মুফতি হান্নানের পরিবারের ৪ সদস্য কাশিমপুর কারাগারে

গাজীপুরের কাশিমপুর হাই-সিকিউরিটি কারাগারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হরকাতুল জিহাদের শীর্ষনেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের সঙ্গে দেখা করতে তার পরিবারের চার সদস্য কারাগারে প্রবেশ করেছেন।

বুধবার (১২ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে তারা কারাগারে প্রবেশ করেন।

কাশিমপুর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কারাগারে প্রবেশ করেছেন- স্ত্রী জাকিয়া পারভিন রুমা, বড় ভাই আলি উজ্জামান মুন্সী, বড় মেয়ে নিশি খানম ও ছোট মেয়ে নাজরিন খানম।

কারাসূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে খবর পেয়ে গত রাতেই মুফতি হান্নানের বড় ভাই, স্ত্রী ও দুই মেয়ে কাশিমপুর কারাগারের উদ্দেশে কোটালীপাড়া থেকে রওনা দেন। ভোরে তারা গাজীপুরে এসে পৌঁছান। ভোর সাড়ে ৬টার দিকে তারা কারাগারে প্রবেশ করেন।

রাষ্ট্রপতির কাছে করা মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল বিপুলের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার পর দেখা করতে মঙ্গলবার তাদের স্বজনদের কাছে বার্তা পাঠানো হয়।

২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হজরত শাহজালালের (র.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। এতে পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত এবং আনোয়ার চৌধুরীসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।

এ মামলার রায়ে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত পাঁচ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড, মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি হান্নান ও শরীফ শাহেদুল বিপুলকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং দেলোয়ার হোসেন রিপনকে সিলেট কারাগারে রাখা হয়েছে।

নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করতে প্রয়োজনীয় নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ২০০৯ সালে আসামিরা আপিলও করেন। পরে গত বছরের ৬ জানুয়ারি এ মামলায় হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে ১১ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করে হাইকোর্ট।

গত বছরের ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ১৪ জুলাই আপিল করেন দুই আসামি হান্নান ও বিপুল। অপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রিপন আপিল না করলেও আপিল বিভাগ তার জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করেন।

আপিলের শুনানি শেষে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর আসামিদের আপিল খারিজ হয়ে যায়। পরে গত ১৭ জানুয়ারি এ রায় প্রকাশের পর আসামিরা রিভিউ করেন। রিভিউ আবেদন খারিজের পর ২৭ মার্চ মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী বিপুল কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। পরে রাষ্ট্রপতি তাদের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেন। সোমবার রাষ্ট্রপতির কাছে করা প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচের কপি এ কারাগারে পৌঁছায়।