যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে হামলার কথা ভাবছে উত্তর কোরিয়া

যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরের গুয়াম ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে উত্তর কোরিয়া। গুয়ামের ঘাঁটিটি যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত বোমারু বিমানঘাঁটি।

বিবিসির এক খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে হুমকি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় এই পাল্টা হুমকি এল। ৯ আগষ্ট বুধবার সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতির বরাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে গুয়ামে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বলেছে, গুয়াম লক্ষ্য করে মাঝারি থেকে দূরপাল্লার রকেট হামলা চালানোর একটি পরিকল্পনা বিবেচনা করছে পিয়ংইয়ং।

ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত নতুন অবরোধ আরোপ অনুমোদন দেয় জাতিসংঘ।

নতুন এই অবরোধের ফলে দেশটির কয়লা এবং লোহা রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এই ক্ষতির পরিমাণ ১০০ কোটি ডলার ছাড়াতে পারে।

খসড়া প্রস্তাব পাশ হবার পর জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি বলেন, এই ব্যবস্থাগুলো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধের জন্য পিয়ংইয়ংয়ের ওপর চাপ তৈরি করবে।

এর আগে বিভিন্ন অবরোধ আরোপ করেও উত্তর কোরিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখা যায়নি। নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তের আগে পিয়ংইয়ং একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, তারা তাদের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার বৃদ্ধি করা অব্যাহত রাখবে।

সেই ধারাবিকতায় গত জুলাই মাসে উত্তর কোরিয়া দুইটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় এবং দাবী করে তাদের সেইসব ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম।

চলতি মাসের শুরুর দিকে আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পরে উত্তর কোরিয়ায় সামরিক শক্তি প্রয়োগের হুমকি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি বলেন প্রয়োজন পড়লে উত্তর কোরিয়ায় সামরিক শক্তি ব্যবহার করা হবে।

তখন নিকি হ্যালি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরোধ ব্যবস্থার অন্যতম হলো প্রয়োজনমতো সেনাবাহিনী ব্যবহার। যদি আর কোনো উপায় না থাকে, তাহলে আমরা সেনাবাহিনী ব্যবহার করব।

তবে দ্বিতীয় দফায় আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে উত্তর কোরিয়া দাবী করে তাদের সেইসব ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম।

এর পর দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেন, উত্তর কোরিয়ার শাসন ব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন আনতে চায় না যুক্তরাষ্ট্র।

টিলারসন বলেন, আমার উত্তর কোরিয়ার শত্রু নই। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কিছু বিষয়ে আমরা আলোচনা করতে আগ্রহী।

তিনি বলেন, আমরা উত্ত কোরিয়ার শাসন ব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন আনার চিন্তা করছি না। আমরা সরকারের পতনও চাই না, কোরীয় উপদ্বীপের একত্রীকরণের বিষয়েও কিছু বলছি না। আমরা কোরিয়ার উপসাগরীয় এলাকায় অশান্তি আনতে চাই না। সেখানে সেনাবাহিনী পাঠানোর কোনো অজুহাতও আমরা খুঁজছি না।

আজকের বাজার: এলকে/এলকে ০৯ আগস্ট ২০১৬