প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজন নিরপেক্ষ নির্বাচন

প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্রের জন্য নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, দেশে গণতন্ত্র একমাত্র মূলনীতি হিসাবেই আছে। তবে প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্রের জন্যই অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রয়োজন।

শুক্রবার ১৬ জুন জাতীয় প্রেসক্লাবের ‘কনফারেন্স লাউঞ্জে’ গণফোরামের উদ্যোগে প্রস্তাবিত বাজেট ও বর্তমান পরিস্থিতির উপর অায়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যা করার দরকার তা-তো জানা আছে জনগণের। সংঘবদ্ধ হতে হয়। ঐকবদ্ধ হতে হয়। মৌলিক ব্যাপারে সাড়ে সাত কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে অতীতে আমরা অসম্ভবকে সম্ভব করেছি। এখন যোল কোটি মানুষ যদি দাড়িয়ে বলে আমরা এদেশটার মালিক তা-হলে কি উপেক্ষা করতে পারবে কেউ? মৌলিক ব্যাপারে দেশের জনগণের মধ্যে কোন অনৈক নেই।প্রতিনিধিত্বশীল গনতন্ত্র হলেই দেশে যারা ভোটার তারা নির্বাচিত করবেন কারা নির্বাচিত হবেন, কারা তাদের কথা সংসদে বলবেন, সংসদ সদস্য হবেন। দেশে একশত লোকের একশ ভাগই বলবে অবাধ নিরপেক্ষ নিরপেক্ষ নির্বাচন দরকার। জনগণ বলবে আমরাই মালিক, কিন্তু আমাদের উপেক্ষা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এ জন্য এখনও অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে সবাই সোচ্চার। দেশে একটি নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। আমরা সবাই বলছি অবশ্যই এটার প্রয়োজন আছে। কিন্তু সেটি হতে হবে অবাধ নিরপেক্ষ। এটা আমাদের গর্বের বিষয় যে মৌলিক বিষয়ে বিরোধ নেই এখানে। ধর্মের নামে এখানে রাজনীতিকে প্রশয় দেয় না জনগণ। এসব বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম বলেই আমরা ৭১’ এ বিজয়ী হয়েছিলাম। ভুলে গেলে চলবে না সে সময় বলা হয়েছিল, আমরা বাঙালী না মুসলমান। কেউ যদি বলত জয় বাংলা সঙ্গে সঙ্গে গুলি করা হত। এটা থেকেতো আমরা বেরিয়ে এসেছি। এভাবে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করা অর্থহীন। আমরা অনেক আগেই বুঝেছি। আমাদের সর্তক থাকতে হবে কে বিভেদ সৃষ্টি করে? কি কারণে করছে? ভিন্ন মত থাকবে, দল থাকবে, বহুদল থাকবে, বহুমত থাকবে।

চলতি বাজেট সম্পর্কে তিনি বলেন, গত অর্থবছরের বাজেটে যেখানে বিচার বিভাগের খাতে বরাদ্দ ছিল ১৫৯১ কোটি টাকা, সেখানে চলতি অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ কমিয়ে ১৫৮৫ কোটি টাকা করা হয়েছে। একইভাবে শিক্ষাখাতেও গত অর্থবছরে চেয়ে এবার বরাদ্দ কমেছে। গত অর্থবছরে বাজেটে বরাদ্দ ছিল ৪৫ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা, এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে তা কমিয়ে রাখা হয়েছে ৪৫ হাজার ১৬৩ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ এই দুই খাতকে অবহেলিত করা হয়েছে। সরকারের লোকজনই বাজেট সম্পর্কে কথা বলেছে। জনমতের বাইরে না যেতে সরকারকে তাদের লোকজনই পরামর্শ দিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুসহ মফিজুল ইসলাম খান কামাল,জগলুল হায়দার আফ্রিক, আওম শফিক উল্লাহ, মোশতাক আহমদ, সাইদুর রহমান সাইদ, ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আজকের বাজার: আরআর/ ১৬ জুন ২০১৭