মানবসম্পদ উন্নয়নে ১০ কোটি ডলার ঋণ চুক্তি

দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ১০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এ লক্ষ্যে একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজু হিকো হিগুচি।

শফিকুল আযম বলেন, প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে দক্ষতার সাথে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখন দ্বিতীয় পর্যায়ে সে ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। ২০২১ সালের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা ২০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে। প্রকল্পটি সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।

হিগুচি বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক এগিয়েছে। এখন বাংলাদেশ উচ্চ আয়ের দেশ হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এজন্য অনেক বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। আর এডিবি এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায়। প্রকল্পটি শিল্পখাতে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠী সরবরাহ করবে বলে আমি আশা করি।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ২০১৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১০ বছর মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য ১ দশমিক শূন্যে ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম শীর্ষক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) মাল্টি ট্রান্স ফাইন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি (এমএফএফ) এর আওতায় এ কর্মসূচির জন্য ৩ কিস্তিতে সর্বমোট ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ প্রদান করবে।

এডিবি স্বাক্ষরিত এ ঋণচুক্তির আওতায স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম শীর্ষক কর্মসূচির জন্য দ্বিতীয় কিস্তি হিসাবে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহজ শর্তের ঋণ প্রদান করবে। সহজ শর্তের এ এডিএফ ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ২৫ বছর সুদের হার ২ শতাংশ। প্রথম কিস্তি ২০১৫-২০১৮ সালে, দ্বিতীয় কিস্তি ২০১৭-২০২১ সালে এবং অবশিষ্ট কিস্তি ২০২৩ সাল নাগাদ বাস্তবায়িত হবে।

স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম শীর্ষক কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য পুরুষ ও মহিলাদের উপযুক্ত কর্মমুখী প্রশিক্ষণ প্রদান এবং অগ্রাধিকার খাতসমূহে বর্ধিত কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করা।

অর্থ বিভাগ এ কর্মসূচির উদ্যোগী সংস্থা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। কিন্তু ১২টি শিল্প সংঘ এবং পিকেএসএফ সহযোগী সংস্থা হিসাবে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। অর্থ বিভাগ এ কর্মসূচির তহবিল ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করবে।

এ কর্মসূচির আওতায় বাজারে চাহিদা মোতাবেক ছয়টি অগ্রাধিকারখাতে যেমন, তৈরি পোশাক, নির্মাণ, তথ্য প্রযুক্তি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, চামড়া ও জুতা এবং জাহাজ নির্মাণ। সর্বমোট ১২ লাখ ৫০ হাজার নারী-পুরুষকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। তার মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ে ২লাখ ৪০ হাজার জন কর্মমুখী দক্ষতা অর্জনকারী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হবে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠির শতকরা ৭০ ভাগের জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।

সুত্র: দ্য রিপোর্ট