যেকোনো অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পিপিপি গুরুত্বপূর্ণ : ডিসিসিআই

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সমীর সাত্তার বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, যেকোনো অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আসন্ন রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে এলসি নিষ্পত্তির জন্য পর্যাপ্ত  বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সহায়তা করার জন্যও সমীর সাত্তার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানান। আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে ডিসিসিআই পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
আলোচনায় সমীর সাত্তার একটি সময়োপযোগী মুদ্রানীতি (এমপিএস) প্রনয়ন করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে ধন্যবাদ জানান, যা বেসরকারি ও আর্থিক উভয় খাতকেই ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করবে। কারণ এমপিএস-এর মধ্যে কিছু সহায়ক নীতি ও নির্দেশনা রয়েছে। তিনি কৃষি, সিএমএসএমই এবং আমদানি বিকল্প শিল্পের জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন প্রকল্প অব্যাহত রাখার উদ্যোগকেও স্বাগত জানান।
তিনি আরও প্রয়োজনীয় সংস্কারের উপর জোর দেন, বিশেষ করে সিএমএসএমই গোষ্ঠির আরও ভালো সুবিধার্থে সিএমএসএমইগুলোর অর্থ প্রাপ্তির জন্য ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম সম্পর্কিত দালিলিক প্রয়োজনীয়তাগুলো সহজ করা।
এছাড়াও তিনি তরুণ এবং উদ্ভাবনী স্টার্টআপদের জন্য ডকুমেন্টেশন প্রক্রিয়া সহজ করার আহ্বান জানান যাতে তারা সহজে ঋণ পেতে পারে। তিনি ভূ-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক পুনরুত্থানে বেসরকারি খাতের অবদানকে ত্বরান্বিত করতে বেসরকারি খাতের ঋণ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দেন।
তিনি অভ্যাসগত খেলাপিদের উপর মনোযোগ দিয়ে দ্রুত ঋণ পুনরুদ্ধারের জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতে প্রবিধানে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) নিয়ন্ত্রণে সুশাসন নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন।
আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, আমরা এখন তিনটি বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি এবং সেগুলো হলো চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার বৃদ্ধি এবং চীনের সাম্প্রতিক কোভিড পরিস্থিতি।
তবে তিনি বলেন, এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমাদের অর্থনীতি বেশ স্থিতিশীল। তিনি আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এলসির বর্তমান পরিস্থিতি শিথিল হতে পারে।
তিনি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ ব্যাংক আসন্ন রমজান মাসে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে এলসি মার্জিন কমানোর মতো প্রাসঙ্গিক নীতিমূলক ব্যবস্থা এবং কর্মের মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
রেমিট্যান্স প্রবাহের গুরুত্ব বিবেচনা করে তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রক্রিয়ায় কিছু পরিবর্তন এসেছে যার মধ্যে রয়েছে স্থানীয় ব্যাঙ্কগুলোর প্রয়োজনীয় নথিপত্র এবং ফি শিথিলকরণ এবং রেমিট্যান্স দেশে ফিরিয়ে আনতে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) যুক্ত। ফলে ভবিষ্যতে রেমিট্যান্স প্রবাহ অনেক বাড়বে বলে তিনি আশা করেন।
বৈঠকে ডিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনা আলী এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।