বৈশ্বিক সক্ষমতা সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি

আজকের বাজার প্রতিবেদন
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে এ বছর সাত ধাপ উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের। এবার (২০১৭-১৮) ১৩৭টি দেশের মধ্যে ৯৯তম অবস্থানে পৌঁছেছে বাংলাদেশ।
গেলো বুধবার ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের পক্ষ থেকে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে পিছিয়েছে ভারত। দেশটির অবস্থান এ বছর ৪০তম। গত বছরের চেয়ে পিছিয়েছে এক ধাপ। অন্যদিকে এই সূচকে এগিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তান ১২২তম অবস্থান থেকে এ বছর ১১৫তম অবস্থানে পৌঁছেছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে মালয়েশিয়ার অবস্থান সবচেয়ে ভালো। দেশটির অবস্থান এবার ২৩তম।
এ ছাড়া চীনের অবস্থান ২৭তম, থাইল্যান্ডের ৩২তম ও ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান অনেকটা এগিয়ে ৩৬তম। মোট ১২টি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও অবকাঠামো, স্বাস্থ্য ও প্রাথমিক শিক্ষা খাতে উন্নতি হওয়ায় বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে এগিয়েছে বাংলাদেশ।
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে এ বছর প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্র। আর এক ধাপ পেছনে গিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে সিঙ্গাপুর। নেদারল্যান্ডস চতুর্থ স্থানে ও জার্মানি পঞ্চম অবস্থানে ঠাঁই পেয়েছে।
এদিকে বৈশ্বিক সক্ষমতা সূচকের অগ্রগতিতে অবকাঠামোর ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ,সিপিডি বলেছে অবকাঠামো ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়নের ফলেই বাংলাদেশ বৈশ্বিক সক্ষমতা সূচকে সাত ধাপ এগিয়েছে।
তবে আইসিটি বা প্রযুক্তি খাতে তেমন উন্নয়ন হয়নি। এ খাতে উন্নয়ন না হওয়ার পেছনে আইসিটি খাতে নেওয়া বড় প্রকল্প বাস্তবায়নকে দায়ী করছে সিপিডি।
ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের প্রতিবেদন প্রকাশের পর সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারী এই সংস্থাটি এসব তুলে ধরে। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
সিপিডির ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ প্রতিবেদনে ব্যবসায়ীরা সব সূচকে যে মতামত দিয়েছেন তাতে তারা তুলনামূলক বিচার বিশ্লেষণ করেই মতামত দিয়েছেন। তাদের মতামত অনুযায়ী বিদ্যুতের উৎপাদন, সরবরাহ যে বেড়েছে। অবকাঠামোগত যে উন্নয়ন হয়েছে তা কেউ অস্বীকার করবে না। আমরা নিম্ন মধ্যবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত দেশে উন্নীত হয়েছি।
আগামীতে এ সূচকে বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে যেতে হলে প্রযুক্তিগত ইকোনমি গড়ে তুলতে হবে। অন্যান্য সূচকে আমরা এগিয়ে গেলেও প্রযুক্তিগত দিকের সূচকে পিছিয়ে রয়েছি।

তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ব্যবসার সাথে প্রতিযোগিতা করতে হলে দেশে ব্যবসায়ে প্রযুক্তি নির্ভরতা বাড়াতে হবে। প্রতিবেদনে বিডা, বেজার কথা বলা হয়েছে।
এগুলোতে প্রত্যাশিত ফলাফল পেতে হলে যাতে ভালোভাবে কাজ করে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। অবকাঠামোগত উন্নয়নে সরকার-বেসরকারি খাতকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।
প্রতিবেদন তুলে ধরে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতার উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিত হওয়ায় বৈশ্বিক সক্ষমতা সূচকে বাংলাদেশ এগিয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও বন্দর পরিস্থিতির উন্নয়ন, দুর্নীতি কমা, ঘুষ গ্রহণের প্রবণতা কমায়, সরকারি সেবা সহজলভ্য হওয়ায়, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমায় ব্যবসা সহজ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দুনীর্তির সূচকে প্রাতিষ্ঠানিক জায়গায় বাংলাদেশ বেশ ভালো করেছে। বাংলাদেশ ১৩৭তম অবস্থান থেকে ১০৭তম এসেছে। এটি একটি ইতিবাচক দিক।
প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা আর সুশাসনের উন্নতির সূচকে বাংলাদেশ এগিয়েছে। আর অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে অর্থনীতির এ সূচকে বাংলাদেশ এগিয়েছে।