যে গ্রামে পুরুষ প্রবেশই নিষিদ্ধ!

গ্রামের নাম উমোজা। এই গ্রাম নিয়ে মানুষের আলোচনার যেন শেষ নেই। আর আলোচনা হবেই না কেন?

কারণ গ্রামে পুরুষদের বসবাস করা তো দূরের কথা, প্রবেশই নিষিদ্ধ! প্রতিষ্ঠার সুদীর্ঘ ৩০ বছরেও এই গ্রামে কোনো পুরুষ প্রবেশ করেনি। কেন এমন অদ্ভুত নিয়ম চালু করা হল এই গ্রামে, আসুন জেনে নেওয়া যাক…

১৯৯০ সালে কেনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত এই গ্রামটি ধর্ষণের শিকার ১৫ নারীর উদ্যোগে গড়ে ওঠে। এই ১৫ নারী এই গ্রামে একসঙ্গে বসতি গড়ে তোলেন। পরে আশেপাশের এলাকা থেকেও নিপীড়িত নারীরা এই গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন।

মূলত, এই গ্রামে সামাজিক ও পারিবারিক নির্যাতনের শিকার নারীরা এখানে বসবাস করেন। ২০১৫ সালে এই গ্রামে বসবাসকারী নারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৭ জনে।

এই গ্রামের প্রতিটি নারীই স্বনির্ভর। তারা মেধাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের ভাগ‌্য পরিবর্তনে ভূমিকার রাখতে সক্ষম। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সঙ্গে যুক্ত এই গ্রামের সকল সদস্য। এই গ্রামের নারীদের তৈরি গয়না বর্তমানে সারা বিশ্বেই বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।


শুধুমাত্র, গয়না তৈরির মাঝেই সীমাবদ্ধ নন এই গ্রামের নারীরা। গ্রামের উন্নয়ন ও গ্রাম পরিচালনার জন‌্য আইন তৈরি করে তা প্রণয়ন করে থাকেন নারীরাই। গ্রাম পরিচালনায় দায়িত্বভারও তারা পালা করে পালন করেন তারা। যার ফলে গ্রামের আইনশৃঙ্খলাও নারীদের অনুকূলে থাকে।

ফি বছর নিয়ম করে এই গ্রাম পরিচালনার দায়িত্বভার পরিবর্তন করা হয়। প্রতি বছর দুইজন নারী প্রতিনিধি গ্রাম পরিচালনা দায়িত্ব পান। বর্তমানে এই গ্রামে শিশু-সহ মোট ৪০০ জনের বাস। ছোটদের পড়াশোনার দায়িত্ব থেকে সংসার চালানোর যাবতীয় ভার বয়ে চলেছেন গ্রামের নারীরাই।

প্রত্যয়ী আর স্বনির্ভর এই নারীদের একবার দেখার জন‌্য দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার পর্যটকরা ছুটে আসেন। পর্যটকদের থেকে পাওয়া প্রবেশমূল্য বাবদ পাওয়া সামান্য অর্থকেও গ্রাম উন্নয়নের কাজেই ঢেলে দেন এই নারীরা।

ব্যতিক্রমী উমোজা গ্রামের নারীরা পথ দেখাচ্ছেন বিশ্বের লাখ লাখ নিপীড়িত নারীদের।

সূত্র : দ‌্যা গার্ডিয়ান

আজকের বাজার/শারমিন আক্তার