ভোলায় ২ লাখ মানুষ আশ্রয়ণ কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে

ভোলা জেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবেলায় প্রায় ২ লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র নিরাপদে অবস্থান নিয়েছে। বিকেলের মধ্যে ঝুঁকিতে থাকা এলাকার সবাইকে সাইক্লোণ সেল্টারে নিয়ে আসা হবে বলে জেলা প্রশাসক মো: মাসুদ আলম সিদ্দিক আজ দুপুরে বাসস’কে নিশ্চিত করেছেন।

জেলা প্রশাসক জানান, জেলার চরাঞ্চলের প্রায় আড়াই লাখ মানুষ চরম দুর্যোগ ঝুঁকিতে রয়েছেন। এদের জন্য ৬৬৮ সাইক্লোণ সেল্টার খোলা রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও খুলে দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাত থেকে মানুষজন নিরাপদে আসতে শুরু করেছেন। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ৫ লাখ পর্যন্ত মানুষকে আশ্রয় দেয়া যাবে।

তিনি আরো বলেন, যেহেতু ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত চলছে। তাই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্যোগে যাতে কোন প্রাণহাণী না ঘটে সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছে বলে জানান তিনি।

জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা এবিএম আকরাম হোসেন বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় ভোলা সদর, বোরহানউদ্দিন, দৌলতখান, তজুমোদ্দিন, লালমোহন উপজেলায় ৭৫ হাজার করে টাকা ও ১০ মে:টন করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া চরফ্যাসন ও মনপুরা উপজেলায় ১ লাখ করে টাকা ও ২০ মে:টন চাল দেওয়া হয়েছে।

জেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী (সিপিপি) উপ-পরিচালক সাহাবুদ্দিন মিয়া বলেন, সিপিবি’র ৬৮০টি ইউনিটে ৩টি করে সংকেত পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। প্রত্যেকটি ইউনিট’র আওতায় ২ থেকে ৩ হাজার মানুষের বসবাস। উপকূলজুড়ে সাধারণ জনগণকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য হ্যান্ড সাইরেন ও মেগা ফোনের মাধ্যমে আহবান জানানো হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন মসজিদের মাইকেও প্রচার চালানো হচ্ছে নিরাপদে থাকার জন্য। গত রাত থেকেই মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে আজ দুপুরে সদরের ইলিশা ইউনিয়নের জংসন এলাকার মৌলভীর হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায় কাম সাইক্লোণ সেল্টারে দুপুরের খাবার বিতরণ করেছেন জেলা প্রশাসক।

এছাড়া খোলা হয়েছে মোট ৮টি কন্ট্রোল রুম। প্রত্যেকটি ইউনিয়নে ১টি ও ভ্রাম্যমাণ ২৪টিসহ মোট গঠন করা হয়েছে ৯২টি মেডিকেল টিম। এসব টিম মানুষদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি বুলবুল’র প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চারা রোপণ, সেচ, সার, কীটনাশক, বালাইনাশক প্রয়োগ থেকে বিরত থাকার জন্য আহবান জানানো হয়েছে।

এদিকে ঘূর্র্ণিঝড় বুলবুল’র প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ভোলায় শুক্রবার সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেই সাথে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। নদী ও সাগর ক্রমশই উত্তাল হয়ে উঠছে। অনেক জেলেদের নিরাপদে অবস্থান করতে দেখা গেছে।তথ্য:বাসস।

আজকের বাজার/লুৎফর রহমান