ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ১২০

ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে ট্রেন দুর্ঘটনায় অন্তত ১২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই শর ওপরে। গত শনিবার দিবাগত ভোররাত তিনটার দিকে কানপুর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে পুখরাইয়া এলাকায় ইন্দোর-পাটনা এক্সপ্রেসের ১৪টি বগি লাইনচ্যুত হলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।

সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, দুর্ঘটনার সময় বেশির ভাগ যাত্রী ঘুমাচ্ছিলেন। উত্তর প্রদেশের পুলিশ কর্মকর্তা দলজিৎ সিং চৌধুরী গতকাল রোববার জানান, ভারী যন্ত্র দিয়ে দুমড়ে যাওয়া বগিগুলো কেটে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করা হচ্ছে। আরও যাত্রী আটকে আছেন কি না, তল্লাশি করে দেখা হচ্ছে। টেলিভিশন ফুটেজে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বগিগুলোকে একটির ওপর আরেকটি উঠে থাকতে দেখা যায়।

কানপুর পুলিশের মহাপরিদর্শক জাকি আহমেদ জানান, আহত যাত্রীদের স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের হাসপাতালে আনা-নেওয়ায় ৩০টি অ্যাম্বুলেন্স কাজ করছে।

কর্মকর্তারা বলেছেন, তাৎক্ষণিকভাবে দুর্ঘটনার কারণ জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, রেললাইনের ত্রুটির কারণে এটা হয়ে থাকতে পারে। নর্দান সেন্ট্রাল রেলওয়ের মুখপাত্র বিজয় কুমার জানান, জেলা প্রশাসন ও রেলওয়ে কর্মকর্তারা উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছেন।

ট্রেনটিতে রুবি গুপ্তা নামের এক তরুণী তাঁর বাবা ও ভাইবোনদের সঙ্গে তাঁর নিজ এলাকা আজমগড়ে যাচ্ছিলেন। ১ ডিসেম্বর রুবির বিয়ে ঠিক ছিল। তিনি বেঁচে গেলেও গতকাল বিকেল

.পর্যন্ত তাঁর বাবাকে তিনি খুঁজে পাচ্ছিলেন না। একটি বগিতে মায়ের লাশের পাশ থেকে দুটি আহত শিশুকে উদ্ধার করা হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক টুইটে শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুকে তিনি এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। রেলমন্ত্রীও এক টুইট বার্তায় বলেছেন, দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে শিগগিরই একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। নিহত ব্যক্তিদের পরিবার ও গুরুতর আহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তা ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য সরকার।

বিশাল রেল নেটওয়ার্কের দেশ ভারতে প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ট্রেনে ভ্রমণ করে। প্রায়ই দেশটিতে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। তবে কয়েক বছরের মধ্যে গতকালের দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটে।

২০১০ সালের ২৮ মে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুরে একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে শতাধিক লোক প্রাণ হারায়। পুলিশের দাবি অনুযায়ী, মাওবাদীরা রেললাইন উপড়ে ফেলার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। এরপর গতকালের দুর্ঘটনাকেই দেশটির সবচেয়ে বড় রেল দুর্ঘটনা বলে বলা হচ্ছে।

সুত্র: প্রথম আলো