বুলবুল ও গউসের বরখাস্তের আদেশ স্থগিত

দ্বিতীয়বারের মতো সাময়িক বরখাস্ত হওয়া রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গউসের বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। তাদের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

একইসঙ্গে তাদের বরখাস্তে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন আদালত। আগামী ৩ দিনের মধ্যে স্থানীয় সরকার সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে মেয়র বুলবুলের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আমিনুল হক হেলাল। আর জি কে গউসের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

আদালতের আদেশের পর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন উপস্থিত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গউসের বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। রুলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে।’

প্রথমবার সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার প্রায় দুই বছর পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২ এপ্রিল বুলবুল মেয়রের দায়িত্ব নিতে নগর ভবনে যান। মেয়রের চেয়ারে বসতে না বসতেই তিনি ফের সাময়িকভাবে বরখাস্ত হন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়, একটি মামলায় বুলবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ায় তাঁকেও সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

অপরদিকে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় ২০১৪ সালে দেওয়া সর্বশেষ সম্পূরক অভিযোগপত্রে মেয়র জি কে গউছকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। একই বছর ২৮ ডিসেম্বর তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর কারাগারে থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন।

কারাবন্দি অবস্থায় তৃতীয়বারের মতো হবিগঞ্জ নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৬ সালের ২০ মার্চ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এক আদেশে মেয়র জি কে গউছকে সাময়িক বরখাস্ত করে। তাই নির্বাচিত হয়ে ১৫ মাসেও দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেননি।

সবশেষ চলতি বছর ৪ জানুয়ারি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান জি কে গউছ। পরে ২৩ জানুয়ারি জি কে গৌছকে বহিস্কারের আদেশটি স্থগিত করে মেয়র পদ ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ প্রদান করেন হাইকোর্ট। আপিল বিভাগও বরখাস্তের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ বহাল রাখেন।

এরপর গত ২৩ মার্চ মেয়র হিসেবে হবিগঞ্জ পৌরসভার দায়িত্ব নেন। তবে দায়িত্ব গ্রহণের ১১ দিনের মাথায় গত ২ এপ্রিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে ফের বর‌খাস্ত করে। সুনামগঞ্জে সাবেক এমপি প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় বোমা হামলা মামলায়ও তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ায় এই বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয়।