প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার কমিশনারের শপথ গ্রহণ আজ

নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং অপর চার নির্বাচন কমিশনারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আজ রোববার।
সুপ্রিমকোর্টের মুখপাত্র ও বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বাসস’কে জানান, “২৭ ফেব্রুয়ারি রোববার বিকেল সাড়ে চারটায় বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট জাজেস লাউঞ্জে শপথ অনুষ্ঠান হবে।”
গতকাল ২৬ ফেব্রুারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল। এছাড়া নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর ও অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান।
রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ শনিবার সিইসি ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দিয়েছেন। তাদের নিয়োগের ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন সংক্রান্ত সার্চ কমিটি ১০ জনের নাম চূড়ান্ত করার কথা জানান গত ২২ ফেব্রুয়ারি। ২৪ ফেব্রুয়ারি সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে এই তালিকা হস্তান্তর করেন। সে তালিকা থেকে ৫ জনকে নিয়োগ দিলেন রাষ্ট্রপতি।
এর আগে ২২ ফেব্রুয়ারি ইসি গঠন সংক্রান্ত সার্চ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তার দায়িত্বে থাকা মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, সার্চ কমিটি ১০ জনের নাম ফাইনাল করেছে। সার্চ কমিটি বৃহস্পতিবার ২৪ ফেব্রুয়ারি এ নামগুলো রাষ্ট্রপতির কাছে হস্তান্তর।
সার্চ কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। সার্চ কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন এবং কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক। আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটির ১৫ কার্যদিবস ২৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কমিটি ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সম্পন্ন করেন। কমিটি নিজেদের মধ্যে  সাতটি বৈঠক করেছেন।
এর আগে ইসি গঠনে পরামর্শ নিতে গত ১২, ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি মোট তিন দিনে চার দফায় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মোট ৪৭ জন বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে বৈঠক করেন সার্চ কমিটি।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, পেশাজীবি সংগঠন, ব্যক্তি পর্যায় থেকে প্রস্তাবিত ৩২২ জনের নাম গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রকাশ করা হয়। তবে প্রস্তাবকারীর নাম প্রকাশ করা হয়নি। নামগুলো মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। সর্বশেষ ইসির মেয়াদ গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছে।
স্বাধীনতার পর এবারই আইন অনুযায়ী প্রথম ইসি গঠিত হলো। এ জন্য গত ২৭ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২ জাতীয় সংসদে পাস হয়।
এরপর আইনানুযায়ী ইসি গঠনে যোগ্য ব্যক্তি বাছাইয়ের জন্য ৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে সভাপতি করে ছয় সদস্যের অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিকে নাম সুপারিশের জন্য সময় দেয়া হয় ১৫ কার্যদিবস।
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন ও ব্যক্তিপর্যায় থেকে আসা প্রস্তাবের বাইরে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে এই কমিটি নিজেরাও যোগ্য ব্যক্তি বাছাই করার সূযোগ ছিল। সার্চ কমিটি প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, কমিটি প্রস্তাবিত নামগুলো থেকেই আইনে বর্ণিত বিধান অনুসরণ করে নাম চূড়ান্ত করেছে। সার্চ কমিটির নিজেদের নাম বাছাইয়ের সুযোগ থাকলেও সেটি তারা করেননি।
সব নামের মধ্য থেকে ১০ জনের নাম বাছাই করে রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেন সার্চ কমিটি। সেখান থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিলেন রাষ্ট্রপতি।
এর আগে  মন্ত্রী পরিষদ সচিব জানান সার্চ কমিটি বরাবর প্রস্তাবিত মোট নাম এসেছে ৩২৯ জনের। ইসি গঠনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল থেকে এসেছে ১৩৬ জনের নাম। পেশাজীবী সংগঠন দিয়েছে ৪০টি নাম। ইমেইলে এসেছে ৯৯ জনের নাম আর ব্যক্তিগত পর্যায়ে প্রস্তাব করেছেন ৩৪ জন। এ ছাড়া বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে ২০ জনের নাম পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছিলেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।