প্রমিত বাংলা শিক্ষার ওডিও পদ্ধতি “উচ্চারণ(বাংলা)” উদ্ভাবন

সাখাওয়াৎ লিটনঃ মাতৃভাষা বাংলাকে প্রমিথ উচ্চারণের মাধ্যমে সর্বস্তরে সুন্দর ও সাবলিলভাবে ছড়িয়ে দেবার লক্ষে মৌলভীবাজার জেলার টিলাবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পূর্ণা রায় উদ্ভাবন করেছেন সুন্দর এক পাঠ পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে সহজেই শিশুরা অডিওর মাধ্যমে ক্লাসে প্রমিথ শুদ্ধ উচ্চারণ শুনে বাংলার বিভিন্ন বিষয় আত্বস্ত করতে সক্ষম হবে।

কেবল ইংরেজী ছাড়া স্কুলের সকল পাঠ্য বিষয় বাংলা ভাষায় রচিত। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের ভাষা এক হলেও অঞ্চলভেদে উচ্চারণে ব্যাপক ভিন্নতা রয়েছে। পরিবার, শিক্ষক থেকে শুরু করে সবার মধ্যে আঞ্চলিকতার সমস্যা থেকে যায়। এ সমস্যার সমাধানে পূর্ণা রায় তার এই পদ্ধতির উদ্ভাবন করেন। যা চর্চার মাধ্যমে এলাকা ভিত্তিক ভাষার আঞ্চলিকতা পরিহার করতে সক্ষম হবে।

তিনি বলেন ‘শিক্ষক হিসেবে ২৪ বছরের অভিজ্ঞতায় দেখতে পান উচ্চারণগত ত্রুটির কারণে শুরুতেই শিশুদের বাংলা বানানে সমস্যা সৃষ্টি হয়। যেখানে শিশুরা নিরুপায়। তার মা-বাবা, পরিবার পরিজন, পারিপার্শিক সমাজে সবাই বাংলা ভাষার আঞ্চলিক সুর ও উচ্চারণে কথা বলে, স্বভাবগতভাবে একটা শিশুকে সেভাবেই কথা বলতে হয়। এক সময় সেটা ধারাবাহিকতায় পরিণত হয়।’

একজন শিক্ষার্থীকে ভাষার দক্ষতা অর্জনে শোনা, বলা, পড়া ও লেখার মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহন করতে হয়? যোগাযোগের সহজ মাধ্যমও কিন্ত ভাষা। সে যোগাযোগের শুরু হয় আঞ্চলিক ভাষার প্রয়োগের মাধ্যমে। তিনি বলেন ‘একই এলাকায় হলে সমস্যা থাকে না কিন্ত অঞ্চল ভিন্ন হলেই সমস্যা, যাকে আমরা বলি,”এক দেশের বুলি অন্যদেশের গালি”। প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীর তাবৎ বাংলা ভাষাভাষী’র সাথে সুষ্টু ও সুন্দর যোগাযোগ রক্ষার জন্য আমাদের “প্রমিত বাংলা” উচ্চারণে কথা বলা প্রয়োজন।

প্রমিত বাংলায় ভাষার চারটি দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর “বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ বাংলা” চালু রেখেছে। আমরা প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে অগ্রসর হলেও আঞ্চলিকতা বর্জন খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে। তাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (সিলেট)র সহায়তায়, আমি ঝইঞ (ঊহমষরংয) ভধপরষরঃধঃড়ৎ এর ১৫ বছরের এবং ঐঞঋ ড়ভ ঊহমষরংয রহ ধপঃরড়হ এর ৪ বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ঊওঅ’র অডিওর আলোকে আমার এই উদ্ভাবনঃ “উচ্চারণ(বাংলা)”’

শিক্ষকরা তাদের নিয়োমিত ক্লাস নেয়ার পাশাপাশি এ পদ্ধতিতে পাঠদান করতে পারবেন। যেখানে প্রতিটা পাঠে জন্য আলাদা করে অডিও থাকবে। শিক্ষক উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের কাছে অডিও বাজিয়ে শুনাবেন। এর ফলে ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও প্রমিত শুদ্ধ বাংলা চর্চাটা হয়ে যাবে।

আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে টিলাবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই পদ্ধতি চালু রয়েছে। এখানকার সঠিক প্রয়োগের উপর নির্ভর করবে সারা দেশে এর সফলতা ছড়িয়ে দেবার উদ্যোগ।

আজকের বাজার: সালি / ৩১ জানুয়ারি ২০১৮