প্রবাসী কল্যাণে বোর্ড হচ্ছে : আইন অনুমোদন

প্রবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের কল্যাণে বোর্ড গঠন করবে সরকার। এজন্য ‘প্রবাসী কল্যাণ বোর্ড আইন, ২০১৭’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সচিবালয়ের সোমবার (২০ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অধিকার সুরক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিতের জন্য ১৯৯০ সালের জাতিসংঘের একটি কনভেনশন আছে। আমরা এটার স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে এ কনভেনশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে আমাদের একটি আইন করার বাধ্যবাধকতা ছিল। সেজন্য এ নতুন আইনটি প্রস্তাব করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এতদিন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বিধিমালা, ২০০২ দিয়ে কাজটি করে আসছি। সেটাকে একটু গুছিয়ে আইনের আকারে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে প্রবাসী কল্যাণ বোর্ড নামে একটি বোর্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। বোর্ডের অনেকগুলো কাজ রয়েছে।’

খসড়া আইনে বোর্ডের ২১টি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, ‘বিদেশাগামী কর্মীদের জন্য প্রাক-বহির্গমন ব্রিফিং সেন্টার স্থাপন, পরিচালনা ও ব্রিফিং প্রদান। বিদেশগামী কর্মীদের সহায়তা দেওয়া, তাদের নির্ভরশীলদের কল্যাণার্থে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী প্রকল্প গ্রহণ। প্রবাসীদের কল্যাণের জন্য কার্যক্রম পরিচালনা। প্রবাসীদের কেউ মারা গেলে মৃতদেহ আনা বা ক্ষেত্র অনুযায়ী সৎকারের ব্যবস্থা করা। এজন্য আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়া বোর্ডের কাজ। অসুস্থ, আহত বা শরীরিকভাবে অক্ষম প্রবাসীদের দেশে আনা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করাও বোর্ডের কাজ।’

প্রবাসী কল্যাণ বোর্ডে ১৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিচালনা পরিষদ থাকবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব চেয়ারম্যান ও প্রবাসী কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কল্যাণ বোর্ডের প্রধান হবেন মহাপরিচালক।’

তিনি আরও বলেন, ‘নারী অভিবাসী কর্মীদের কল্যাণে বোর্ডকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া আছে। বিদেশে কর্মরত কোন নারী অভিবাসী বিপদগ্রস্ত হলে উদ্ধার, আইনগত সহায়তা দেওয়া ও ক্ষতিপূরণ আদায়ে বোর্ড পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

বস্ত্রশিল্প প্রতিষ্ঠায় নিবন্ধনের বিধান রেখে বস্ত্র আইন

দেশে যে কোনো ধরনের বস্ত্রশিল্প প্রতিষ্ঠায় নিবন্ধনের বিধান রেখে ‘বস্ত্র আইন, ২০১৭’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বস্ত্র শিল্পগুলোকে ভালমতো দেখভালের জন্য এই আইনটি হচ্ছে। বস্ত্র শিল্পগুলোকে এই আইনের অধীন বিধির আলোকে নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধন নিতে হবে। যেসব বস্ত্র শিল্প চলছে সেগুলোকে নতুন করে নিবন্ধন নিতে হবে না।’

তিনি বলেন, ‘সরকারের বিরাষ্ট্রীয়করণ ও বিরাষ্ট্রীকরণ নীতির আওতায় হস্তান্তরিত বা বিক্রিত বস্ত্রমিল সম্পাদিত চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করলে সরকার ওগুলো আবার নিয়ে যেতে পারবে।’

খসড়া আইন অনুযায়ী রঙ, রাসায়নিকসহ আমদানিকৃত বস্ত্র উপকরণ বাজারজাত করার সময় ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমদানীকারকের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে মান যাচাই করতে পারবে।

শফিউল আলম বলেন, ‘নতুন এই আইনের মাধ্যমে বস্ত্রশিল্পের সুপারভাইজারি ও মনিটরিং প্রক্রিয়া জোরদার করা হবে।’