বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডের মধ্যে বদ্বীপ বন্ধন গড়তে গুরুত্বারোপ

নেদারল্যান্ডের রাজধানী দি হেগে স্থানীয় সময় গত সোমবার ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

দি হেগের লিটারায়ার সোসিটিয়েট ডি ভিট-এর এশিয়ান টেবিল আয়োজিত এবং বাংলাদেশ দূতাবাস, দি হেগ-এর সহযোগিতায় এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

লিটারায়ার সোসিটিয়েট ডি ভিট দি হেগের একটি অভিজাত প্রতিষ্ঠান, যেটি এর সদস্যদের জন্য নির্দিষ্ট এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে।

লিটারায়ার সোসিটিয়েট আয়োজিত এই সেমিনারে বাংলাদেশ এবং নেদারল্যান্ডের মধ্যেকার বদ্বীপ বন্ধন গড়ার বিষয়টিতে জোরদার দেয়া হয়।

এসময় বক্তব্যে নেদারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ বাস্তবায়নে নেদারল্যান্ডের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করে বলেন, নেদারল্যান্ডের বেশিরভাগ এলাকা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে নিচে হওয়া সত্ত্বেও বন্যা প্রতিরোধে নেদারল্যান্ড সাফল্য অর্জন করেছে। তিনি ডাচদের উদ্ভাবনী ও সৃজনশীলতার প্রশংসা করে বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে দেশটির সহযোগিতার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

রাষ্ট্রদূত বেলাল আশা প্রকাশ করেন যে, ডেল্টা ব্যবস্থাপনায় নেদারলান্ডের ব্যাপক জ্ঞান এবং প্রযুক্তি, এক্ষেত্রে জড়িত ব্যবসায়িক ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সংযোগ এবং বাংলাদেশের সাথে দেশটির চমৎকার সম্পর্কের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নে নেদারল্যান্ড এগিয়ে আসবে।

তিনি ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেদারল্যান্ডে ঐতিহাসিক সফর এবং ২০১৫ সালের জুন মাসে দু’জন ডাচ মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের প্রতি আলোকপাত করে বাংলাদেশের জনগণের জন্য নিরাপদ এবং উন্নয়নমুখী ডেল্টা গড়ে তোলার নিমিত্তে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ বাস্তবায়নে এ দুটি বদ্বীপ দেশের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।

সেমিনারে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ অর্জনে এবং বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০, যা ইতোমধ্যে প্রান্তিক পর্যায়ে যথেষ্ট মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছ, তা বাস্তবায়নে নেদারল্যান্ডের অধিকতর সহযোগিতা কামনা করেন রাষ্ট্রদূত।

‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’ প্রণয়নের নিমিত্তে গঠিত কনসোর্টিয়ামের টিম লিডার এবং পরিচালক প্রফেসর ডক্টর ইয়াপ দে হীর সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

তিনি বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০-এর সূচনা এবং এর প্রধান বিষয়সমূহ ব্যাখ্যাসহ বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন। বাংলাদেশের টেকসই বদ্বীপ গঠনের লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদী এই পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য প্রফেসর ইয়াপ দে হীর বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন এবং এর বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান ও যথাযথ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

বাংলাদেশে অনেক আন্তঃদেশীয় নদ-নদী থাকার কারণে বদ্বীপ ব্যবস্থাপনা যেহেতু বহুলাংশে হিমালয় বেসিন অধ্যুষিত দেশগুলির সহযোগিতার উপর নির্ভরশীল, সেহেতু এর বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের সহযোগিতার উপরও গুরুত্ব দেন প্রফেসর ইয়াপ দে হীর।

রাষ্ট্রদূত বেলাল এবং প্রফেসর ইয়াপ দে হীর সেমিনারে অংশগ্রহণকারী এশিয়ান টেবিলের সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

এশিয়ান টেবিলের সচিব রোনাল্ড স্টলেকের সেমিনারটি পরিচালনা করেন।

অতিথিদের মধ্যে প্রাক্তন রাষ্ট্রদূতগণ, পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনীতিবিদ এবং এশিয়া বিশেষ করে বাংলাদেশ বিষয়ে সম্যক অবহিত বিভিন্ন পর্যায়ের পরামর্শকগণ উপস্থিত ছিলেন। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ