদের মদ,সিগারেট খারাপ বা ক্ষতিকর জিনিস। এগুলোর ব্যবহার ডসকাসের উপর দুইটা ভ্যাট দিতে হবে। তবে সাধারণত যে সব জায়গায় আফগানি শুল্ক আছে সেখানে ভ্যাট নেই। আফগানি শুল্ক ধীরে ধীরে উঠেই যাচ্ছে ভ্যাটটা যেভাবে আসছে আফগানি শুল্কটা সেভাবে আসছেনা। আফগানি শুল্কটা করম যাচ্ছে।

কি করলে পুঁজিবাজারে জনগনের আস্থা ফিরে অসিবে এবং ফাইভেট মার্কেট তৈরী হবে
পজিবাজারে মানুষের আস্থা ফিওে আনতে হলে আমাদের নীতিমালার কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। যেটা আমি আগেও অনেকবার বলেছি কিন্তু হয়নি। পুজি বাজারে আমাদেও যে সমস্যাটা হচ্ছে সেটা হলো আমরা যাদেরকে পুজি বাজারে আসার সুযোগ দিচ্ছি তারা যে জনগনের কাছ থেকে যে টাকাটা উঠিয়ে দিচ্ছে সে টাকাটা আমরা সরাসরি তাদেরকে দিচ্ছি। সেখানে আমরা যদি কোন ব্যাঘাত সুষ্টি করতাম বা টাকাটা যদি কোন ক্ষ্টারদের কাছে দেই তাহলে এবং তৃতীয় পার্টি দ্বারা জাষ্টিবাই করে দেওয়া হয় তাহলে সেই টাকা গুলো সঠিকভাবে সঠিকভাবে ব্যবহিত হচ্ছে। এটা যখন আমরা নিশ্চিত করতে পারবো, যারা পুজি বাজার থেকে টাকা উঠিয়ে চুুরি করতে চায় তারা আসবেনা।

যারা এখান থেকে টাকা গুলো নিয়ে মানুষকে দিবে তারা আসবে। ফলে আমাদের পুজি বাজারের মূল সমস্যা হচ্ছে মানুষ বার বার ইনবেস্ট করে হোচট খায় তার কারণ হচ্ছে এখানে বড় ধরণের একটা ইনোটন হচ্ছে, এটাকে বন্ধ করতে হবে। বন্ধ করতে হলে আমাদেও এই জায়গাটাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে তবে আমাদেও পুজি বাজারে সরাসরি আসতে পারবে যাদের কমপ্লানস হোম রয়েছে আর যাদেও নেই তাদের কমপ্লানস নাই তাদের মার্কেটের কয়েকটা ধাপ পার হয়ে আসতে হবে তারা কমপ্লানস ্এ এনাফিট হয়ে গেল এবং তারা পরীক্ষিত ভাইরাল। আমরা যদি সরাসরি আপনার হাতে টাকা উঠিয়ে দেই সে বলল যে আমি এই কাজ করব তাকে টাকা দিলাম কিন্তু সে করলো না। সবশেষে অমিরা বলতে পারি যে আইপিও মার্কেটের জন্য একজন কাষ্টুুডিয়ানের থাকা দরকার যার কাছে টাকাটা যাবে চেক এ্যান্ড ব্যালেন্স কওে সে ঐ কোম্পানীকে দেখার জন্য লোক থাকতে হবে যে টাকাটা ঠিকভাবে কাজে লাগছে কিনা। এজন্য আমরা বলতে পারি যে সিভিল কমিশনারকেও জনশক্তি আরও বাড়াতে হবে। তাহলে একটা ভাইরাল পুজি বাজার হতে পারে।