প্রথম পেসার হিসেবে ৬শ’ উইকেটের পর্বতে এন্ডারসন

ইতিহাসে প্রথম পেস বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ৬শ’ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন ইংল্যান্ডের জেমস এন্ডারসন। সাউদাম্পটনে গতকাল ড্র এর মাধ্যমে শেষ হওয়া পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্টের শেষ দিন বিশ্বের চতুর্থ বোলার হিসেবে টেস্টে ৬শ উইকেট শিকারের ক্লাবে প্রবেশ করেন এন্ডারসন। এ মাইলফলক স্পর্শ করতে তিনি খেলেছেন ১৫৬ টেস্ট। তিন ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতেছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড।

পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টের আগে এন্ডারসনের টেস্ট পরিসংখ্যান ছিলো-১৫৫ টেস্টে ৫৯৩ উইকেট। অর্থাৎ, ৬শ উইকেট শিকার থেকে ৭ উইকেট দূরে ছিলেন এন্ডারসন।

ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৫৬ রানে ৫ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৫ রানে ২ উইকেট নেন তিনি। ফলে ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে বিশ্বের প্রথম পেসার হিসেবে টেস্টে ৬শ উইকেট শিকারের ক্লাবে নাম লেখান এন্ডারসন।

টেস্টে সর্বোচ্চ শিকারের তালিকায়, এন্ডারসনের উপর যারা আছেন, সকলেই স্পিনার। শ্রীলংকার মুত্তিয়া মুরালিধরন ১৩৩ ম্যাচে ৮০০ উইকেট, অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়ার্ন ১৪৫ টেস্টে ৭০৮ উইকেট ও ভারতের অনিল কুম্বলে ১৩২ টেস্টে ৬১৯ উইকেট নেন। এই ৬শ উইকেট শিকারের ক্লাবে তিন স্পিনারের সাথে একমাত্র পেসার এখন ৩৮ বছর বয়সী এন্ডারসন। স্বাভাবিকভাবে ইংল্যান্ডের পক্ষেও টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী তিনিই।

ম্যাচের চতুর্থ দিন পাকিস্তানের ওপেনার আবিদ আলিকে লেগ বিফোর আউট করে মাইলফলকের আরো কাছে পৌঁছে যান সুইং মাস্টার এন্ডারসন। ৫৯৯ উইকেট শিকারে পৌঁছানোর পর এন্ডারসনের রেকর্ড স্পর্শ করার মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষা শুরু হয়।

কিন্তু শেষ দিনের শুরু থেকেই ছিলো বৃষ্টি। ফলে খেলা শুরু হতে দেরি হচ্ছিলো। তাতে এন্ডারসনের আক্ষেপও বড় হচ্ছিলো। অবশেষে ৫ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পর খেলা শুরু হলে, দিনের ৩৮তম ও ইনিংসে নিজের ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে পাকিস্তানের অধিনায়ক আজহার আলিকে শিকার করেন এন্ডারসন। প্রথম স্লিপে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জো রুটকে ক্যাচ দিয়ে এন্ডারসনের কীর্তির সাথে জড়িয়ে পড়েন আজহার।

অবশ্য এই কীর্তি স্পর্শ করতে শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো না এন্ডারসনকে। দুই ইনিংস মিলিয়ে এন্ডারসনের বলে ইংলিশ ফিল্ডাররা পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের চারটি ক্যাচ ফেলেছেন।

টেস্ট অভিষেকের ১৭ বছর পরও নতুন বলে ইংল্যান্ডের মূল ভরসার নাম এথনও এন্ডারসন। আজ তো টেস্ট ইতিহাসের প্রথম পেসার হিসেবে ৬শ উইকেটের মাইলফলকও ছুঁয়েই ফেললেন তিনি।

২০০২ সালে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করেন এন্ডারসন। ২০০৩ সালে টেস্ট দলের হয়ে পথ চলা শুরু হয় তার। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি এন্ডারসনকে। ক্রিকেট ইতিহাসে পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের মুকুট এখন তার মাথায়।

১৭ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে ইনিংসে ২৯বার পাঁচ বা ততোধিক উইকেট শিকার করেছেন এন্ডারসন। আর ৩বার ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন তিনি। দেশের মাটিতে ৮৯ টেস্টে ৩৮৪ উইকেট, বিদেশের মাটিতে ৬১ টেস্টে ১৯৪ উইকেট ও নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ৬ টেস্টে ২২ উইকেট নিয়েছেন এন্ডারসন।

টেস্টে ৬শ উইকেট শিকার করা বোলারদের পরিসংখ্যান:-

বোলার ম্যাচ ইনিংস বল রান উইকেট ইনিংসে ৫ উইকেট ম্যাচে ১০ উইকেট

মুত্তিয়া মুরালিধরন (শ্রীলংকা) ১৩৩ ২৩০ ৪৪০৩৯ ১৮১৮০ ৮০০ ৬৭ ২২

শেন ওয়ার্ন (অস্ট্রেলিয়া) ১৪৫ ২৭৩ ৪০৭০৫ ১৭৯৯৫ ৭০৮ ৩৭ ১০

অনিল কুম্বলে (ভারত) ১৩২ ২৩৬ ৪০৮৫০ ১৮৩৫৫ ৬১৯ ৩৫ ৮

জেমস এন্ডারসন (ইংল্যান্ড) ১৫৬ ২৯১ ৩৩৭৪৫ ১৬০৭৮ ৬০০ ২৯ ৩ খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান