বোরো মৌসুমে ১৫ লাখ টন ধান-চাল কেনার সিদ্ধান্ত

চলতি বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ১৫ লাখ মেট্রিক টন ধান ও চাল কিনবে সরকার। সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি চালের ৩৪ টাকা ও ধানের ২৪ টাকা।

এবার মোট সংগ্রহের মধ্যে ৭ লাখ টন থাকছে ধান, যা কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি কেনা হবে।

সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে রবিবার (১৬ এপ্রিল) খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম সাংবাদিকের এ তথ্য জানিয়েছেন।

মন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী ২মে থেকে শুরু হয়ে এ ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।

এবার ৮ লাখ টন বোরো চাল কেনা হবে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘এরমধ্যে এক লাখ টন হবে আতপ চাল। প্রতি কেজি আতপ চালের ক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩ টাকা।’

গত বছর বোরোতে ১৩ লাখ টন ধান-চাল সংগ্রহ করে সরকার। এরমধ্যে ৭ লাখ টন ধান ও ৬ লাখ টন চাল সংগ্রহ করা হয়। সংগ্রহ মূল্য ছিল প্রতি কেজি চালের ৩২ টাকা ও ধানের ২৩ টাকা।

কৃষকদের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৭ লাখ টন ধানের মূল্য পরিশোধ করা হবে জানিয়ে কামরুল ইসলাম বলেছেন, ‘যাতে টাকা সরাসরি কৃষকদের হিসাবে জমা হয়। কোনো রকম মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য না থাকে।’

বোরো ধান ও চালের উৎপাদন খরচের বিষয়ে জানতে চাইলে কামরুল ইসলাম বলেছেন, ‘ধানের উৎপাদন খরচ ২২ টাকা ও চালের উৎপাদন খরচ পড়েছে ৩১ টাকা।’

সারাদেশে এবার বোরো চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা এক কোটি ৯১ লাখ ৫৩ হাজার টন নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা টার্গেট পূরণ করতে পারব। হাওড় অঞ্চলের বোরো ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে, ইনশাআল্লাহ।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘হাওড় এলাকায় প্রতি বছরই একটু ক্ষতি হয়, এবার ক্ষতিটা একটু বেশি হয়েছে, প্রায় সাড়ে চাল লাখ টন চালের আকারে ক্ষতি হবে হওড় এলাকায়। ভাল জায়গায় যেভাবে বাম্পার ফলন হয়েছে, তাতে এ সাড়ে ৪ লাখ টন ক্ষতি আমাদের পুষে যাবে। কোনো রকম অসুবিধা হবে না।’

বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার বিষয়ে সভায় কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণার হাওড়ের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আমরা ওএমএসের চাল ও আটা দিচ্ছি, যেটা বন্ধ ছিল; আমরা চালু করে দিয়েছি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরই। এ ছাড়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি তো চলমান আছে।’

২৮ টাকা দরে এক লাখ টন গম সংগ্রহ

এ ছাড়া এক লাখ টন গম সংগ্রহ করা হবে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রতি কেজি গমের মূল্য হবে ২৮ টাকা। আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত গম সংগ্রহ করা হবে।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘গমের উৎপাদন খরচ ২৮ টাকার মতোও পড়েছে।’

খাদ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।