বাংলায় প্রতিবেদন নেই পরিসংখ্যান ব্যুরোতে!

সারাবিশ্বে যখন বাংলা ভাষার আত্মত্যাগকে স্মরণ করে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। সে-সময়ে বাংলায় প্রতিবেদন প্রকাশের উদ্যোগ নেই বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোতে (বিবিএস)। দেশের একমাত্র তথ্য সংগ্রহ ও সরবরাহকারী এ প্রতিষ্ঠানটিতে যেন বাংলাকে গুরুত্বই দেওয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন বিষয়ে বছরে অর্ধশতাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলেও সবগুলোই ইংরেজিতে প্রকাশ করা হচ্ছে। ফলে সেগুলো সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারছে না। অন্যদিকে তথ্য সবার মাঝে পৌছানো জরুরি হলেও দেশের সাধারণ মানুষ এ থেকে কিছুই জানতে পারছেন না।

এ প্রসঙ্গে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব কেএম মোজ্জামেল হক দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে এগুলো ইংরেজিতে প্রকাশ করা হয়। এতদিন বাংলায় প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়টি উপেক্ষিত থাকলেও এখন নতুন করে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ কিছু প্রতিবেদন আমরা বাংলায় প্রকাশ করবো। ধীরে ধীরে যাতে সব প্রতিবেদনই ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায়ও প্রকাশ করা হয় সে বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।

পরিসংখ্যান ব্যুরো সূত্র জানায়, প্রতিবছর নিয়মিত পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে স্টাটিসটিকস পকেট বুক ও স্টাটিসটিকস ইয়ার বুক, এগ্রিকালচার স্টাটিসকিস ইয়ার বুক, মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) সংক্রান্ত ব্লু-বুক এবং জন্ম-মৃতু-গড় আয়ুসহ বিভিন্ন তথ্য সংক্রান্ত এমএসভিএসবি প্রকল্পের প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ হয়ে থাকে। এছাড়া দ্বিবার্ষিক ও ত্রিবার্ষিক ভিত্তিতে হাউজ হোল্ড ইনকাম এন্ড স্পেনডিচার সার্ভে, চাউল্ড এন্ড মাদার নিউট্রিশন সার্ভে ও হেলথ এন্ড মরবিলিটি সার্ভেসহ বিভিন্ন সার্ভের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ সব প্রতিবেদনই প্রকাশ করা হয় ইংরেজিতে। এছাড়া আদমশুমারির মতো শুমারি হলে সেখান থেকে মূল প্রতিবেদনের বাইরেও প্রায় ১২৮টি জেলা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। অর্থনৈতিক শুমারির ক্ষেত্রে প্রায় ৭০টির মতো প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সবগুলোই ইংরেজিতে করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে অর্থনৈতিক শুমারি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক দিলদার হোসেন বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরির সময় বিষয়টি ওইভাবে ভাবা হয়নি বলে তখন বাংলায় প্রতিবেদন তৈরির বিষয়টি যুক্ত ছিল না। তাই সবগুলো ইংরেজিতে করা হয়েছে। তবে আগামীতে হয়ত নতুন করে বিষয়টি ভাবা হবে।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রকল্প পরিচালক জানান, অনেক সময় অর্থ সংকটের কারণেই বাংলায় প্রতিবেদন তৈরি করা সম্ভব হয় না। কেননা যে বাজেট থাকে এতে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায় প্রতিবেদন ছাপা যায় না। তবে যদি বরাদ্দ বাড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে বাংলার প্রতিবেদন করতে কোন সমস্যা নেই।

এমএসভিএসবি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক একেএম আশরাফুল হক দ্য রিপোর্টতে বলেন, এখন কিছু কিছু প্রতিবেদন বাংলায় করা শুরু হয়েছে।

সুত্র: দ্য রিপোর্ট