বাংলাদেশ – অস্ট্রেলিয়া সিরিজ ! দু’দলই যেখানে সমান

মুখোমুখি লড়াইয়ের পুরোনো হিসাব এবার কোনো কাজে যে দেবে না স্টিভেন স্মিথরা এটা ভালোই জানেন। অস্ট্রেলিয়াকে খেলতে হবে বাংলাদেশের মাটিতে। আর নিজেদের কন্ডিশনে ক্রিকেটের যেকোনো সংস্করণে বাংলাদেশ কতটা শক্তিশালী, গত তিন বছরে সেটা ভালোভাবেই দেখা গেছে।

অন্যদিকে গত ১০ বছরে অস্ট্রেলিয়া এশিয়ায় যে ২২ টেস্ট খেলেছে, তাতে জিতেছে মাত্র দুটিতে। ড্র ৫টি, হার ১৫টিতে। গত পাঁচ বছরে এশিয়ায় অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান স্টিভেন স্মিথ, ১১ ম্যাচে ৫১.৪৭ গড়ে করেছেন ১০৮১ রান। এর মধ্যে ৪৯৯ রান এসেছে গত মার্চে ভারত সফরে। এই সময়ে এশিয়ার বাইরের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তাঁর চেয়ে বেশি রান শুধু অ্যালিস্টার কুকের (১৪৭০)। আর সবচেয়ে বেশি উইকেট নাথান লায়নের, ৫৩টি। দুজনই যে এবার বাংলাদেশের বড় পরীক্ষা নেবেন, না বললেও চলছে।

২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের আগস্ট—এশিয়ায় টানা তিনটি হোয়াইট ওয়াসের শিকার হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথমটি ভারতের বিপক্ষে (২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে), দ্বিতীয়টি করেছে পাকিস্তান (২০১৪ সালের অক্টোবরে)। গত বছর এই সময়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।

উপমহাদেশের তিনটি দলের কাছে হোয়াইট ওয়াসের অভিজ্ঞতা থেকে এ বছরের শুরুতে ভারত সফরের আগে দুবাইয়ে প্রস্তুতি ক্যাম্প করেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেটির উপকারিতাও তারা পেয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে পুনের স্পিন-সহায়ক উইকেটে চার ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে ভারতকে হারিয়েছে ৩৩৩ রানে। বেঙ্গালুরুতে পরের টেস্টে দুর্দান্ত লড়াই জমিয়ে শেষ পর্যন্ত স্মিথরা হারেন ৭৫ রানে। রাঁচিতে তৃতীয় টেস্টে তাঁরা পান জয় সমতুল্য এক ড্র। সিরিজের মীমাংসা হয়েছে ধর্মশালায় শেষ টেস্টে গিয়ে। প্রথম ইনিংসে সমান লড়াই করে দ্বিতীয় ইনিংসে মুখ থুবড়ে না পড়লে ভারতের বিপক্ষে সিরিজটা জিততেও পারতেন স্মিথরা!

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সাফল্যের পর বাংলাদেশ যে এবারও স্পিন-সহায়ক উইকেট তৈরি করতে যাচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার সেটি অজানা নয়। মিচেল স্টার্কের জায়গায় লেগ স্পিনার মিচেল সোয়েপসনকে নেওয়া সেই কারণে, পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাচক ট্রেভর হন্স।

বাংলাদেশের কন্ডিশনের সঙ্গে যাতে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারেন, সে জন্য ১০ আগস্ট থেকে ডারউইনে সপ্তাহখানেকের অনুশীলন ক্যাম্প করবেন স্মিথ-ওয়ার্নাররা। অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে কাছের। অস্ট্রেলিয়ার এক টুকরো ‘এশিয়া’ যেন ডারউইন।

পরিসংখ্যানের সাপ-লুডোর খেলায় কখনো বাংলাদেশ, কখনো অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে থাকলেও একটি জায়গায় দুটি দল ভারসাম্যপূর্ণ। দুই দলের বর্তমান খেলোয়াড়দের কেউ একে অপরের বিপক্ষে সাদা পোশাকে কখনো খেলেননি। শূন্য থেকেই তাই শুরু করতে হবে মুশফিক-স্মিথদের! এখন দেখার বিষয় মাঠে কে কাকে দৌড়ায়।

আজকের বাজার: সালি/ ৮ আগস্ট ২০১৭