বাজারে পেঁয়াজের কোনো সংকট হবে না

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাজারে পেঁয়াজের কোন সংকট নেই। দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুদ আছে। তাই, ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করার প্রেক্ষিতে আতংকিত হয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পেঁয়াজ না কেনার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বুধবার সচিবালয়ে পেঁয়াজের মজুত, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে বর্তমানে প্রায় ৬ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুত আছে। বেসরকারি আমদানিকারকদের পাশাপাশি ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে বিপুল পরিমান পেঁয়াজ বিকল্প উৎস থেকে আমদানি করা হচ্ছে। তাই, পেঁয়াজ নিয়ে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই।’

তিনি জানান, ভারত থেকে এলসি হওয়া বা ক্রয়কৃত পেঁয়াজ সীমান্ত পার হবার অপেক্ষায় আছে। এছাড়া তুরষ্ক ও মিসর থেকে ইতোমধ্যে পেঁয়াজ আমদানি সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তাই, বাজারে পেঁয়াজের কোন ধরনের সংকট তৈরি হবে না।

টিপু মুনশি বলেন, বিকল্প আমদানি উৎস তুরস্ক ও মিসর থেকে পেঁয়াজ আসতে কিছুদিন সময় লাগবে। তাই, আগামী এক মাস যদি আমরা পেঁয়াজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছুটা সাশ্রয়ী হই, তাহলে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে।

তিনি আরও বলেন, পেঁয়াজের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে টিসিবির পাশাপাশি এবার ই-কমার্সের মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও জেলা প্রশাসনের বাজার মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। কেবলমাত্র জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর গতকাল ১০৭টি অভিযান পরিচালনা করে বলে তিনি জানান।

এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, গতবারের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা এবার আগেভাগেই পেঁয়াজের মজুদ গড়ে তোলার প্রস্তুতি গ্রহণ করি। গত ১৫ দিন আগে থেকেই আমরা ভারতের পেঁয়াজের বাজার গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। সেখানে মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে আমরা পেঁয়াজ আমদানির বিকল্প উৎস তুরস্ক ও মিসর থেকে আমদানির উদ্যোগ নেই। তাই, এবার পেঁয়াজ নিয়ে কোন ধরনের সংকট তৈরি হবে না বলে তিনি জানান।

তিনি আরও জানান, পেঁয়াজের আন্তর্জাতিক বাজারের প্রতি নজর রাখার কারণে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে। টিসিবি খোলাবাজারে ৩০ টাকা মূল্যে সারাদেশে পেঁয়াজ বিক্রি করবে, যা আগামী মার্চ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

টিপু মুনশি বলেন, পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে ভারত সরকারের সাথে কুটনীতিকভাবে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ভারত থেকে ২১ টাকায় পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে, অন্যদিকে তুরস্ক ও মিসর থেকে আমদানি খরচ পড়ে ৪৩ টাকা। এ কারণে, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির প্রতি আমদানিকারকরা বেশি আগ্রহী।

গত বছরের তুলনায় দেশে এবছর প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ বেশি উৎপাদন হয়েছে বলে তিনি জানান। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রনালয় সোমবার থেকে বিদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা করে।

সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান