ফ্লাইট পরিচালনার বাধা সৃষ্টির জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

মন্ত্রিসভা আজ ফ্লাইট পরিচালনায় কোন প্রকার উচ্ছাকৃত বাধা সৃষ্টির দায়ে মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অনধিক পাঁচ কোটি টাকা জরিমানার বিধান রেখে বেসামরিক বিমান পরিবহন আইন-২০১৭’সহ তিনটি আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ বাংলাদেশ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভায় সাপ্তাহিক বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম শফিউল আলম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থার (আইসিএও) দিক নির্দেশনা অনুযায়ী ‘বেসামরিক বিমান পরিবহন অধ্যাদেশ ১৯৬০-এর হালনাগাদ করা হয়েছে। তিনি বলেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন সংশ্লিষ্ট আইন লংঘনের অপরাধের শাস্তি আরো কঠোর করার প্রস্তাব করা হয়েছে নতুন আইনে।

সচিব বলেন, অপর যে দু’টো আইন আজ মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেছে সেগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন-২০১৭-এর খসড়া এবং বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি কমিশন আইন ২০১৭-এর খসড়া। সিভিল এভিয়েশন এ্যাক্ট -২০১৭এর খসড়ায় এয়ার নেভিগেশন অডার্র (এএনও) লংঘনের দায়ে পাঁচ বছরের কারাদন্ড এবং কমপক্ষে এক কোটি টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত করার বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে। এমনকি সার্টিফিকেট অথবা লাইসেন্স জাল হলেও একই শাস্তির বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিমান চলাচলে ফ্লাইট পরিচালনায় লাইটিং অথবা সিগন্যাল ব্যবস্থায় কোন বাধাগ্রস্ত অথবা ক্ষতি করার মতো যে কোন ধরনের হস্তক্ষেপের অভিযোগে আইনে যাবজ্জীবন কারাদন্ড অথবা পাঁচ কোটি টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। খসড়া আইনে বিমানের ফ্লাইটে কোন প্রকার বিপজ্জনক কিছু ব্যবহারের দায়ে সবোর্চ্চ ৭ বছর কারাদন্ড অথবা ৫০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান করা হয়েছে। বাংলাদেশের আকাশ সীমা লংঘনের দায়ে সবোর্চ্চ ৭ বছর এবং সর্বনি¤œ ৩ বছর কারাদন্ড অথবা সবোর্চ্চ ৫০ লাখ টাকা জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে।

চাল গবেষনা ইনিস্টিটিউট আইন-১৯৭৩ এর বাংলা ও মোডিফাইড ভার্সন বাংলাদেশ চাল গবেষনা ইনিস্টিটিউট-২০১৭এর খসড়ায় স্থানীয় ও বিদেশী সহায়তায় উচ্চ ফলনশীল বীজ উৎপাদনের জন্য ১৬টি এলাকায় ইনিস্টিটিউটের কর্মকান্ড নতুন করে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। আইনে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে পর্যাপ্ত ল্যাবরেটরিজ স্থাপন, নতুন আবিষ্কৃত বীজ সম্পর্কে কৃষকদের সচেতন করার জন্য প্রকল্প গ্রহণ, স্থানীয় ও বিদেশী গবেষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও স্নাতকোত্তর প্রশিক্ষণ সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

নতুন আইনে চেয়ারম্যান হিসাবে ইনিস্টিটিউটের মহাপরিচালক নেতৃত্বাধীন বোর্ড ইনিস্টিটিউট পরিচালনা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বোর্ড গঠিত হবে অর্থ ও কৃষি মন্ত্রণালয় এবং কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এর প্রতিনিধিদের মাধ্যমে। বাংলাদেশ পারমানবিক শক্তি কমিশন অধ্যাদেশ-১৯১৭ বাংলায় এর উন্নত সংস্করন বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি কমিশন আইন, ২০১৭ আইনের খসড়ায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জ্ঞ্যান সম্পন্ন একজন চেয়ারম্যানসহ সর্বোচ্চ চার সদস্যের একটি কমিশন গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

কমিশন খাদ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য, পরিবেশ এবং শিল্পে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করবে। কমিশন ইলেক্ট্রোনিক মেশিনারিজ, টেকনোলজিস উন্নয়ন এবং কার্যকর ব্যবহার, শিক্ষামূলক কর্মসূচি পরিচালনা এবং সেবা, পরমাণু প্রকল্পের বাস্তবাযন এবং গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালনা করবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৭ এর খসড়ায় খুলনা নগরীর পরিকল্পিত একটি স্ট্যাচুয়ারি বডি প্রতিষ্ঠারও প্রস্তাব করা হয়েছে। বস্ত্র খাতের ভিশন ও মিশন নিয়ে বস্ত্রনীতি হাল নাগাদ করা হয়েছে।

সুত্র: বাসস