পুলিশের হামলার প্রতিবাদে জাবিতে ধর্মঘটের ঘোষণা

শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন বিস্ফোরণোন্মুখ পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে সরকারি চাকরির বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে তিন দিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।

হামলার প্রতিবাদে সোমবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা।

মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পরিবহণ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিন দিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক খান মুনতাসির আরমান বলেন, ‘যৌক্তিক দাবির আন্দোলনে পুলিশ ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা চালিয়েছে। এতে অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এই নগ্ন হামলায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচার করতে হবে।’

কোটা সংস্কারের দাবি ও আন্দোলনরতদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে সোমবার সকাল সাড়ে দশটার থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে দুইটা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টার পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়।

হামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম। তিনি বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থিত হয়ে বলেন, ‘আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটর জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ যতজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছি তাদের কাছে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছি।

তিনি আরও বলেন, তাদের বলেছি, এটা এভাবে সমাধান করা যায় না। আলোচনার মাধ্যমে এই সংকটের সমাধান হতে পারে। তার জন্য টিয়ারশেল, রাবার বুলেট, লাঠিপেটা করার কোনও প্রয়োজন ছিল না। আমরা কেন এরকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে পড়লাম! আমি এর জবাব চাই।’

এদিকে আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

পুলিশি হামলায় ক্ষোভ ও তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. নূরুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বশির আহমেদ স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের যৌক্তিকতা রয়েছে। বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।’

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ এবং হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীরা।

নাঈম/রাসেল