ভারতের প্রধান বিচারপতিসহ ৮ বিচারকের ‘কারাদণ্ড’

মানসিক সুস্থতা পরীক্ষার জন্য আসা চিকিৎসকদের ফিরিয়ে দিয়ে ভারতের প্রধান বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্টের আট বিচারককে পাঁচ বছর করে ‘কারাদণ্ড’ দিয়েছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনান।

ভারতের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর ছাড়া অন্য ‘দণ্ডপ্রাপ্ত’ বিচারপতিরা হলেন: দীপক মিশ্র, জে চেলামেশ্বর, রঞ্জন গগৈ, মদন বি লোকুর, পিনাকী চন্দ্র ঘোষ, কুরিয়েন জোসেফ ও আর ভানুমতী। তাঁদের মধ্যে বিচারপতি ভানুমতী বাদে বাকি সাতজন বিচারপতি একই বেঞ্চের সদস্য।

অবশ্য বিচারপতি কারনানের বিচারিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা আগেই কেড়ে নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ফলে তার এসব নির্দেশের কোনো আইনি বৈধতা থাকছে না বলে মনে করছেন ভারতের আইন বিশেষজ্ঞরা। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন এই বেঞ্চ বিচারপতি সি এস কারনানকে বিচার এবং প্রশাসনিক কাজকর্ম থেকে বিরত রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন বিচারপতি সি এস কারনান। সুপ্রিম কোর্টের ওই নির্দেশকে তিনি পাত্তা দেননি। পরে সুপ্রিম কোর্ট তার মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু বিচারপতি কারনান নিজে ‘মানসিকভাবে সুস্থ’ আছেন বলে দাবি করেন এবং ‘একজন অভিভাবকের উপস্থিতি ছাড়া’ মেডিকেল টিমটি তাকে পরীক্ষা করতে পারবে না বলে যুক্তি দেখান।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের বিচারবিভাগে নজিরবিহীন এই জটিলতার শুরু চলতি বছরের প্রথমদিকে। ওই সময় মাদ্রাজ হাইকোর্টের ৬১ বছর বয়সী বিচারপতি কারনান ভারতের ২০ জন ‘দুর্নীতিগ্রস্ত বিচারকের’ নাম উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে চিঠি পাঠান। এ ঘটনার পর তাকে বদলি করে কলকাতা হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেয় দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।এতে তিনি অভিযোগ করেন, দলিত শ্রেণির মানুষ হওয়ায় তাকে হয়রানি করা হচ্ছে।

পরওয়ানা, আদালত অবমাননা এবং মানহানির অভিযোগে দেওয়া সর্বোচ্চ আদালতের সবগুলো আদেশ খারিজ করেছেন বিচারপতি কারনান। সর্বোচ্চ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে পাল্টা আদেশগুলো নিজের বাসায় বসেই জারি করেছেন তিনি। নিজের বাসাকে ‘হোম কোর্ট’ আখ্যায়িত করেছেন।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/৯ মে,২০১৭