ফাহিমের হ্যাটট্রিকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪-০ গোলের জয়।

সিরাজগঞ্জ ন্যাশনাল জুট মিলসের ওয়ার্কশপের শ্রমিক ওমর ফারুক। অভাবের সংসারে সারা দিন খাটাখাটুনি করে ফুটবলের আর খবর রাখার সময় নেই তাঁর। সুযোগ হলে হয়তো টেলিভিশন দেখা হয়, পত্রিকা পড়া হয়, কিন্তু কাজের ব্যস্ততাই বেশি। নেপালের ছেলের কীর্তির কথা জানলেন তিন দিন পর। জেনেই উচ্ছ্বাস তাঁর কণ্ঠে, ‘আমার ছেলে বিদেশের মাটিতে তিন গোল করেছে! কী বলেন! যদি করে থাকে, তাহলে সেটা আল্লাহর দান। সবার দোয়াতে সে এমনটা করতে পেরেছে।’

নেপালের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগে বিমানবন্দর থেকে ফোন করে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেছিল ফাহিম। ভালো খেলার জন্য দোয়াও চেয়েছিল। এরপর কাঠমান্ডুতে প্রথম ম্যাচেই হ্যাটট্রিক পেলেন। কিন্তু নেপাল থেকে ফোন দিয়ে সেই কীর্তির কথা আর জানানোর সুযোগ হয়নি বাবা-মাকে।

দুই ভাই, এক বোন আর বাবা-মাকে নিয়ে ফাহিমদের পাঁচ সদস্যের পরিবার। ছেলে ফুটবল খেলছে। দেশের জার্সি পরেছে, অথচ এই ছেলের মুখে কখনোই ভালো খাবার তুলে দিতে পারেননি তিনি। এ নিয়ে তাঁর প্রচণ্ড আফসোস, ‘ফুটবল খেলতে কত শক্তি লাগে! কিন্তু আমি ফাহিমকে ভালো-মন্দ খাবার দিতে পারিনি। আমার ছেলেটা কখনোই এ নিয়ে অভিযোগ করেনি। যা পেয়েছে, সেটাই মুখ বুজে খেয়েছে। আমার ছেলে জানে-বোঝে তার বাবার সামর্থ্য। আমি সব সময় দোয়া করি আমার ছেলেকে। সবার দোয়া চাই। সে যেন ফুটবল খেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে।’

ছেলের গড়ে ওঠার ব্যাপারে মায়ের ভূমিকার কথা বারবারই বলছিলেন ওমর ফারুক, ‘ফাহিমের মা ওর দেখভাল করে। আমি আর কতক্ষণ বাড়িতে থাকি। ফাহিম যদি বলার মতো কিছু করেও থাকে, সেটার পেছনে বড় অবদান ওর মায়ের।’

আজকের বাজার: সালি / ২১ আগস্ট ২০১৭