পুঁজিবাজার: পরিবর্তন আসছে পিএসআই সংজ্ঞায়

পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মূল্য সংবেদনশীল তথ্যের (পিএসআই) সংজ্ঞায় পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই সংক্রন্ত একটি খসড়া আইন বিএসইসির ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী ২৬ মে এর মধ্যে খসড়া আইনের উপর মতামত দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এর পরই আইনটি চুড়ান্ত করবে কমিশন।

জানা গেছে, মূল্য সংবেদনশীল তথ্য সংক্রান্ত আইনটি অনেক পুরনো। শেয়ারের দামে প্রভাব ফেলতে পারে এমন অনেক বিষয় বাদ পড়েছে পুরনো আইনে। ফলে আইনটিকে সময় উপযোগী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। নতুন আইনটি হলে অনেক বিষয়ে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের জানানোর বাধ্যবধকতা আরোপ করা হচ্ছে।

বিএসইসি সূ্ত্র মতে, খসড়া আইন অনুসারে মূল্য সংবেদনশীল তথ্যের (পিএসআই) সংজ্ঞাও পরিবর্তন করা হবে। নতুন আইনে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে সব ধরনের ঋণ কার্যক্রম পিএসআই হিসেবে প্রকাশ করতে হবে।এর মধ্যে থাকবে যে কোনো দেশি ও বিদেশি ঋণ, বিনিয়োগ চুক্তি, ঋণ বিতরণ,প্রাপ্য, সম্পদ বন্ধক, এলসি প্রাপকের কাছে কোনো ঋণ বা দায় পরিশোধে ব্যর্থতার তথ্য। এছাড়া ঋণ পরিশোধ বা অগ্রিম ঋণ পরিশোধ, আন্তঃকোম্পানি বা সহযোগী, কোম্পানির পরিচালকের কাছে পাওয়া ঋণের তথ্যও পিএসআই হিসেবে প্রকাশ করতে হবে। বর্তমান আইনে কোম্পানিগুলোকে ঋণ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করতে হয় না।

অন্যদিকে,খসড়া বিধিমালায় একটি কোম্পানির উৎপাদন তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘প্রিন্সিপলস অব ডিসক্লোজার অব মেটেরিয়াল ইনফরমেশন’। এগুলো হলো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসার বিষয়ে বিস্কারিত তথ্য। এছাড়াওর বেসিক অ্যাকাউন্টে পরিবর্তন, মূলধন বাড়ানোর, কোম্পানিগুলোর অ্যাকাউন্টিং নীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এবং বিধান রাখার সাথে সম্পর্কিত যে কোনও তথ্য।

এদিকে,যদি কোন কোম্পানি যৌথভাবে বা পৃথকভাবে তার বিদ্যমান সম্পদের ৫ শতাংশের বেশি মূল্যের সম্পদ অর্জন করে থাকে। অন্য কোম্পানি গ্রহণের প্রস্তাব, কোম্পানির মালিকানায় পরিবর্তন এবং মূলধন পুনর্গঠন এবং স্থায়ী সম্পদ ক্রয়-বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত পিএসআই হিসেবে প্রকাশ করতে হবে।

কোনো সিকিউরিটিজ (বন্ড বা সুকুক) ইক্যুইটি শেয়ারে রূপান্তর এবং লেটার অফ ক্রেডিট (এলসি) শেয়ারে রূপান্তর এবং যে কোনো ধরনের শেয়ার একত্রীকরণের তথ্যও পিএসআই হিসাবে প্রকাশ করতে হবে।

মৌলিক বিএমআরই ছাড়াও, কোম্পানিকে অবশ্যই মূলধন বিনিয়োগের পরিকল্পনা বা কোম্পানির উদ্দেশ্যের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন, প্রযুক্তিতে বড় পরিবর্তন বা উন্নয়ন, উৎপাদন ও ইনস্টলেশন, চুক্তিতে পরিবর্তন, উৎপাদন, পেটেন্ট বা পরিষেবা বা ব্যবসা এবং দীর্ঘ সময়ের আদায় প্রকাশ করতে হবে।

নতুন আইনে, প্রধান নির্বাহী, কোম্পানির সচিব, পরিচালনা পর্ষদের পরিবর্তন, নিরীক্ষক নিয়োগ এবং ক্রেডিট রেটিং কোম্পানি নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করতে হবে। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট পক্ষের লেনদেন, ব্যবস্থাপনা চুক্তি এবং পরিষেবা চুক্তিসহ যে কোন মৌখিক বা লিখিত চুক্তি পিএসআই হবে। কোম্পানির সম্পদ এবং ইভেন্টের ক্ষতি হয় এমন তথ্য প্রকাশ করতে হবে।

কোম্পানির পিএসআই জানতে পারে এমন ব্যক্তিদের শেয়ার লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য জানাতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে পিতা-মাতা, পত্নী, সন্তান, নির্ভরশীল ব্যক্তি বা বিনিয়োগ উপদেষ্টা, বা আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে এমন ব্যক্তির। এছাড়াও, তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিকে অবশ্যই তার ওয়েব সাইটে তিন বছরের পিএসআই সংরক্ষণ করতে হবে।