বেসরকারি কৃষি গবেষণায় সরকারি প্রনোদনা দরকার

ড. এফ এইচ আনসারী : আমরা যখন কৃষির কথা বলি তখন আমরা অতীতের কৃষির কথা বাদ দিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। তার কারণটা হলো এই যে কৃষি কাজ করি এটা একটা প্রফেশন এবং সেখানে যা-ই করুক না কেন কৃষক যদি কৃষি কাজ করে সেখানে লাভ করতে হবে। তারা যদি কৃষিটাকে ট্রেডিং হিসেবে নেয় তবে সেখানেও তাদেরকে প্রফিট করতে হবে। এখানে যদি ভেল্যু এড করতে চায় সেখানেও তাদের প্রফিট করতে হবে। কেউ যদি এই প্রফেশনটাকে প্রমোট করতে যায় তারও কিন্তু ভেল্যু এডের একটা একটিভিটিস থাকেবে। তাহলে সবকিছুর মূলে কিন্তু প্রোডাকটিভিটি। প্রোডাকটিভিটিটা একমাত্র আসবে যদি আমরা টেকনোলজিটা আর্ন করতে পারি। টেকনোলজিটা কিন্তু সাদাসিধাভাবে আসবে না। টেকনোলজিটা কিন্তু গবেষণা করে আনতে হবে। আমরা অনেক ক্ষেত্রে যেটা করি বিদেশ থেকে গবেষণার ফলাফল আমরা এ দেশে আনি। এটাকে এ দেশে এডাপ্ট করানোর চেষ্টা করি এবং এটাকে এখানে মেচিং করানোর চেষ্টা করি। এটা তো বিদেশি একটা ব্যবস্থা।

আমাদের দেশেও কিন্তু অনেক ব্রিলিয়ান্ট বিজ্ঞানীরা আছেন। অনেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আছে। অনেক ইউনিভারসিটি আছে। এ দেশেও কিন্তু গবেষণা হচ্ছে। এই গবেষণাকে আরও এক্সপার্টাইজ করলে আরও ভালো কিছু করা সম্ভব। তাহলে আমরা কিভাবে এটা করতে পারি। এটা হচ্ছে এই আমরা যদি মনে করি, একটা কথা আছে আমাদের দেশে তরমুজের গুড় আবিষ্কার এটা কিন্তু কিছু হবে না সেখান থেকে। কারণ আমরা জানি তরমুজ মিষ্টি। তরমুজের রস জাল দিলে কিন্তু গুড় হবে। এটা কিন্তু একটা ইউজফুল আবিষ্কার। এখন আমাদের গবেষণার মূল মন্ত্র হতে হবে যে এমন একটা গবেষণা হবে সারা পৃথিবীতে একটা কমপিটিটিভ গবেষণা হতে হবে এবং এই গবেষণার ফলাফল কৃষক যদি ঠিক মতো ব্যবহার করে তাহলে সেখান থেকে একটা প্রফিটেবল ইনকাম হবে এবং সেই ইনকামটা যেটা করবে তার জন্য কিন্তু একটা বেশ ভালো একটা ইনকাম হবে। সেটাই করতে হবে। এ সমস্ত গবেষণার রেজাল্ট বাহিরে যেমন এভাইলেবল দেশেও আছে। কিন্তু দেশের গতিটা বাহিরে তুলনায় কিন্তু অনেক কম। এটাকে গতিশীল করতে হবে এবং এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে যেন সেখান থেকে ইমিডিয়েট বেনিফিট পাওয়া যায়।

আমাদের পৃথিবীতে তিন ধরনের ক্রপ আছে। সাধারণ ক্রপ যেটা ট্রেডিশনালি পাওয়া যায়, আরেকটা হলো হাইব্রিড, আরেক হলো ট্রানজিটিভ ক্রপ। ট্রানজিটিভ ক্রপ নিয়ে এই মুহূর্তে কথা বলতে চাচ্ছি না। কারণ এটা নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। সাধারণ ক্রপ আমরা জানি যে আমরা ট্রেডিশনালি যা পাই তা পাচ্ছি। একটা এভাইলেবল কিছু প্রেকটিস আপ করলে কিছুটা আমরা প্রোডাক্টিভিটি ইমপ্রোভ করবো এবং ক্রপ ভালো পাবো। কিন্তু হাইব্রিডের ক্ষেত্রে হলো যে হাইব্রিড কতোটা হাইব্রিডাইজ হয়েছে। তারপর হাইব্রিড হিসেবে তার পিউরিটিটা কতোটা ছিলো এবং কতো কেয়ারফুলি করা হয়েছে এবং যে পরিমান নেওয়া হয়েছিলো তার ক্যারেকটারিস্টিক কেমন ছিলো সেটার ওপর নির্ভর করছে হাইব্রিডটা কতোটা ফ্রুটফুল হবে বা সেখান থেকে কতোটা প্রোডাক্টিভিটি পাওয়া যাবে। আরেকটা সমস্যা যেটা হলো সেটা হলো আমাদের দেশে যেসব হাইব্রিডের গবেষণা শুরু হয় সেটাতে প্রায় সাত থেকে দশ বছর লেগে যায়।

আমরা মাঠ ফসলই বলি আর সবজির ক্ষেত্রেই বলি বা ফলেই বলি এখন যদি আমরা একটা রিসার্চ শুরু করলাম আর বাই দিজ টাইম বিদেশ থেকে কিন্তু আমরা যেটা চেষ্টা করলাম সেটা আমদানি হয়ে আছে। তাহলে হলোটা কী? আমরা যে সাত দশ বছর কষ্ট করলাম, যে রিসোর্সটা এপ্লাই করলাম সেটার কিন্তু ইমপ্যাক্ট ভালো কিছু একটা হলো না। দেশে ততো দিনে কিন্তু প্রাইভেট কোম্পানিগুলো বিদেশ থেকে এই টেকনোলজিটা আনবে এবং কৃষকের কাছে দিবে। কৃষক কিন্তু রেজাল্টটা পেয়ে গেল। আমাদের এই ব্রিলিয়ান্ট বিজ্ঞানীটা যে কাজটা করলো সাত আট দশ বছর ধরে এবং এতো বড় প্রতিষ্ঠানটা যে কাজটা করলো তার রেজাল্টটা কিন্তু দেশের মানুষ পেল না।

এখন উপায়টা কী? উপায়টা হলো, ইদানিং কালে মলিকুলার ইনটেনভেনশন করে করতো। এই সমস্ত রেজাল্ট দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে আনা সম্ভব। যেটা অন্যান্য সময় লাগতো আট থেকে দশ বছর। আর এই মলিকুলার ইনটেনভেনশনটা করতে হলে এটাতে ভালো ট্রেনিং থাকতে হবে, যন্ত্রপাতি ভালো থাকতে হবে এবং যে ক্যারেক্টারিসটিকসটা ইনসার্ট হবে সেই ক্যারেক্টারিসটিকসটা কিন্তু চাইলেই পাওয়া যাবে না। এটা বিদেশি কোনো কোম্পানি হয়তো সেপারেট করে রাখছে, আইডেনটিফাই করে রাখছে। তাদের কাছ থেকে এগুলো কিনে নিয়ে আসতে হবে। সরাসরি পেমেন্ট করেও আনা যেতে পারে অথবা লয়ালিটি দিয়েও আনা যেতে পারে। এই কাজটা অনেক ক্ষেত্রেই সরকারের পক্ষে কিন্তু কঠিন হয়ে যায়। কারণ ব্যুরোক্রেসি আছে আরও অনেক কিছু আছে। সে ক্ষেত্রে প্রাইভেট সেক্টরের ক্ষেত্রে তা খুব সহজ। কারণ প্রাইভেট সেক্টর দেখবে যে আমি যদি এই ক্যারেক্টারিসটিকসটা ইনসার্ট করতে পারি তাহলে আলটিমেটলি যে ফসলটা আসবে সেক্ষেত্রে কৃষক কিন্তু বেশি লাভ পাবে। তার ফসলটা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল ডিজিজ হওয়ার জন্য সে ডিজিজটা আর হবে না। ফসলটা তার পোকা খেয়ে ফেলছিল তা পোকাটা খাবে না। তখন দেখা যাবে যে কৃষক মনে করবে এটাই তো তার লাভ। যেমন আমাদের বাংলাদেশি ধানের জিন ট্রান্সফার করা হয়েছে। করার পরে হয়েছে কী? ধান খেত যদি ডুবে যায় পনের দিন বা বিশ দিন যদি পানির নিচে থাকে সেক্ষেত্রে ধানের গাছ গলে যাবে না। পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে আবার সবুজ হয়ে উঠে যাবে। এটা বাংলাদেশ ধান গবেষণাগার থেকেই করা হয়েছে।

আমরাও কাজ করছি এটার ওপরে। যেমন বিআর ২৮ বা ২৯ এ যে অবস্থাটা এটা অনেক ভালো ফলন দেয়। আমাদের দেশের কৃষকরা তা পছন্দও করে। কিন্তু সমস্যা হলো যে ডিজিজ আছে। মেঘব্লাস্ট হয় ব্যাকটর লিভ লাইভ হয় এই রকম আরও অনেক ডিজিজ হয়। আমরা যেটা করার চিন্তা করছি যেহেতু এটা ভালো ইল দেয়, কৃষক যেহেতু এর প্র্যাকটিস জানে আমরা এই ভেরাইটি থেকে জিন ট্রান্সফার করার চিন্তা করছি। তাতে হবে কী? ব্যাক্টর লিভ লাইভ বা মেঘব্লাস্ট হবে না। আমরা আশা করছি যে এটা খুব কুয়িকলি করা সম্ভব। এক থেকে দুই বছরেও হতে পারে। সরকারও নিশ্চয় চেষ্টা করছে। এটার পাশাপাশি আমরাও করছি।

এখন অনেকটা  নির্ভর করছে হাউ কোয়ালিটি উইল বি ট্রান্সফারেটের ওপর। টেকনিক্যাললি তা কতোটা সাউন্ড ছিল, যে জিনটা দেওয়া হলো তা কতোটা পিউর এবং কতোটা তা একুরেট তার ওপর নির্ভর করছে রেজাল্ট। আমরা আশা করছি, আমরা যেটা ভাবছি যেহেতু আমরা ইনভেস্টমেন্ট করছি আমরা যেহেতু ইরির পার্টনার ইরির যেহেতু এটা নলেজ, আমরা তাদের সাপোর্ট জিনটাকে আমরা আইডেনটিফাই করে নিয়ে আসবো। এটাকে আমরা ইনসার্ট করবো আমাদের ল্যাবরেটরিতে এবং এটাকে আমরা ফিল্ডে ট্রাই করবো এবং সেখান থেকে একটা ভালো রেজাল্ট পাওয়া যাবে।

বহু জায়গায় বলা হয়েছে যে কৃষিকে গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে। ভেরি স্পেসিফিকেললি কিছু বলা হয়নি। একটা জিনিস আমাদের মাথায় আনতে হবে যে কৃষি গবেষণা সরকার লেবেলে আর কৃষি গবেষণা প্রাইভেট লেবেলে কিন্তু দুইটা আলাদা ইলিমেন্ট। একটাতে ডাইনামিজম আছে আরেকটাতে ট্রেডিশনালিজম আছে। পৃথিবীর এইটি ফাইভ পারসেন্ট গবেষণা করে এখন প্রাইভেট সেক্টরে এবং এসমস্ত মেটেরিয়াল প্রাইভেট সেক্টরের হাতে। তাহলে কী করতে হবে? এসব মেটেরিয়াল যদি সরাসরি সরকারকে তারা দেবে না। কারণ সেখানে তাদের বিজনেস ইন্টারেস্ট আছে। সেখানে প্রাইভেট সেক্টরের জন্য তা খুব সহজ তারা এগুলো আনতে পারে। তাহলে কী করতে হবে? এগুলো তো শুধু আনলেই হবে না। লোকালি কেপাসিটি বিল্ড করতে হবে এবং এই কেপাসিটি বিল্ড করার জন্য প্রাইভেট সেক্টরকে সরকারের সাপোর্ট দিতে হবে।

ফান্ড দিতে হবে, ইন্টরেস্ট ফ্রি লোন দিতে হবে এবং সাবসিডি দিতে হবে। তাহলে হবে কী? দশটা বা বিশ এই রকম প্রাইভেট সেক্টর যদি দাঁড়িয়ে যায় প্রোগ্রাম নিয়ে তাহলে আলটিমেটলি দেখা যাবে এসব প্রাইভেট সেক্টর বিদেশ থেকে কিন্তু মোস্ট এডভান্স লাইনগুলো নিয়ে আসবে, মেটেরিয়াল নিয়ে আসবে এবং কুয়িকলি চেষ্টা করবে এগুলো মার্টে দিতে। আলটিমেটলি তাতে কৃষকের লাভ হবে। সরকার যেটা চেষ্টা করছে এদেশের কৃষকের লাভের কথা। প্রাইভেট সেক্টর যে কাজটা করবে তাতে আলটিমেটলি কিন্তু কৃষকের লাভ হবে। সেক্ষেত্রে আমি মনে করি যে প্রাইভেট সেক্টরকে ক্লিয়ারলি বলতে হবে যে তোমরা কাজ করো, তোমরা কমপেটিটিভ প্রজেক্ট দাও। যে প্রজেক্ট ভালো হবে। যার টার্ম অ্যান্ড কন্ডিশন ভালো হবে। যেখানে আমরা টাকা দিলে টাকাটা ফেরত পাবো। ঠিক একজেক্টলি ওই জায়গা থেকে একটা ফান্ড ক্রিয়েট করে কাজটা করা উচিত। ইন্ডিয়াতে এটা করা হয়েছে। পৃথিবীর বহু দেশে এটা করা হয়েছে। চীনেও করা হচ্ছে। চীন এতো শক্তিশালী দেশ এখনো কিন্তু চীনে পুরোপুরি ফোকাসটা প্রাইভেট সেক্টরকে দিয়ে করাচ্ছে এবং সেখান থেকে সাপোর্ট দিচ্ছে। এটা আমাদের দেশে সরকার কিন্তু যদিও বাজেটে ছোটখাটো কিছু একটা আউটলাইন হয়তো করা হয়েছে। এটাকে আরও ইলাবোরেট করে ক্লিয়ারলি কিন্তু অন্তত হাজার খানেক কোটি টাকা প্রাইভেট সেক্টরে দেওয়া উচিত যেখানে দশটা বা বিশটা প্রাইভেট সেক্টর দাঁড়িয়ে যাবে এবং তিন থেকে পাঁচ বছরের ভিতরে টপ ক্লাস মেটারিয়াল ইনভেন্ট করবে, তা মাকের্টে ইনট্রোডিউজ করবে সেখানে প্রোডাক্টিভিটি বাড়বে এবং তাদের ইনকামও বাড়বে।

আমাদের দেশে কিন্তু বিশেষ করে হাইব্রিড ধান ইন্ট্রোডিউজ হয়েছে। সেখানে আমরা দেখছি যে টুয়েন্টি পারসেন্ট ইল বেশি পাচ্ছে এবং টুয়েন্টি পারসেন্ট ইল কিন্তু কম না। যদি সাধারণ ধান হয় পাঁচ টন টুয়েন্টি পারসেন্টে আরও এক টন। ছয় টন। এক টন ধানের দাম আমরা সবাই জানি ত্রিশ হাজার টাকা। এখানে এই ত্রিশ হাজার টাকাই তো লাভ। ঠিক আছে বীজের দাম, বার কেজি বীজের দাম হয়তো তিন হাজার টাকা। তিন হাজার টাকা যদি ইনভেস্ট করেৃ। সে যদি ত্রিশ হাজার টাকা পায়, আমি মনে করি যে এটাই পিক আপ করা উচিত এবং এটাকেই সাপোর্ট করা উচিত।

আমরা শশা খাচ্ছি। এতো শশা আসছে কোথায় থেকে? এগুলো সব হাইব্রিড। আগের দিনে আমরা শশার গাছ লাগাতাম। পঞ্চাশ দিন পর ফুল আসতো। একটা গাছে দশটা বিশটা শশা হয়ে গাছটা মরে যেতো। আর এখন শশা গাছ লাগালে পচিশ দিনের মধ্যে ফুল আসা শুরু করে। ত্রিশ দিন থেকে হারভেস্ট শুরু করা যায়। চল্লিশ-পঞ্চাশ দিন পর্যন্ত শশা পাওয়া যায়। টমেটোর ক্ষেত্রেও দেখা যায় বিপ্লব হয়ে গেছে দেশে। এরকম প্রায় সব ক্ষেত্রে বাধাকপি ফুলকপি সব ক্ষেত্রেই কিন্তু হাইব্রিটাইলেশনটা ব্যাপক আকারে পপুলারিটি পেয়েছে এবং এই দেশের কৃষকের লাভ হয়েছে। এই দেশে সবজি পাওয়া যাচ্ছে, ফল পাওয়া যাচ্ছে, ধান পাওয়া যাচ্ছে। সবই পাওয়া যাচ্ছে এবং এটাই হচ্ছে দেশের সলুশন। কৃষক তো তা অবশ্যই পছন্দ করবে। কারণ তাতে ইল বাড়বে। যারা ভোক্তা তাদের লাভ হলো যে ইল বাড়লে কি হবে? কস্টটা কমবে এবং তারা কম দামে কিনে খেতে পারবে।

এখন ইদানিংকালে যেটা আমরা দেখছি, দুই-তিনটা কোম্পানি এ বিষয়ে ইনিশিটিভ নিয়েছে এবং তারা বেশ এগিয়ে গেছে। আমার ধারণা যে দুই-তিনটা কোম্পানি ভালো কিছু করবে। কিন্তু দেশে যেহেতু আমাদের কৃষিটা অনেক বড়, কৃষি পেশাটা অনেক বড় এখানে আমি মনে করি যে এই দুই-তিনটা কোম্পানিকে যেমন সাপোর্ট দেওয়া এবং সাথেসাথে নতুন আরও আট-দশটাকে কোম্পানিকে সাপোর্ট  দিয়ে সামনে আনা। আলটিমেটলি দেখা যাবে যে বেনিফিটটা সরকারও পাচ্ছে, দেশের মানুষও পাচ্ছে।

ড. এফ এইচ আনসারী
ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা
এসিআই এগ্রিবিজনেস।