বরিশাল ও বগুড়ায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি

এক রোগীর স্বজনকে মারধর করার কারণে চার ইন্টার্নীর শাস্তির পর বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল ও বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত রয়েছে।

অভিযুক্তদের শাস্তি বাতিলসহ ৭ দফা দাবিতে গত ২ মার্চ থেকে কর্মবিরতি পালন করে আসছে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। কর্মবিরতির কারণে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বড় ধরনের বিপাকে পড়েছেন।

রবিবার (৫ মার্চ) সকাল ১১টা থেকে দুপুরে ১২টা পর্যন্ত ১ ঘন্টা হাসপাতালের মূল ফটকে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ করেছে।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চারজনের শাস্তি ঘোষণা করা হয়। এরপর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হাসপাতাল ছেড়ে দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন। পরে শুক্রবার (৩ মার্চ) বিকেলে এক জরুরি সভায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাজে যোগ দিতে বলা হলেও কোনো জবাব দেয়নি তারা। ৩ দিন হয়ে গেলেও কাজে ফেরেনি শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা।

বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশে বক্তারা বলেন, অবিলম্বে শাস্তি প্রত্যাহার করতে হবে। দাবি মানা না হলে ধর্মঘট চলবেই। ইন্টার্ন চিকিৎসকরাই হাসপাতালের প্রাণ উল্লেখ করে তারা বলেন, আমাদের বাদ দিয়ে কিছু করা যাবে না।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মাসুদ আহসান দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমরা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা কাজে যোগ দেয়নি। তবে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে গেলেও সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে শনিবার (৪ মার্চ) সকাল ৯টায় হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান এবং রেজিস্টারদের নিয়ে পরিচালনা কমিটির সভা হয়। সভায় চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে আট সদস্য বিশিষ্ট পৃথক দুটি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সিরাজগঞ্জ সদর থেকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আলাউদ্দিন সরকার নামে এক রোগীর ছেলে রউফ সরকার গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধরের শিকার হন। এ ঘটনা তদন্তের পর চার শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের ইন্টার্নশিপ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সাজার মেয়াদ শেষে তাদের চারটি ভিন্ন মেডিকেলে ইন্টার্নশিপ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আল মামুনকে খুলনা মেডিকেল, নূরজাহান বিনতে ইসলাম নাজকে দিনাজপুর মেডিকেল, মো. আশিকুজ্জামান আসিফকে ফরিদপুর মেডিকেল এবং কুতুবউদ্দিনকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ শেষ করতে হবে। ভবিষ্যতে এই ধরণের কাজ করলে তাদের পেশাগত সনদ বাতিল করা হবে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ধর্মঘট পালন করে আসছে শিক্ষানবিস চিকিৎসকরা।

সুত্র: দ্য রিপোর্ট